Image description

পাবনার বেশিরভাগ ফার্মেসিতে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে অনুমোদনহীন, মেয়াদোত্তীর্ণ ভারতীয় ওষুধ, প্রসাধনী ও শিশুখাদ্য। আইন অমান্য করে দীর্ঘদিন ধরে এসব পণ্য বিক্রি করছে অসাধু ওষুধের দোকানদাররা। এসব ওষুধ সেবন ও প্রসাধন ব্যবহার করে সাধারণ রোগী, বিশেষ করে শিশুদের পড়তে হচ্ছে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের মাঝে-মধ্যে অভিযান পরিচালনা করলেও বন্ধ হচ্ছে না এ ধরনের কার্যক্রম। ফার্মেসি মালিকদের দাবি, এসব অনুমোদনহীন ওষুধ—বিশেষ করে ভিটামিন, যৌন উত্তেজক ওষুধ, শিশুদের সিরাপ ও বিভিন্ন প্রসাধনী—ডাক্তাররাই প্রেসক্রিপশনে লিখছেন। তাই তারা বাধ্য হয়েই বিক্রি করেন।

সম্প্রতি পাবনা ড্রাগ অফিসের অভিযানে বেশ কয়েকটি ফার্মেসি থেকে হাতেনাতে অনুমোদনহীন ভারতীয় ওষুধ জব্দ করা হয়েছে। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন- পাবনা ড্রাগ সুপার। এ সময় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে তিনি বিপাকে পড়েন। এরপরই ফার্মেসি মালিক সমিতি আন্দোলনে নামে। তারা একত্রিত হয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ফার্মেসি বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করে। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন ড্রাগ সুপারসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

ফার্মেসি মালিকদের বক্তব্য, ডাক্তাররা যে ওষুধ প্রেসক্রাইব করেন আমরা বাধ্য হয়েই তা দোকানে রাখি। আমরা জানি না কোনটা অনুমোদনহীন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিছু অসাধু ওষুধ ও লাগেজ ব্যবসায়ী ভারত থেকে চোরাই পথে এসব ওষুধ দেশে নিয়ে আসে। পরে তারা নিজস্ব প্রতিনিধি নিয়োগ করে চিকিৎসকদের ভিজিট করে প্রলোভন দেখিয়ে প্রেসক্রিপশনে এসব ওষুধ লিখিয়ে নেন। ফার্মেসিগুলো বেশি বিক্রির আশায় এসব ওষুধ দোকানে রাখে এবং নিজেরাই দাম নির্ধারণ করে বাজারজাত করে। এতে লাভের একটি বড় অংশ ডাক্তারদের পকেটে যায় বলেও জানা গেছে।

বিভিন্ন ফার্মেসি ঘুরে দেখা গেছেÑভারতীয় অনুমোদনহীন পেডিগ্রোথ ড্রপ, ইনজেকশন পুলক ডি-৩, ট্যাবলেট অভাস ফাটিন, জি একনি জেল, ব্রোনওয়াস, ফেস ওয়াস, সিয়োডিল সেবিল ক্রিম, ডিয়োলিন ভ্যাক্স কিল, ফানডি-৩, ফোর্ট ক্যাপ, আর-হিট, ক্যাপ আরর্টিল, সিডি-৩ ড্রপ, এ্যাক্সোলাইন সিনান, সানভেল লোশন, ইটমাস সপ, নিউরোটিভ, ক্লিনডার্স জেলসহ প্রভৃতি ওষুধ দেদারসে বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) আইন অমান্য করে এসব অনুমোদনহীন ওষুধ প্রেসক্রাইব করছেন বেশিরভাগ চিকিৎসক।

পাবনা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. নাজমুল হাসান বলেন, আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। চিকিৎসকরা কীভাবে এসব অনুমোদনহীন ওষুধ লিখছেন তা জানা নেই। তবে তাদের আরো সচেতন হয়ে ওষুধ প্রেসক্রাইব করা উচিত।

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, প্রশাসন ও ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের আরো কঠোর নজরদারি না থাকলে এভাবে অনুমোদনহীন ওষুধের অবাধ বিক্রি বন্ধ করা সম্ভব নয়।