Image description

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে অসহযোগিতার অভিযোগে বহিষ্কৃত শাখা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মামুন উর রশিদ এবার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরকে এক হাত নিয়েছেন। ডাকসু ও জাকসুতে ভরাডুবির পরও নাছির কিভাবে পদে বহাল থাকে, এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজ অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে নাছিরের সমালোচনা করেন মামুন। এর আগে গত রবিবার রাতে এক নোটিশে তাকে সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এক্ষেত্রে কোনো শোকজ নোটিশও তাকে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

ব্যাঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে লেখা ফেসবুক পোস্টে মামুন উর রশিদ লিখেছেন, ‘সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন-২০২৫ এ সুন্দর প্যানেল দিয়ে ছাত্রদলের বিজয় নির্বাচনের আগে নিশ্চিত করায় ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবকের কাছে আবেদন করছি জনাব নাছির উদ্দীন নাছিরকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি হিসেবে শূন্য পদে মনোনীত করার জন্য।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘ডাকসু ও জাকসু হারার পরেও কেমনে এই পদে থাকে সে? আমি যদি ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক হতাম, নিজে পদত্যাগ করতাম এবং নাছির উদ্দীন নাছিরকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২ বিঘা জমি লিজ নিয়ে জোবরার জমিদার থেকে ৪টা গরু কিনে চাষ করতে দিতাম।’

এর আগে, গত রবিবার মামুনকে বহিষ্কার করে দেয়া ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দায়িত্বে অবহেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মোহাম্মদ মামুন উর রশিদ মামুনকে সাংগঠনিক পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হলো।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তার সাথে কোনরূপ সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জন্য নির্দেশনাও প্রদান করা হলো।

এদিকে ছাত্রদলের একটি সূত্র বলছে, আওয়ামী আমলে জেল-জুলুম, রিমান্ডে প্রচন্ড নির্যাতনের মাঝেও দলের জন্য লড়াই করেছে মামুন। জানা গেছে, আসন্ন চাকসু নির্বাচনে দলীয় প্যানেলে মামুনের অনুসারী বেশকিছু ত্যাগী নেতা পদ না পাওয়ায় স্বতন্ত্র কিছু পদে সমর্থন দিয়েছে মামুন। নিজের দায়বদ্ধতা থেকে কিছু কর্মীর পাশে দাঁড়িয়েছে মামুন। তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই তাঁকে বহিষ্কার করা হলো বলে দাবি সূত্রটির।

এর আগে ২০২৩ সালের (১১ আগস্ট) ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান এবং সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে চবি শাখার ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন হয়। এতে মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মহসিন সভাপতি ও আব্দুল্লাহ আল নোমানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এছাড়া সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে মামুনুর রশিদ মামুন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে মো. সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়ের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

২ বছরের জন্য কমিটির অনুমোদন দেয় ছাত্রদল। এরই মধ্যে ২ মাস আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও পূর্নাঙ্গ হয়নি কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ছাত্রদল কর্মী অপরাধ করলেও ৫ জনের বেশি কমিটি না থাকায় এর দায় নিতে চায় না দলের কোনো নেতা।