Image description

বাড়ি ভাড়াসহ তিন দাবি আদায়ে চূড়ান্ত আন্দোলনের পথে হাঁটছে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। ইতোমধ্যেই সচিবালয় অভিমুখে লং মার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারা। বিকাল ৪টার মধ্যে দাবি না মানলে মন্ত্রণালয়মুখী হওয়ার হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। 

এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আজ (১৪ অক্টোবর) সকালে একটি সংস্থার মহাপরিচালক শিক্ষক নেতাদেরকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি. আর. আবরার সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করেন শিক্ষক নেতারা। বিষয়টি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী। 

তিনি বলেন, এখন আর আলোচনার সুযোগ নেই। তারা আলোচনা করে আমাদের সিদ্ধান্ত জানাক। প্রজ্ঞাপন হতে কিছুটা বিলম্ব হলে সেটাও জানাক। প্রজ্ঞাপন আগামীকাল হলেও সমস্যা নেই, আমরা অপেক্ষা করব। কিন্তু আমাদেরকে অন্ধকারে রাখা চলবে না, পরিষ্কার ঘোষণা দিতে হবে। এ সময় আজ বিকাল ৪টা পর্যন্ত লং মার্চ কর্মসূচি স্থগিতের কথা জানান। এর আগে অবশ্য গতকাল তিনি বলেছিলেন, রাতের মধ্যে যদি প্রজ্ঞাপন বা কোনো ঘোষণা না দেয়া হয়‌, তাহলে লং মার্চ ও কর্মবিরতি চলবে। 

এদিকে শিক্ষক-কর্মচারীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার দাবি মেনে নেওয়ার আভাস মিলেছে মন্ত্রণালয় থেকে। বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ফের সভায় বসার কথা রয়েছে শিক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের। 

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ করছি। হিসাবও করা হচ্ছে। আশা করছি, দ্রুত শিক্ষকদের সুখবর দেওয়া সম্ভব হবে।’
 
ওই সূত্রটি আরও জানায়, অর্থ উপদেষ্টা এবং সচিব দেশে নেই। এ অবস্থায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘শিক্ষা উপদেষ্টা নিয়মিত অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। ফলে তারা দেশে না থাকলেও সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হবে না।’

শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়ি কত শতাংশ হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী, বাড়ি ভাড়া মূল বেতনের ২০ শতাংশ করা হতে পারে। এছাড়া বাকি দাবিগুলোর প্রতিও আমরা ইতিবাচক।’

২০ শতাংশ মানে ২০ শতাংশ, ১৯-ও না
এদিকে মঙ্গলবার বক্তৃতাকালে অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী। তিনি বলেছেন, ‘দেখি কার কত বড় ক্ষমতা, ছয় লক্ষাধিক শিক্ষক পরিবারের সঙ্গে বিদ্রোহ করে। স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ২০ মানে ২০, ১৫০০ মানে ১৫০০, ৭৫ মানে ৭৫। ১৯-ও হবে না, ১৪৯৯-ও হবে না, ৭৪-ও হবে না। যদি উল্টাপাল্টা সিদ্ধান্ত নেন, এই আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘আন্দোলন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা ও ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়া যাবে না। দুই মন্ত্রণালয় আজ মিটিংয়ে বসছে। অথচ বলেছিলেন, অর্থ উপদেষ্টা ও সচিব দেশে না ফিরলে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।’

এখন অর্থ উপদেষ্টা ও সচিব না থাকলেও সমস্যা নেই জানিয়েছেন তারা, এমন মন্তব্য করে দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘ঠেলার নাম বাবাজী। গতকাল থেকে সারা দেশের প্রত্যেকটি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কঠোরভাবে কর্মবিরতি পালন করেছি। সব প্রতিষ্ঠান অচল ও স্থবির হয়ে পড়েছে। আমাদের কোনও শিক্ষক-কর্মচারী শ্রেণি-পাঠ্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে না।’