
এবার প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে নিজের দুই কন্যাশিশুকে আটকে রেখে বিভিন্ন ধরনের বিপজ্জনক ড্রাগস খাওয়ানোর অভিযোগ তুললেন আলোচিত অভিনেত্রী নীলা ইসরাফিল। সোমবার বিকেলে এমন অভিযোগ তুলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
নীলা ইসরাফিল তার পোস্টে বলেন, আমার কাছে যে তথ্যগুলো এসেছে, তা একজন মা হিসেবে আমার হৃদয়কে চূর্ণ করে দিচ্ছে। আমি সম্পূর্ণ অসহায় ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় আছি।
আমি জানি না আমার ছোট ছোট দুটি কন্যাসন্তান যাদের বয়স মাত্র ৬ বছর এবং ৪ বছর এখন কোথায় আছে, তারা বেঁচে আছে কি না, আর যদি বেঁচেও থাকে, তারা আর কত দিন টিকে থাকবে এই নিষ্ঠুর নির্যাতনের মধ্যে।
তিনি বলেন, নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে, আমার এই সন্তানদের জোরপূর্বক আটকে রেখে বিভিন্ন ধরনের বিপজ্জনক ড্রাগস খাওয়ানো হচ্ছে। এই নৃশংস কাজের সঙ্গে সরাসরি জড়িত হাসান আরিফের কুপুত্র মোয়াজ আরিফ এবং তার বর্তমান স্ত্রী প্রীতি আরিফ। এরা শুধু আমার সন্তানদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করছে না, বরং মানসিকভাবে ভয়াবহভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
আমি নিজে একজন মা হয়েও আমার নিজের সন্তানদের কাছে যেতে পারছি না, তাদের সুরক্ষিত রাখতে পারছি না—এটা কল্পনার অতীত এক যন্ত্রণা। আরো ভয়াবহ বিষয় হলো, মোয়াজ আরিফকে এই কাজ করতে সরাসরি উৎসাহ ও সাহস দিচ্ছে (ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি)। একটি রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে কেউ যদি শিশুদের জীবনের সঙ্গে এমন জঘন্য খেলা খেলতে পারে, তাহলে এটা শুধু আমার ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, এটি একটি রাষ্ট্রীয় ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মারাত্মক উদাহরণ। আমি ইতিমধ্যে এই ঘটনার কিছু প্রমাণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছি, যাতে জনগণ সত্যটা জানতে পারে।
শিগগিরই আমি লাইভে এসে বিস্তারিতভাবে সব তথ্য, নাম ও প্রমাণ উপস্থাপন করব, কারণ জনগণের জানার অধিকার আছে কে এই ভয়ংকর অপরাধের পেছনে জড়িত এবং কারা শিশুদের ব্যবহার করছে নিষ্ঠুরতার হাতিয়ার হিসেবে।
ফেসবুক পোস্টে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ইউনিট এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে ৪টি আবেদন জানান নীলা ইসরাফিল। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানদের অবিলম্বে রেসকিউ করা হোক। মোয়াজ আরিফ, প্রীতি আরিফ এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক তদন্ত শুরু করা হোক। এই ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক বা প্রাতিষ্ঠানিক যেসব প্রভাব আছে, তা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা হোক। প্রমাণ নষ্ট হওয়ার আগেই দ্রুত ফরেনসিক তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
তিনি বলেন, আমি একজন মা, আমি রাজনীতির চেয়ে বড় করে দেখি মানবতা আর সন্তানদের নিরাপত্তা। আজ আমি শুধু আমার দুই ছোট্ট মেয়ের জীবনের জন্য আবেদন করছি। তাদের বাঁচাতে, তাদের নির্যাতনকারীদের বিচারের আওতায় আনতে, দয়া করে দেরি করবেন না। এই মুহূর্তে আমার একটাই দাবি, আমার সন্তানদের বাঁচান। এই জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনুন। আমি বিশ্বাস করি, সত্য একদিন প্রকাশ পাবে। কিন্তু আমি চাই, সেই দিনটা যেন দেরি না হয় কারণ প্রতিটি মুহূর্ত আমার সন্তানদের জীবনের মূল্যবান সময়।
শীর্ষনিউজ