Image description

শীত মৌসুম আসার আগেই তীব্র গ্যাস সংকটে বাসাবাড়িতে জ্বলছে না চুলা। রাজধানীর অনেক এলাকায় গ্যাসের সংকট এখন যেন স্থায়ী সমস্যা। একই চিত্র শিল্প-কারখানাগুলোতেও। বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে ঝুঁকছেন ব্যবসায়ীরা। সংকট মোকাবিলার ব্যাপারে কোনো সদুত্তর নেই তিতাসের কাছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলপিজির বাজার সম্প্রসারণে বাসাবাড়িকে পরিকল্পিতভাবে নায্য গ্যাস প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করছে সরকার।

মোহাম্মদপুরের একজন বাসিন্দা আশরাফুন নিহার। গ্যাস না থাকায় প্রতিদিন সকালে নাস্তা তৈরি করা-ই তার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। সন্তানের টিফিন পর্যন্ত দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। কেবল সকাল নয়, দিনের অধিকাংশ সময়-ই থাকে না গ্যাস।

রাজধানীর উত্তরখান, দক্ষিণখান, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ভাটারা, রামপুরা, বনশ্রী, তেজগাঁও, শাহজাহানপুর এবং পুরান ঢাকার অধিকাংশ এলাকায় চলছে গ্যাসের চরম সংকট। ফলে একদিকে যেমন গ্রাহকদের খরচ বাড়ছে, তেমনি ব্যাহত হচ্ছে তাদের স্বাভাবিক জনজীবন।

শিল্পখাতে গ্যাসের সংকট বহু পুরোনো। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, আশুলিয়া, ভালুকা, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জসহ সব প্রধান শিল্পাঞ্চলেই কমে গেছে গ্যাসের সরবরাহ।

এতে পোশাকশিল্প, সিরামিক, সিমেন্ট খাতের মতো গ্যাসনির্ভরশীল খাতগুলোয় কমেছে উৎপাদন। পরিস্থিতি সামাল দিতে অনেক ব্যবসায়ী এখন বাধ্য হয়ে ঝুঁকছেন বিকল্প জ্বালানির দিকে।

তিতাস বলছে, বিদ্যুৎ ও শিল্পখাতে গ্যাসের সংকট সমাধানকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার। মন্ত্রণালয়ের নীতিগত সিদ্ধান্তে কমানো হচ্ছে বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহের হার।

এদিকে স্বল্প জনবল নিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাও কার্যকরভাবে সম্ভব হচ্ছে না বলে জানায় বিতরণ প্রতিষ্ঠানটি।

বাসাবাড়িতে গ্যাস না দিয়ে মাস শেষে টাকা নেয়া মানবাধিকারের চরম লুণ্ঠন বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা অভিযোগ করেন, এলপিজির বাজার সম্প্রসারণই তাদের মূল লক্ষ্য।

সরকারকে ব্যবসা করার নীতি থেকে সরে এসে জ্বালানীকে সেবা খাত হিসেবে ব্যবহার করারও পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

সার কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ কমিশনের প্রস্তাবিত ১৫০ শতাংশ দাম বৃদ্ধিকে ‘ভুল নীতি’ বলেও আখ্যা এক বিশেষজ্ঞ।

সরকার নীতিগত জায়গা যদি পরিবর্তন না করে নিজেই ব্যবসায়ী হয়ে উঠতে চায়, সেক্ষেত্রে সংকট সমাধান সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি।