
জামিয়া কোরআনিয়া অ্যারাবিয়া লালবাগ মাদ্রাসার শিক্ষক পদ থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ মাহদীকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
বুধবার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নিজেই এই তথ্য জানান মাহদী।
চাকরিচ্যুতির কারণ প্রসঙ্গে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
আশরাফ মাহদী বলছেন, ‘এনসিপি নাস্তিকদের সংগঠন’-এ কারণ দেখিয়ে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।”
ফেসবুকে একটি পোস্টে আশরাফ মাহদী লিখেছেন, “আজ দুপুরে (গতকাল বুধবার) লালবাগ মাদরাসার মজলিশে শুরা সদস্য মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ সাহেব আমাকে ফোনকলে জানালেন, গত সোমবার (২০ অক্টোবর) জরুরি মজলিসে শুরার বৈঠকে আমাকে মাদরাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
মাহদীর দাবি, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ ফোনকলে এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ ফোনে মাহদীকে বলেন, “তুমি এনসিপি করো। এনসিপি নাস্তিকদের সংগঠন। এটা করা জায়েজ নাই। মাদ্রাসার কোনো শিক্ষক এনসিপি করতে পারে না।”
তবে আশরাফ মাহদীর এমন দাবিকে অসত্য বলেছেন মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী। তিনি এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “এনসিপিকে আলেম-ওলামাদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে নিজের অসৎ উদ্দেশ্য পূরণের অপচেষ্টা চালাচ্ছে সে (আশরাফ মাহদী)। লালবাগ জামিয়া থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়ার সঙ্গে এনসিপির প্রসঙ্গ নেই। এ বিষয়ে রেজুলেশন (রেজল্যুশন) খাতা বিদ্যমান রয়েছে এবং আশা করা যায়, অচিরেই মজলিসে শুরা বিষয়টি জনসম্মুখে উপস্থাপন করবেন।”
মুফতি সাখাওয়াত আরও লেখেন, “মূলত ফ্যাসিস্টদের দোসর ফয়জুল্লাহ-আলতাফ গংদের সাথে আঁতাত করে বড়কাটারা ও লালবাগ মাদ্রাসায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও খুনাখুনির পরিস্থিতি তৈরির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকায় ছাত্র-জনতা তার বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠে। পরবর্তীতে তাকে অব্যাহতি দেয়ার মাধ্যমে মাদ্রাসার পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।”
“অবশ্য আগে থেকেই ছাত্রদের পড়াশোনায় খেয়ানত অর্থাৎ ক্লাসে অনুপস্থিতিসহ মাদ্রাসার নিয়ম-কানুন লঙ্ঘনের বেশ কয়েকটি অভিযোগ তার বিরুদ্ধে জমা আছে।” যোগ করেন মুফতি সাখাওয়াত।
তিনি আরো লিখেছেন, “গত কয়েক মাস ধরেই সে (আশরাফ মাহদী) ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এই প্রক্রিয়ায় সে কখনো এনসিপির নাম ব্যবহার করে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে, যা এনসিপির নেতৃবৃন্দ অবগত আছেন।”
উল্লেখ্য, মরহুম মুফতি ফজলুল হক আমিনী লালবাগ মাদ্রাসার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুরের জামাতা। হাফেজ্জী হুজুর মারা যাওয়া পর ১৯৮৭ সালে তিনি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও শায়খুল হাদিসের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি ওই মাদ্রাসার শায়খুল হাদিস ছিলেন।
শীর্ষনিউজ