Image description
‘টক অব দ্য চিটাগাং’ : দ্রুতই দেশে ফিরছেন তারেক রহমান “বিবিসিতে একান্ত সাক্ষাতকারে চৌকস ছিলেন তিনি”: ঢাবি প্রফেসর ড. শামীম রেজা

তারেক রহমান। যিনি তরুণ প্রজন্মের কাছে আগামীর বাংলাদেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ রচনায় আলোক দিশারী। প্রৌঢ় থেকে অধিক বয়স্কদের কাছে যিনি ‘তারেক জিয়া’। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং গণতন্ত্রের আপোসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ‘ছায়া’, ‘কায়া’ ও ‘শীষ্য’। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্রুতই দেশে ফিরে আসছেন এবং আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশগ্রহণ করবেন। ওই কথাটাই গতকাল মঙ্গলবার বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের সবখানেই সবার মুখে মুখে ঘুরেফিরে উঠে আসে।

‘টক অব দ্য চিটাগাং’ ছিল তারেক রহমান এবার আসছেন। দারুণ জমবে এবার ভোটের মাঠ। গত সোমবার ও গতকাল মঙ্গলবার বিবিসি বাংলায় তারেক রহমানের প্রকাশিত সাক্ষাতকার যেন বিদ্যুৎ বেগে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, পত্র-পত্রিকাসহ গণ্যমাধ্যমে শহর-নগর-গ্রাম-গঞ্জ, হাট-বাজার, অফিস-আদালত পাড়া, চায়ের আড্ডা, কাচারীঘর-বৈঠকখানা এমনকি গৃহকোণেÑ সর্বত্রই।

দীর্ঘ ১৭ বছর চরম বৈরী পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে লন্ডনে থাকার পর তারেক জিয়ার দেশে ফেরা এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ তথা ভোটযুদ্ধে দলের মূল কা-ারি হিসেবে নেতৃত্বদানের স্পষ্ট বার্তাটি অবশেষে এসে গেলো। যাকে বলা হয় ‘ভেরি লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার’। আর, তা নিয়ে রাজনীতি সচেতন বিশেষ করে ‘ভোট পাগল’ এদেশের সর্বস্তরের মানুষ এখন নতুন করে আলোচনা-পর্যালোচনা, হিসাব-নিকাশের খাতা খুলেছেন। সাধারণ মানুষের কথাবার্তায় ফুটে উঠছে যে স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে গণতন্ত্রের নতুন পথযাত্রায় দেশের রাজনীতিতে নবতর অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। তাছাড়া তারেক রহমান সোমবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ‘ফিন্যান্সিয়াল টাইমস’কে দেয়া অপর এক সাক্ষাতকারে আগামী নির্বাচন নিয়ে তার দৃঢ় আশাবাদ তুলে ধরে বলেছেন, “আমরা আত্মবিশ্বাসী যে আমরা জয়ী হবো। আমরা জোরালোভাবে বিশ্বাস করি যে, এককভাবে সরকার গঠনের অবস্থায় আমরা রয়েছি”।

বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠন-সমূহের চট্টগ্রাম মহানগর, জেলা-উপজেলা, থানা-ওয়ার্ড, ইউনিয়ন পর্যায়ের তৃণমূল নেতা-কর্মী-সমর্থকরা নবোদ্যমে দারুণ উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন। তারা আনন্দিত, উল্লসিত। স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, আমরা তারেক রহমানকে স্বাগত জানানোর জন্য তার আগমনের সেই দিনটির দিকেই তাকিয়ে আছি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্রুতই দেশে ফিরে আসার বার্তাটি দিয়ে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এবং ১২ কোটি ভোটারের মনের প্রত্যাশা-আকাক্সক্ষার কথাটাই তিনি জানান দিয়েছেন। চট্টগ্রামের মাটি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসীদের দূর্জয় ঘাঁটি।

তার আগমনকে ঘিরে দলের কর্মীদের মাঝে বিপুল উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা সঞ্চার হয়েছে। যা তারেক রহমান দেশে এসে পৌঁছার মাহেন্দ্রক্ষণে গণজাগরেণের দিকেই যাবে বলে কর্মীরা আশাবাদী। আগামীর নির্বাচনী চ্যালেঞ্জে বিপুল জনপ্রিয়তা প্রমাণের জন্য নেতা-কর্মীরা সবটুকু উজাড় করে দেবেন। তারেক রহমানের আগমনের বার্তায় দলীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা এবার ভোটের হাওয়ায় আরও গা-ঝাড়া দিয়ে উঠবেন। ‘ধানের শীষে’ ভোটের সমর্থনে জোরদার পদক্ষেপে তারা ভোটের মাঠে আরও সক্রিয় হয়ে উঠবেন। বৃহত্তর চট্টগ্রামের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে টেকনাফ থেকে উত্তর-পশ্চিমে মীরসরাই পর্যন্ত সর্বত্র বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়ে গেছে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মাঝে, তারেক রহমানের আগমনের দিনটিতে অনেকেই রাজধানী ঢাকায় ছুটে যাবেন দলের কা-ারিকে স্বাগত জানানোর আনন্দে নিজেদের ভাসাতে।

বিবিসি বাংলায় তারেক রহমানের একান্ত সাক্ষাতকার প্রসঙ্গে সোমবার রাতে চ্যানেল আইয়ের নিয়মিত অনুষ্ঠান ‘আজকের সংবাদপত্রে’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগের প্রফেসর ড. শামীম রেজা মন্তব্য করেন, ‘চৌকসভাবেই তারেক রহমান পুরো সাক্ষাতকারটি মোকাবিলা করেছেন। এখানে তার ব্যক্তিত্ব মূল্যায়নের সুযোগ হয়েছে’।

এদিকে বিবিসি এবং ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে দেয়া তারেক রহমানের সাক্ষাতকার বিশেষত তারেক রহমানের দেশে ফেরার স্পষ্ট বার্তা জানান দেয়া প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা চট্টগ্রামের (রাউজান) সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমি মনে করি তারেক রহমানের দেশে ফিরে আসার এই ঘোষণা অত্যন্ত সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। কেননা দেশের বাইরে থেকে দেশের পরিস্থিতিকে যেভাবে বোঝা যায় দেশে, বাস্তবে ও চাক্ষুষ উপলব্ধিতে কিছু না কিছু ভিন্নতা তো রয়েছেই। আমি নিজেই তার সাক্ষী এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে। আমাদের প্রত্যাশা তার আগমনের মধ্যদিয়ে দলীয় শৃঙ্খলা পুরোদমে ফিরে আসবে। ত্যাগী নেতা-কর্মীরা-সমর্থকরা অবশ্যই উজ্জীবিত হবেন। আমরা তার আগমনের দিনটির অপেক্ষায় থাকলাম। আগামী নির্বাচনে বিএনপি জয়ী হয়ে এককভাবে সরকার গঠনের পর্যায়ে জনসমর্থন লাভ করবেÑ তারেক রহমানের এই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তার সহমত রয়েছে বলে জানান তিনি।

একই প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদউল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্যাতিত রাজনৈতিক নেতা। কঠিন পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তাকে ১৭ বছর বিদেশে থাকতে হয়েছে; যা বিএনপি এবং গণতন্ত্রকে দুর্বল ও ক্ষতিগ্রস্ত করে রাখার স্বৈরাচারী ষড়যত্রেরই অংশ ছিল। এবার আমরা আনন্দিত উদ্বেলিত যে তিনি অতি দ্রুত দেশে ফিরবেন, দলকে কাছে থেকে নেতৃত্ব দেবেন, দলের শৃঙ্খলা ও সংহতি আরো জোরালো হবে, দেশে গণতন্ত্র পুনর্নির্মাণ ও জনগণের কল্যাণে তিনি অবদান রাখতে সক্ষম হবেন। তারেক রহমানের দেশে শিগগিরই ফিরে আসার ঘোষণার সাথে বাংলােেদশর ১৮ কোটি মানুষ এবং ১২ কোটি ভোটারের মনে জমে থাকা আশা-আকাক্সক্ষারই প্রতিধ্বনি তিনি করেছেন। অত্যন্ত বাস্তবমুখী ঘোষণা তিনি দিয়েছেন। আমরা আত্মবিশ্বাসী তারেক রহমানের সুযোগ্য বলিষ্ঠ নেতৃত্বে জনগণের ভালোবাসায় আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষের প্রতি দেশের শতকরা ৮০ ভাগ ভোটার অকুণ্ঠ সমর্থন দেবেন।

নগরীর চকবাজারের ব্যবসায়ী মো. আশরাফ উদ্দিন তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, দেশবাসী তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামী দিনে সুন্দর, উন্নত ও শান্তিপূর্ণ একটা বাংলাদেশ দেখতে চায়। যেখানে থাকবে না হিংসা-হানাহানি, রক্তারক্তি এবং মানুষের দুঃখ-দুর্দশা। উত্তর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের আবিদুর রহমান বলেন, বিএনপি নেতা তারেক রহমান সঠিক সময়েই দেশে ফিরে আসার সুসংবাদটি দিলেন। আমরা তাকে স্বাগত জানাই। বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রচনা করতে হলে তরুণ ও বিচক্ষণ রাজনৈতিক নেতার কোনো বিকল্প নেই। তার পিতা শহীদ জিয়া এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। স্বৈরাচারী ও দুর্নীতিবাজ শাসকরা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে গেছে। জনগণ আশাবাদী ধানের শীষের দল, জিয়ার দল, খালেদা জিয়ার দল বিএনপির তরুণ প্রজন্মের নেতা তারেক জিয়ার সুযোগ্য ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।