
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতেন। বাস্তবে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছে ছাড়া কিছুই হতো না। বিভিন্ন সময়ে পছন্দমতো প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে গিয়ে সিনিয়রদের বাদ দিয়ে জুনিয়রকে নিয়োগ দেয়া হতো। জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌছেছে যে, আপিল বিভাগের সবচেয়ে সিনিয়র বিচারপতিকেই প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হবে। যদিও বিএনপি নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে বলেছে, তারা ক্ষমতায় গেলে সিনিয়র দুজনের মধ্য থেকে যে কাউকে নিয়োগের জন্য সংবিধানে সংশোধনী আনবে। জুলাই সনদে সেভাবেই উল্লেখ রয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতারা বহুল আলোচিত জুলাই সনদ স্বাক্ষর করেন। যা ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে জনগণের ত্যাগ ও রক্তদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রণীত নতুন রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল হিসেবে গণ্য হচ্ছে।
এদিকে, শেষ মুহূর্তে জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামার পঞ্চম ধারায় সংশোধন করা হয়েছে। পঞ্চম ধারায় আগে বলা ছিল, “গণঅভ্যুত্থানপূর্ব ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানকালে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারগুলোকে যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করব।”
সংশোধিত দফায় বলা হচ্ছে “গণ-অভ্যুত্থানপূর্ব বাংলাদেশে ১৬ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানকালে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারকে এবং জুলাই আহতদের রাষ্ট্রীয় বীর, আহত জুলাই বীর যোদ্ধাদের যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান যেমন মাসিক ভাতা, সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ব্যবস্থা এবং শহীদ পরিবার ও আহত বীর যোদ্ধাদের আইনগত দায়মুক্তি, মৌলিক অধিকার সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো।”