Image description

নওগাঁর আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুশফিকুর রহমান রাজিবের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও এক্স জুড়ে রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বন্দনা। তার ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নানা কর্মসূচির ছবি ও ভিডিও নিয়মিত শেয়ার করা হয়। এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তা হয়েও পার্শ্ববর্তী দেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এ আনুগত্য এলাকাবাসী ভালো চোখে দেখছেন না।

গত শনিবার ডা. রাজিব আত্রাই উপজেলায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। রোববার তার নামে থাকা ভেরিফায়েড ফেসবুক ও এক্সে যোগ দেওয়ার এ খবর শেয়ার করা হয়। এই পোস্ট ছাড়া ওই অ্যাকাউন্টগুলোর প্রায় সব পোস্টই মোদির বন্দনা সংক্রান্ত। এরপর থেকেই সমালোচনা ছড়িয়ে পড়ে।

সমালোচনার পর ফেসবুক থেকে যোগদান সংক্রান্ত পোস্ট সরিয়ে নেওয়া হলেও ডা. রাজিবের এক্সের পোস্ট রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ছিল। মোদিকে ট্যাগ করা ওই পোস্টে রয়েছে ৪টি ছবি। একটি তার অফিস রুমে বসে থাকার এবং বাকিগুলো ফুল গ্রহণ ও টিকা কর্মসূচি উদ্বোধনের। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘গতকাল আমি নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদে যোগদান করেছি। আজ আমি একটি সফল টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেছি।’

ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল ও এক্স অ্যাকাউন্টটি খোলা হয় ২০১৯ সালে। দুটি অ্যাকাউন্টই ভেরিফায়েড। এর মধ্যে এক্স অ্যাকাউন্ট ভেরিফায়েড করা হয়েছে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এ অ্যাকাউন্টের বায়োতে লেখা রয়েছে, ‘ডাক্তার, রাজনীতিবিদ ও লেখক। পেশা— সরকারি। আগ্রহ রয়েছে সংগীত, অর্থনীতি, কৃষি, সশস্ত্র বাহিনী ও নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে।’ এরপর লেখা, ‘আমাদের নতুন ভারত।’

এ ব্যাপারে ডা. রাজিবের কাছে জানতে চাইলে তিনি আমার দেশকে বলেন, যে ফেসবুক আইডি থেকে আমাকে জড়িয়ে পোস্ট করা হচ্ছে সেটি আমার আইডি নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো ফেসবুক আইডি ব্যবহার করি না। আমি হাসপাতালের আইডিতে এর একটি প্রতিবাদও দিয়েছি।

নিজের না হলে আইডিগুলো ভেরিফায়েড কীভাবে হলো এবং এ বিষয়ে পুলিশকে জানানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওই চিকিৎসক বলেন, একদিন হলো বিষয়টি জানতে পারলাম। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে পুলিশকে জানানো হবে।

তার ভারতপ্রীতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি জন্মসূত্রে বাংলাদেশি। আমার দাদার বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলায় হলেও পৈত্রিক সূত্রে আমরা ঢাকার খিলগাঁও তালতলায় বসবাস করি। ছোটবেলা থেকেই মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এবং ঢাকা কলেজে লেখাপড়া করেছি। ভারতে কবার গিয়েছেন জানতে চাইলে জবাবে তিনি বলেন, চিকিৎসার জন্য একাধিকবার ভারতে গিয়েছি।

এদিকে তার বিরুদ্ধে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে আত্রাইয়ে। অনেকে দুর্ঘটনা এড়াতে তাকে দ্রুত এই এলাকা থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম আমার দেশকে বলেন, এই আইডিটি যদি তার হয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। ওনাকে দ্রুত এখান থেকে প্রত্যাহার করা হোক। অন্যথায় যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

জামায়াতে ইসলামীর উপজেলা আমির আসাদুল্লাহ আল গালিব আমার দেশকে বলেন, যদি বিষয়টি সত্য হয় তাহলে তার যথোপযুক্ত শাস্তি আমরা চাইছি। এমন লোককে দ্রুত আত্রাই থেকে সরিয়ে নেওয়া হোক।