Image description
 

ঢাকার বারিধারা, গুলশান, বসুন্ধরা, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামের বিপুল সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে নজরুল ইসলাম নিজেই তাঁর বাড়ি, ফ্ল্যাট, জমিসহ বিপুল সম্পদের তথ্য দেন। আজ সোমবার দুদক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

দুদক গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বংশাল থেকে নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। পরে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আজ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে (সিএমএম) ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হলে তাঁকে আদালতে নেওয়া হয়। কিন্তু আদালতে গিয়ে তিনি জবানবন্দি দিতে অস্বীকার করেন।

দুদক বলছে, বারিধারায় আট কাঠা জমির ওপর ‘পুতুল হাউস’ নামে একটি ট্রিপ্লেক্স বাড়ি রয়েছে নজরুল ইসলামের, যা বিদেশিদের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। গুলশান–১ নম্বর ভাসাবির পেছনে ৩ হাজার ২০০ বর্গফুটের একটি এবং বারিধারা ডিওএইচএসে ২ হাজার ৮৪১ বর্গফুটের আরেকটি ফ্ল্যাট রয়েছে। গুলশান–২ নম্বরে পাঁচ কাঠা জমির ওপর দোতলা একটি ভবন রয়েছে।

শুধু রাজধানী নয়, আশপাশের এলাকায়ও নজরুল ইসলামের মালিকানায় একাধিক সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে দুদক। তাদের ভাষ্য, নারায়ণগঞ্জের ভূলতা গাউছিয়ায় এম এ খালেক ও আজহার হোসেনের সঙ্গে যৌথভাবে ‘প্রাইম শপ’ নামে ১৮ কোটি টাকার একটি কোম্পানির সম্পদে তাঁর অংশীদারত্ব আছে। মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে কৃষিজমি রয়েছে। এভাবে ঢাকা ও এর আশপাশের জেলায় নজরুল ইসলামের দুই শ কোটি টাকার বেশি সম্পদ রয়েছে।

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, নজরুল ইসলাম ফারইস্ট ইসলামী লাইফ, ফারইস্ট ইসলামী সিকিউরিটিজ, ফারইস্ট ইসলামী প্রোপার্টিজ, সিভিসি ফাইন্যান্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্সসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছেন। এসব প্রতিষ্ঠানে তাঁর শেয়ারমূল্য ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকার সমপরিমাণ।

দুদক বলছে, নজরুল ইসলাম ও তাঁর পুরো পরিবার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। ২০১৫ সালে তিনি ৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে ওয়েলিংটনে একটি বাড়ি কেনেন। তার আগের বছর ফারইস্ট ইসলামী লাইফের নামে রাজধানীর তোপখানা রোডে ২০৭ কোটি টাকায় জমি ক্রয়ের সময় ২৮ কোটি টাকা ভাগাভাগি হয়, যার মধ্যে নজরুল ইসলাম পান ৬ কোটি টাকা। তিনি জমি বিক্রেতা আজহার হোসেন খানের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং তাঁর কাছ থেকে নিজের হিসাবে ১০ কোটি টাকা ও স্ত্রীর হিসাবে ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা স্থানান্তর করেন। এই অর্থ বিদেশে পাচার করে নজরুল ইসলাম মানি লন্ডারিং করেছেন বলে তদন্ত কর্মকর্তাদের ধারণা।

লাখ লাখ টাকা খরচ করে নজরুল ইসলাম ঢাকা ক্লাব, গুলশান ক্লাব, ঢাকা বোট ক্লাবসহ অন্তত ১৪টি অভিজাত ক্লাবের সদস্য।