বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীর মতো সিয়ামও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। তিনি শহিদ আবু সাঈদের সঙ্গে জুলাইয়ের শুরু থেকেই সব কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন।
গত ১৬ জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের শাহাদতবরণের সময়ও সিয়াম তার পাশে ছিলেন। এ সময় আরও কয়েকজন সহযোদ্ধা শিক্ষার্থীর সেঙ্গে সিয়াম গুলিবিদ্ধ আবু সাঈদকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন। তার মাথার ভেতরে ছয়টিসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৬০টি ছররা গুলি বিদ্ধ হয়। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বাসস।
চরম অর্থ-সংকটের কারণে দেশে বা বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিতে না পারায় সিয়াম এখন সার্বক্ষণিক অসহনীয় মাথাব্যথাসহ নানা রকম শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। তার পড়ালেখাসহ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। এতে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগে তাওহীদুল হক সিয়াম (২৩) ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (বিবিএ) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিন বছর ধরে টিউশনি করে নিজের পড়ালেখা ও থাকা-খাওয়ার খরচ চালিয়ে আসছিলেন। অভাব-অনটন থাকলেও কোনো অভিযোগ ছিল না সিয়ামের।
নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার চরকাঁকড়া গ্রামে সিয়ামের জন্ম। তার প্রবাসী বাবা মো. শহিদুল হক (৫০) কয়েক বছর ধরে দুবাইয়ে শ্রমিকের কাজ করছেন। চার ছেলেসন্তানের মা দিল আরা বেগম (৪২) একজন গৃহিণী। সিয়াম সবার বড়। তার মেজ ভাই মো. সাবরি (২১) নোয়াখালীর স্থানীয় একটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ালেখা করেন। আরেক ভাই মো. সাইমুন (১৭) আলিম প্রথম বর্ষ এবং কনিষ্ঠ ভাই আব্দুর রহমান সালেম (১২) ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। কেবল প্রবাসী বাবার সামান্য আয়ে সিয়ামদের পরিবার কোনো রকম।
২০২৪ সালের জুলাইয়ের সেই উত্তাল দিনগুলোতে তার, শহিদ আবু সাঈদ এবং অন্যান্য সহপাঠীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর বর্ণনা করেন।
সিয়াম বলেন, জুলাইয়ের প্রথম থেকে শিক্ষার্থীরা কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় হন। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রও বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন শুরু করেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছাত্র ছিলেন আবু সাঈদ, সোহান, শামসুর রহমান সুমন, নাহিদ হাসান শাকিল, রহমত আলী, সাবিনা ইয়াসমিনসহ অনেকে।
বর্তমানে নিষিদ্ধ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি ও বাধা দিয়েছিলেন।
সিয়াম বলেন, ‘যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা দেশব্যাপী “বাংলা ব্লকেড” কর্মসূচি ঘোষণা করে, তখন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচির সমর্থনে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেয়।’
ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচির সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়া তার সহযোগীদের সঙ্গে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে শিক্ষার্থীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
গত ১১ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেয়। একটি প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করা কালে তারা বাধাপ্রাপ্ত হলে আন্দোলনটি এক ভিন্ন দিকে মোড় নেয়।
সিয়াম বলেন, ‘মিছিলটি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন গেট নং ১ বা বর্তমানের শহিদ আবু সাঈদ গেটে পৌঁছায়, তখন তৎকালীন প্রক্টর এবং প্রক্টোরাল বডির সদস্য শিক্ষকরা প্রথমে শিক্ষার্থীদের বাধা দেন। কিন্তু শিক্ষকদের বাধা উপেক্ষা করেই শিক্ষার্থীরা মিছিল করতে থাকলে একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর সন্ত্রাসী আক্রমণ করে এবং আবু সাঈদের গায়ে হাত তোলে।’
আন্দোলনের এক পর্যায়ে ১৪ জুলাই রাত ১টার দিকে, যখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রদের রাজাকার বলে সম্বোধন করেন, তখন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং শেখ হাসিনার কথার তীব্র প্রতিবাদ করেন। ক্যাম্পাসের হল ও আশপাশের মেসের শিক্ষার্থীরা তাদের রাজাকার বলার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন।
সেদিন আবু সাঈদ, সুমন, সোহাগ ও আহসান হাবিবসহ অন্যরা তাৎক্ষণিক ক্যাম্পাসে ও আশপাশের এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল বের করেন। তখন ছাত্রলীগের সশস্ত্র নেতা-কর্মীরা শিক্ষার্থীদের দিকে উসকানিমূলক স্লোগান দিতে দিতে ইট ও পাথর ছুড়ে অনেক ছাত্রকে আহত করে।
পরদিন ১৫ জুলাই যখন সাধারণ ছাত্ররা একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছিলেন, তখন সাধারণ ছাত্রদের প্রতিরোধ করার জন্য ছাত্রলীগ পাল্টা কর্মসূচি পালন করে।
তারা মেসে আক্রমণ করেছে জানিয়ে সিয়াম বলেন, ‘আন্দোলন বন্ধ করার জন্য, পুলিশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ, মহানগর ছাত্রলীগ এবং অস্ত্রধারী বহিরাগতরাসহ অনেক সন্ত্রাসী সাধারণ ছাত্র এবং ছাত্রদের মেসে আক্রমণ করে।’
১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রংপুর মহানগরীর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং স্কুল ও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেদিন বিশাল প্রতিবাদ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় নগরীর লালবাগ এলাকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে বিক্ষোভ মিছিল এগিয়ে এলে শত শত সশস্ত্র পুলিশ রাজপথে শিক্ষার্থীদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি শুরু হয়।
পুলিশ শিক্ষার্থীদের দিকে কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। একপর্যায়ে পাঁচজন পুলিশ স্টিল ও কাঠের লাঠি দিয়ে আবু সাঈদের মাথায় আঘাত করতে শুরু করে।
এ পরিস্থিতিতে সিয়াম আবু সাঈদকে পুলিশের হাত থেকে রক্ষা করতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। পুলিশ আবু সাঈদকে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তার মাথা থেকে রক্ত ঝরতে থাকে।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ যখন আবু সাঈদকে লাঠি দিয়ে আঘাত করছিল, তখন অন্য একজন পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট থেকে তাকে ও আমাকে রিভলবার দিয়ে গুলি করার চেষ্টা করে। কিন্তু আমি যখন তাদের দিকে ক্যামেরা তাক করি, তখন অন্য একজন পুলিশ সেই পুলিশ সদস্যকে আমাদের দিকে গুলি করতে বাধা দেয়। একপর্যায়ে আহত আবু সাঈদ আমার ক্যামেরার সামনে বলেন, ‘আমি আবু সাঈদ, ইংরেজি বিভাগের ছাত্র’। এ সময় পুলিশকে চিৎকার করে তিনি বলেন, ‘শ্যুট মি...শ্যুট মি...।’
এ সময়ে পুলিশ গেটের ভেতর থেকে গুলি, কাঁদানে গ্যাস এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট দখলে নেয়।
তিনি বলেন, ‘সব ছাত্র সরে যায়, আবু সাঈদ ও আমি নড়ি না।’
পুলিশের হামলার এক পর্যায়ে, আবু সাঈদ বুক প্রসারিত করে তাদের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন ১ নম্বর গেট থেকে একজন পুলিশ প্রথমে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। প্রথম গুলিটি যখন আবু সাঈদের পেটে লাগে, তখন তিনি হতবাক হয়ে যান এবং হয়তো কিছু বুঝতে না পেরে আবার বুক প্রসারিত করে সেখানে দাঁড়িয়ে যান।
সিয়াম বলেন, ‘আমি যখন আবু সাঈদকে গুলি থেকে রক্ষা করতে যাচ্ছিলাম, তখন পুলিশ তাকে আবার পরপর দুই রাউন্ড গুলি করে, যার ফলে সে ঢলে মাটিতে পড়ে যায়। তারপর আমি তার কাছে পৌঁছাই এবং আমাকে দেখার পর আরও কিছু ছাত্র তাকে মাটি থেকে তোলার জন্য ধরে এবং তখন তিনি আবার পড়ে যান। তখন সবাই মিলে আবারও তাকে তুলে ধরি।’
চার থেকে পাঁচজন মিলে আমরা আবু সাঈদকে নিয়ে যাচ্ছিলাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তখন পুলিশ আমাদের লক্ষ্য করে আবার গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে আমার শরীরের বাঁ দিকটি ঝাঁঝরা ও ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। প্রায় ৬০টি ছররা গুলি আমার মাথা, মুখ, হাত, বাহু, পেট, কোমর এবং পায়ের বাঁ দিকে বিদ্ধ হয়।’
সিয়াম আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ১৩তম ব্যাচের আন্দোলনরত ছাত্র আহমেদুল হক আলভী, আরেকজন সহযোদ্ধা ছাত্রের সাথে আমাকে রিকশায় করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে পৌঁছানোর পর আমি অনেক আহত সহযোদ্ধা ছাত্রদের দেখতে পাই। তাদের অনেকের আঘাতই ছিল গুরুতর।’
এত আহত ছাত্র দেখে, সিয়াম নিজের চিকিৎসা না করেই ফেসবুক লাইভে এসে হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা পরিস্থিতি প্রচার করতে থাকেন। এ সময় তিনি নিজেও রক্তাক্ত অবস্থায় ছিলেন। তবুও তিনি আহত ছাত্রদের সাহায্য করার জন্য ডাক্তার ও নার্সদের ডাকেন।
অনেক পুলিশ তখন হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে ভেতরে প্রবেশ করা আহত ছাত্রদের সন্ত্রাসী ট্যাগ দিয়ে গ্রেপ্তার করার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
সিয়াম বলেন, ‘এ ছাড়াও, আমি আবু সাঈদের কথা ভাবতে থাকি, কারণ তার অবস্থা খুবই গুরুতর ছিল। ফেসবুকে লাইভ করার সময় আমি আবু সাঈদের খোঁজ নিতে যাই। আমি দেখতে পাই যে তাকে দ্বিতীয় তলায় রাখা হয়েছে। সেখানে আমি বিকেল ৩:৪৫ মিনিটে গিয়ে আবু সাঈদকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই।’
তিনি বলেন, ‘একইসাথে আন্দোলনরত অবস্থায় আমার সামনে একজন আইকনিক ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ হতে দেখে এবং অল্প সময়ের ব্যবধানে তার মৃতদেহ দেখে আমি নিজেকে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ি।এদিকে, আমার শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে শুকিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর ডাক্তার আমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।’
প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর সিয়াম হাসপাতালে আর নিরাপদ বোধ করেননি। তিনি ভয় পান এই ভেবে যে পুলিশ যে কোনো মুহূর্তে তাকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এই ভয়ে আমি ডাক্তারদের না জানিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাই। তারপর আমি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আমার মেসে যাই। শরীরে থাকা অসংখ্য ছররা গুলির ব্যথা সহ্য করতে না পেরে কদিন পরে রংপুরের বেসরকারি আল মদিনা হাসপাতালে যাই। সেখানে আমার শরীরে প্রথম অস্ত্রোপচার করা হয়।’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিয়ামের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে তার চিকিৎসা করে।
আবার কয়েকদিন পরে সিয়াম চরম গোপনীয়তা বজায় রেখে রংপুরের বেসরকারি মেডিল্যান্ড হাসপাতালে তার দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার করেন।
তিনি বলেন, ‘অল্প সময়ের মধ্যে দুটি অস্ত্রোপচার করার পরেও আমার মাথার সংবেদনশীল স্থানগুলোতে এখনও পাঁচটি ছররা রয়েছে। ফলে, আমি মাথায় সার্বক্ষণিক তীব্র ব্যথা অনুভব করি। আমার মুখ, হাত, কোমর এবং পায়ের বিভিন্ন জায়গায় অনেক গুলির স্পিøন্টার রয়েছে।’
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত হওয়ার পর সিয়াম তার মেসে থাকা-খাওয়াসহ শিক্ষার অর্থায়নের অন্যতম উৎস টিউশনি হারিয়ে ফেলেন।
সিয়াম বলেন, ‘আন্দোলনের তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আমি ফেসবুকে লাইভ প্রোগ্রাম করতাম। শুরু থেকেই এ কাজ করতে গিয়ে আমি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি। আমার ফোনের ক্যামেরা ভেঙে গেছে। এদিকে চিকিৎসার জন্য ধার করেছি। এখন আমি ঋণগ্রস্ত। দারিদ্র্যের সাথে মাথায় ছররার কারণে তীব্র যন্ত্রণা আমাকে আরও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন আমি আর মানসিক চাপ নিতে পারছি না। অসুস্থতা এবং মাথাব্যথা আমার নিত্যদিনের সঙ্গী। আমার একাডেমিক পড়াশোনার জন্য একটি ল্যাপটপ কিনতে হতো। এজন্য আমি বছরের পর বছর ধরে টাকা সঞ্চয় করে আসছিলাম। কিন্তু, চিকিৎসা খরচ মেটাতে আমি সেই টাকাও খরচ করেছি। ভবিষ্যতে আমার জন্য কী অপেক্ষা করছে, তা জানি না।’
সিয়ামের গত ৫ আগস্ট শেষ অস্ত্রোপচার করেছিলেন রংপুরের মেডিল্যান্ড হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জন ডাঃ মোঃ আমিনুর রহমান। এ সময় এই চিকিৎসক তাকে বলেছিলেন যে তার মাথার যে জায়গাগুলিতে ছররা রয়েছে, সেগুলি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
সিয়াম বলেন, ‘ডাক্তার আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন যে যদি শারীরিক সমস্যা না হয়, তবে ছররাগুলি আমার শরীরে বহন করতে হবে। যদি অন্য কোনও উন্নত চিকিৎসার নেয়ার সুযোগ থাকে, তবে তিনি আমাকে অবিলম্বে তা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।’
মাথায় ছররা গুলির কারণে সিয়াম পড়াশোনা করতে পারছেন না। পারছেন না কোনকিছুতে মনোযোগও দিতে। তিনি মাথার অসহনীয় যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চান উন্নত চিকিৎসা। অথচ সিয়াম চরম আর্থিক সংকটে ভুগছেন।
জুলাই বিপ্লবের অন্যতম এক নায়ক সিয়াম। তার জন্যে কে করবে এই ব্যবস্থা?