
ফরিদপুরে বেশ কয়েক দিন যাবত নিত্যপণ্যের বাজারদর ঊর্ধ্বমুখী। মাঝে দাম কিছুটা কমলেও কয়েক দিনের ব্যবধানেই তা আবার বেড়ে গেছে।
এদিকে বাজারে সব ধরনের শাক-সবজি পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকলেও দামের লাগাম টানতে পারছে না কেউ। এতে অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছে মধ্যবিত্তসহ সাধারণ মানুষ। ঘন বৃষ্টির কারণে উৎপাদনে ক্ষতির মুখে পড়ায় শাক-সবজির দাম বেড়েছে বলে জানান কৃষকেরা।
বিক্রেতারা জানান, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাজারে শীতের সবজি চলে এলে দাম কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে।
ফরিদপুর শহরের চকবাজার কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেগুন ৯০ থেকে ১০০ টাকা, মুলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, পটল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, লাউ ছোট-বড় ৬০ থেকে ১০০ টাকা, পাতা কপি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে পেঁপের দাম রয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা এবং আলু ২০ টাকা। এছাড়া দেশি পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, দেশি রসুন ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ইলিশ মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় বেড়েছে দেশীয় অন্যান্য মাছের দাম। দুই কেজি সাইজের রুই ও কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। মাঝারি সাইজের চিংড়ি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশীয় প্রজাতির কোনো মাছই ৩০০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।
মাংসের বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩০০ টাকা, গরুর মাংস ৭০০ টাকা, খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা কেজি দরে।
এদিকে মুদি দোকানের পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। মিনিকেট চাল ৮৫ টাকা, মোটা আঠাশ চাল ৬৫ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া মসুরের ডাল ১০০ টাকা, আটা ৫০ টাকা, চিনি ১০৫ টাকা এবং ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল ৯২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
শহরের টেপাখোলা থেকে বাজার করতে আসা আনিস মোল্যা বলেন, বাজারে এসে টাকার সঙ্গে পেরে উঠি না। সব শাক-সবজির দাম চড়া। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি মিলছে না। যে টাকা নিয়ে এসেছি শাক-সবজি কাঁচাবাজার করেই শেষ। এরপর তেল ডাল কেনার পয়সায় টান পড়েছে। বাধ্য হয়ে কম পরিমাণে নিয়ে বাসায় ফিরতে হবে।
কলেজছাত্র আবিদ বলেন, মেসে থেকে লেখাপড়া করতে গিয়ে বাড়ি থেকে যে টাকা পাঠায় তাতে ডাল আর আলু ভর্তা দিয়েই খাবার খেতে হয়। মাছ-মাংশ খাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠেছে।
তরিকুল ইসলাম বলেন, চাকরির বেতন মাসে মাত্র ১২ হাজার টাকা, এর মধ্যে বাসা ভাড়ায় চলে যায় ৫ হাজার আর বিদ্যুত বিল দেড় হাজার টাকা। বাকি সাড়ে ৫ হাজার টাকা দিয়ে সংসার চালানো দুষ্কর হয়ে উঠেছে। মাসের ১৫ দিন যাবার পরে চোখে অন্ধকার দেখতে হয়।