বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন জামায়াত আমিরের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, আমেরিকায় বসে বাংলাদেশের মানুষের ক্ষমা চাওয়া; এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত (পলিটিক্যাল এপোলজি)। সেখানে বসে আবার তারা ভারতের সাথেও যোগাযোগ করেন। জামায়াতে ইসলামিকে তাসাউফ বিরোধী উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের বাংলাদেশে সালাফি ভিত্তিক সমাজ কায়েম করতে দেয়া হবে না। এ জন্য আগামী নির্বাচনে কওমি-সুন্নি ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর স্টেশন রোডের একটি অভিজাত অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার আওতাধীন সাবেক জমিয়াত নেতৃবৃন্দ ও পীর মাশায়েখদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। জমিয়াতুল মোদার্রেছীন চট্টগ্রাম অঞ্চল সমন্বয়ক কমিটি এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, আগামী নির্বাচনে আলেম-ওলামা, পীর মাশায়েখদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সবাইকে তারেক রহমানের পেছনে দাঁড়াতে হবে। সামনে ইঞ্জিন ঠিক থাকলে ট্রেন ঠিকমতে চলবে। রাজনীতিবিদরা দরবার, খানকা ও পীর মাশায়েখদের শক্তিটা দেখতে পান না। এক একটি দরবারের হাজার হাজার ভক্ত রয়েছেন। সেই আধ্যত্মিক শক্তি ভোটের মাঠে দেখা যাবে। তিনি বলেন, এদেশের নব্বই ভাগ মানুষ হানাফি মাজহাবে বিশ্বাসি। কিন্তু এই মাজহাব ধ্বংস করতে এই ১৪ মাসে যা করা হয়েছে তা বিগত ১৬ বছরেও হয়নি।
তারা ক্ষমতায় গেলে দরবার, খানকা থাকবে না। তারা সারা দেশে মসজিদ কমিটি, বাজার কমিটি, দরবার কমিটিও দখল করেছে। মসজিদের মিম্বর থেকে মওদুদি বাদের ভিত্তিতে আকিদাবিরোধী বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। তারা মুসলমাদের আকিদা বিনাশ করছে। মাজারে আগুন দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে তারা সালাফি ভিত্তিক সমাজ গঠনের বার্তা দিয়েছে। তারা এককেন্দ্রীক শিক্ষা ব্যবস্থা চেয়েছে। তারা মদরাসা শিক্ষা চায় না, আরবি বিশ্ববিদ্যালয় চায় না।
তারা এখন রোজা-পূজা এক করে দেখছে। যখন যেখানে সুবিধা তারা মাজারে গিয়ে জেয়ারত করছে, পুজায় গিয়ে মন্ত্র পাঠ করছে। আল্লাহর আইন আর সৎ লোকের শাসনের কথা বলে তাদের সেক্রেটারি জেনারেল এখন হিন্দুদের নিয়ে সমাবেশ করছেন। তিনি বলেন, এদেশে পীর মাশায়েখদের হাত ধরে ইসলাম এসেছে। আলেম ওলামাদের এই শক্তিকে কেউ মোকাবেলা করতে পারবে না।
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার সাবেক অধ্যক্ষ আল্লামা মুফতি সৈয়দ অছিয়র রহমান আলকাদেরীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব আল্লামা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমন্বয়ক অধ্যক্ষ ছৈয়দ মাওলানা আবু ছালেহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কেন্দ্রীয় যুগ্নমহাসচি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ এজহারুল হক ও অধ্যক্ষ মাওলানা মোবাশ্বেরুল হক। বক্তব্য রাখেন হযরত আমানত শাহ (রহ) দরবারের পীর শাহাজাদা হাবিব উল্ল্যাহ খান, পীরে কামেল সৈয়দ মোহাম্মদ মাসুম কামাল। সভায় বিভিন্ন দরবারের পীর, মাশখায়েখগণ শরিক হন।