Image description

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগস্টের প্রথম দিকে সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করছিলেন এবং সামরিক বাহিনী পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য  কারফিউ নিশ্চিত করার কথা হয়, যাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়। এক প্রতিবেদনে দ্য হিন্দু এই তথ্য জানিয়েছে। পত্রিকাটির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগ আমলের শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন,'আমরা সে সময়ে গণভবনে উপস্থিত ছিলাম এবং ক্রমাগত পরিকল্পনা করছিলাম কীভাবে ছাত্র  বিক্ষোভের সমাধান করা যায়। তবে আমাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেছিলেন যে, প্রধানমন্ত্রীর আকস্মিক পদত্যাগে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়বে। সেই কারণেই কারফিউয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। 

২০২৪ সালের ছাত্র বিক্ষোভকারী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা পরিচালনা করেছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ঢাকার পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়, যখন শেখ হাসিনা চীনে রওনা হন এবং তার সরকারের বিরুদ্ধে একটি পূর্ণাঙ্গ ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলন তীব্র বিক্ষোভের রূপ ধারণ  করে। 

ছাত্ররা যখন ‘এক দফা দাবি- শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ দাবি করে তখন চৌধুরীকে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-সমন্বয়কারীদের সাথে আলোচনা করতে বলেছিলেন। পরে অবশ্য ছাত্রবিক্ষোভ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠলে চৌধুরী আত্মগোপনে চলে যান। 

তিনি সাক্ষাৎকারে বলেন, আগামী দিনে ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আগত ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মনোভাবের উপর।

তিনি মনে করিয়ে দেন যে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে অন্যান্য সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের, বিশেষ করে পশ্চিম এশিয়ার ঘটনাবলী থেকে  বিচ্ছিন্নভাবে দেখা উচিত নয়। তবে‌ তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সিরিয়া ও ইরাকের মতো ইসলামিক চরমপন্থীদের জন্য বাংলাদেশ যেন নতুন আবাসে পরিণত না হয়, যেগুলো গত এক দশকে  ঘাঁটি হিসেবে কাজ করেছিল। হিজবুত তাহরীর এবং জামায়াত-ই-ইসলামী বাংলাদেশ-এর মতো ‘চরমপন্থী’ গোষ্ঠীগুলোর সম্প্রসারিত ঘাঁটি সম্পর্কে তিনি সতর্ক করেন। 

তিনি গত কয়েক মাস ধরে হিজবুত তাহরীরের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন যে, এই সংগঠনটি ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশে একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছিল। তাই এই জাতীয় দলগুলিকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখা উচিত নয়। এরা শুধু এই অঞ্চল নয়, আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকেও প্রভাবিত করতে সক্ষম।