Image description

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ‘২০২৬ সালের ডিভি লটারি: দুঃসংবাদ, তালিকায় নেই বাংলাদেশ’ শিরোনামের পোস্টগুলো বিভ্রান্তিকর বলে জানিয়েছে ফ্যাক্টচেকার প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্টওয়াচ। সংস্থাটির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী ডাইভারসিটি ভিসা (ডিভি) প্রোগ্রামে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরেই শেষ হয়েছে।

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফেসবুকে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া কিছু ফটোকার্ড ও পোস্টে দাবি করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ২০২৬ সালের ডিভি লটারির তালিকা থেকে বাংলাদেশকে বাদ দিয়েছে। এসব পোস্টে বলা হয়, ‘উন্নত জীবনযাত্রা ও ভালো কর্মসংস্থানের আশায় বিদেশে স্থায়ী হতে ইচ্ছুক তরুণদের জন্য বড় দুঃসংবাদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট।’ পোস্টগুলোতে ইঙ্গিত করা হয়েছে, এবারই প্রথম বাংলাদেশ বাদ পড়েছে।

তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই দাবির কোনো ভিত্তি নেই। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, পাঁচ বছরের মধ্যে কোনো দেশ থেকে ৫০ হাজারের বেশি অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে গেলে সেই দেশ ডিভি প্রোগ্রামের জন্য আর যোগ্য থাকে না। এ কারণে ২০০৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ৫০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন বলে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ডিভি প্রোগ্রাম ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে বন্ধ হয়ে যায়।

২০১৪ সালে প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, বাংলাদেশের নাগরিকরা ২০১২ সালের পর থেকে আর ডিভি লটারিতে অংশ নিতে পারছেন না। পরবর্তী বছরগুলোতেও যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস তাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে, যেখানে প্রতি বছর আবেদনযোগ্য দেশের তালিকা ও অযোগ্য দেশের তালিকা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব তালিকায় ২০১৩, ২০১৮ ও ২০২০ সালসহ পরবর্তী সব বছরেই বাংলাদেশের নাম অযোগ্য দেশের তালিকায় ছিল।

বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যমেও প্রায় প্রতি বছর ডিভি লটারি নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা যায়। যেমন ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৯ সালে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদনেও একইভাবে আলোচনা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নতুন প্রজ্ঞাপন প্রকাশ হলেই অনেকে ভুলভাবে ধরে নেন যে বাংলাদেশ আবার যোগ্য হয়েছে বা নতুন করে বাদ পড়েছে।

সবশেষে ফ্যাক্টওয়াচ জানিয়েছে, ‘বাস্তবে ২০১২ সালের পর থেকে বাংলাদেশের জন্য ডিভি লটারি কার্যক্রম আর চালু হয়নি। তাই ‘২০২৬ সালের ডিভি লটারি থেকে বাংলাদেশ বাদ পড়েছে’—এই তথ্যটি পুরনো ঘটনা পুনরায় নতুন করে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং সেটি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।