Image description

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা হত্যার ঘটনায় দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে আটক করেছে বংশাল থানা পুলিশ। আগের প্রেমিকের সঙ্গে ৯ বছরের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় তাকে খুন করা হয়েছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান। ঘটনার পর প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর হলেও এখনও থানায় মামলা নেয়নি বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত মেয়েটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসাইনকে পছন্দ করতেন বলে জানিয়েছেন। এ ঘটনা জেনে যায় তার প্রেমিক। তার সঙ্গে মেয়েটির ৯ বছরের প্রেম ছিল। জুবায়েদকে পছন্দ করায় তার সম্পর্ক ছিন্ন করলে তিনি ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায়ে জুবায়েদকে হত্যা করেন। 

রবিবার (১৯ অক্টোবর) আনুমানিক বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে ছাত্রীর বাসার তিন তলায় তিনি খুন হন। নিচ তলা থেকে তিন তলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্ত পাওয়া গেছে। তিন তলার সিঁড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় তার লাশ। স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। হত্যার প্রায় ৫ ঘণ্টা পর লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় মিটফোর্ট হাসপাতালের মর্গে। 

অভিযুক্ত তরুণের নাম মো. মাহির রহমান। তিনি রাজধানীর বোরহানউদ্দিন কলেজে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি নুরবক্স এলাকাতেই বসবাস করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জুবায়েদ হোসাইন ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী। একইসঙ্গে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। এক বছর ধরে তিনি পুরান ঢাকার আরমানীটোলায় নুরবক্স লেনের রৌশান ভিলায় এক ছাত্রীকে ফিজিক্স, কেমেস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন। 

রবিবার (১৯ অক্টোবর) আনুমানিক বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে ছাত্রীর বাসার তিন তলায় তিনি খুন হন। নিচ তলা থেকে তিন তলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্ত পাওয়া গেছে। তিন তলার সিঁড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় তার লাশ। স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। হত্যার প্রায় ৫ ঘণ্টা পর লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় মিটফোর্ট হাসপাতালের মর্গে।

ঘটনার পরপরই আরমানিটোলার বাসাটি ঘিরে রাখেন জবি শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এরপর লালবাগ বিভাগের ডিসি, এসি ও বংশাল থানার ওসি ভবনের ৫ম তলায় থাকা ছাত্রীর বাসায় পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে ছাত্রীকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। এদিন রাতে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে বংশাল থানার সামনের সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। 

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা হত্যা মামলা করতে প্রায় ১৫ ঘণ্টা ধরে বংশাল থানায় অপেক্ষা করছেন বলে জানা গেছে। ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। ভুক্তভোগীর বড় ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এনায়েত হোসাইন সৈকত দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমরা আগে ৬ জনের নামে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তারা হলেন, ছাত্রী, তার বাবা-মা-মামা, প্রেমিক মো. মাহির রহমান ও এক বন্ধু।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঘটনাস্থলের পাশের ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দুই যুবককে দৌঁড়ে পালাতে দেখা গেছে। একজনের গায়ে কালো ও অন্যজনের গোলাপী রঙের টি-শার্ট ছিল। তবে ভিডিওতে তাদের মুখ স্পষ্টভাবে দেখা যায়নি। এর মধ্যে একজন ছাত্রীর প্রেমিক বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। আশপাশের সব সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করছে পুলিশ।