
১৩ বছর আগে যার ফেসবুক থেকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে কক্সবাজারে বৌদ্ধবিহার ও পল্লিতে হামলা হয়েছিল, সেই উত্তম বড়ুয়ার খোঁজ মিলেছে। তিনি ফ্রান্সে আছেন। তার স্ত্রী ও ছেলে সে দেশে পৌঁছেছেন। এরপর বিমানবন্দরে তাদের সঙ্গে নিজের ছবি ফেসবুকে দিয়ে উপস্থিতি জানান দেন উত্তম।
উত্তম রামু সদরের ফতেখাঁরকুলের হাইটুপী গ্রামের বাসিন্দা সুদত্ত বড়ুয়ার ছেলে। ২০১২ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর রাতে তার ফেসবুক থেকে ধর্ম অবমাননাকর ছবি পোস্ট করার অভিযোগ তুলে বৌদ্ধবিহার ও পল্লিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সহিংসতার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন উত্তম।
স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে ফেসবুকে ছবি দিয়ে উত্তম লেখেন, ‘দীর্ঘ তের বছর তের দিন পর আমাদের দেখা।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন চেষ্টা-তদবিরের পর উত্তমের স্ত্রী রিতা বড়ুয়া ও ছেলে আদিত্য বড়ুয়া গোপনে ফ্রান্সে রওনা দেন। ফ্রান্সের সময় গত রোববার রাতে (বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালে) তারা বিমানবন্দরে পৌঁছান।
উত্তম বড়ুয়া স্ত্রী-সন্তানকে কাছে পেয়ে ফেসবুকে ছবি আপলোড করেন। গতকাল সোমবার (১৩ই অক্টোবর) রাত থেকে তার এ ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে উত্তম বড়ুয়ার মা মাধু রানী বড়ুয়া এখনো ছেলের খোঁজ পাওয়ার বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ঘটনার দিন রাত থেকে তাদের সঙ্গে উত্তমের যোগাযোগ নেই। তার ছেলে কোথায় আছেন এখনো তিনি জানেন না।
যোগাযোগ করা হলে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আরিফ হোছাইন বলেন, ফ্রান্সের একটি বিমানবন্দরে পরিবারের সঙ্গে উত্তম বড়ুয়ার তোলা একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর পুলিশের নজরে এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে।
২০১২ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর রাতে রামু উপজেলার ১২টি বৌদ্ধবিহার ও ৩০টি বসতঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরদিন উখিয়া, টেকনাফ ও সদরে আরও সাতটি বিহারে হামলা চালানো হয়। এতে বিহারের কয়েক শ বছরের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও পুরাকীর্তি ধ্বংস হয়।