Image description
 

পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে রবিবার ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে এবং গাজায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের প্রতিবাদে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। ইসরায়েলি দমননীতি ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ তীব্রতর হওয়ার প্রেক্ষাপটে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

 

‘সলিডারিটি প্ল্যাটফর্ম উইথ প্যালেস্টাইন’ (PUSP) নামের সংগঠনটির উদ্যোগে আয়োজিত এই গণবিক্ষোভে অংশ নেয় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল পর্তুগাল, গ্রিনপিস পর্তুগাল, মেডসঁ সঁ ফ্রঁতিয়ের (Médecins Sans Frontières) এবং হোসে সারামাগো ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন মানবাধিকার ও শান্তি সংস্থা। তারা ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের ঔপনিবেশিক দখল ও নিপীড়নের অবসান দাবি করে।

ইহুদি শান্তিকামী সংগঠন ‘জিউজ ফর পিস’-এর সদস্য জনাথন বেবেবগুই বলেন, “আমরা ইহুদি, কিন্তু আমরা জায়নবাদের বিরোধী এবং ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়িয়েছি। ইসরায়েল যে সমালোচনাকে ইহুদি বিদ্বেষ হিসেবে দেখাতে চায়, তা এখন মানুষ বুঝে ফেলেছে।”

 

তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েলের এই দখল আসলে ঔপনিবেশিকতা। গাজায় যে গণহত্যা চলছে তা সত্ত্বেও বিশ্বজুড়ে মানুষের প্রতিক্রিয়া আশা জাগায়। আমরা বিশ্বাস করি, এই আন্দোলন চলবে যতদিন না ফিলিস্তিন মুক্ত হয়।”

 

বেবেবগুই আরও জানান, পর্তুগিজ জনগণের এই বিপুল অংশগ্রহণ তাদের নৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেছে। “এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বিশ্বের চোখ ফিলিস্তিনের দিক থেকে সরানো যাবে না,” বলেন তিনি। “যুদ্ধবিরতি যথেষ্ট নয়—আমরা দখলদারিত্ব, বসতি স্থাপন এবং ফিলিস্তিনি জনগণের উপর চলমান নিপীড়ন প্রত্যাখ্যান করছি। প্রকৃত শান্তি আসবে কেবল দখল শেষ হলে।”

‘মেডসঁ সঁ ফ্রঁতিয়ের’-এর সদস্য জোয়াও অ্যান্টুনেস মানবিক সহায়তায় ইসরায়েলি বাধার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “যুদ্ধবিরতি ভঙ্গুর, পরিস্থিতি এখনও অস্থির। আমাদের চারটি সহায়তা ট্রাক প্রস্তুত ছিল, কিন্তু ইসরায়েল কেবল দুটি প্রবেশ করতে দিয়েছে। মানবিক সহায়তার প্রবাহে কোনো বাধা থাকা উচিত নয়—মানবিক সংকট এখনও শেষ হয়নি।”

তিনি আরও যোগ করেন, “যুদ্ধবিরতির ঘোষণায় আনন্দ ছিল, কিন্তু মানুষ এখনো আতঙ্কিত ও অবিশ্বাসে ভুগছে। প্রকৃত পরিবর্তনের জন্য আন্তর্জাতিক সমাজের নিরবচ্ছিন্ন চাপ প্রয়োজন।”

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া স্থপতি মারিয়া দোস সান্তোস বলেন, “আমি আসলে আসার পরিকল্পনা করিনি, কিন্তু ফিলিস্তিনে যা হচ্ছে তা মানবতার জন্য লজ্জাজনক।”

বেবেবগুই আরও বলেন, “ইসরায়েলে প্রচারযন্ত্র অত্যন্ত শক্তিশালীভাবে জনগণকে প্রভাবিত করছে। পরিবর্তন ইসরায়েলের ভেতর থেকে আসবে না—এটি আসতে হবে বিশ্বের পক্ষ থেকে, নাগরিক প্রতিরোধ ও বয়কটের মাধ্যমে।”