Image description
ইসিতে সাবেক কর্মকর্তারা,♦ নারীদের ভোট কেন্দ্রে নিতে মব ভায়োলেন্স বন্ধের দাবি নারী নেত্রীদের ♦ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে ইসলামী ব্যাংক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ঢাকা ব্যাংক কর্মকর্তাদের নিয়োগ না দেওয়ার পরামর্শ

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে মাঠ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ দ্রুত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে নেওয়ার সুপারিশ করেছেন ইসির সাবেক কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচনি কর্মকর্তাদের ‘ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার’ দেওয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ঢাকা ব্যাংক কর্মকর্তাদের ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ না দেওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ইসির সাবেক কর্মকর্তারা। এ ছাড়া বৈধ ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সীমান্ত পথে আসা অস্ত্র, নকল টাকা বন্ধ, সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা, কালো টাকা নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়ে ইসিকে তৎপর হওয়ার পরামর্শ দেন তারা।

গতকাল সকালে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত ইসির সাবেক কর্মকর্তাদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় সভায় তারা এসব পরামর্শ দেন। বিকালে অনুষ্ঠিত নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নারীদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মব ভায়োলেন্স বন্ধের দাবি জানান নারী নেত্রীরা। এ সময় চার নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সকালের মতবিমিয় সভায় ইসির সাবেক কর্মকর্তারা মানুষের মধ্যে সরকারের দলনিরপেক্ষ ভূমিকার বার্তা পৌঁছাতে প্রয়োজনীয় রদবদল আনতে সরকারকে প্রস্তাব দেওয়ারও অনুরোধ জানান। এ সময় ইসির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. জাকারিয়া জানান, ইসির কর্মকর্তা রয়েছেন আড়াই হাজার। কিন্তু নির্বাচনে দরকার হয় প্রায় ১০ লাখ লোকবল। সব পেশার সব ধরনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন। এসব লোকবল নিয়োগের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা দেখতে হবে।

কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে একেবারে দলীয়। এজন্য অতীতে ইসলামী ব্যাংক বা এ জাতীয় প্রতিষ্ঠান থেকে লোকবল নিয়োগ করা হয়নি। এবারও এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এ ছাড়া গত তিনটি নির্বাচনে যারা জড়িত ছিলেন তাদের এভয়েড করতে হবে। ইসির সাবেক যুগ্ম সচিব খন্দকার মিজানুর রহমান জানান, আগে ৪৫ দিনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও এবার পোস্টাল ব্যালটের সুবিধার্থে তফসিলের সময় বাড়ানো হলে ভালো হবে। সাবেক ইসি কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জমান তালুকদার জানান, ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বসহ ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে নির্বাচনে ইসির সরাসরি নিয়ন্ত্রণসহ সব কাজ সুচারুভাবে করতে পারবেন। ইসির সাবেক উপসচিব মিহির সারওয়ার মোর্শেদ বলেন, ২০০৭ সালে পোস্টাল ব্যালটের জন্য কারাগারের ৮৭ হাজার ভোটারের তথ্য সংগ্রহের পরও এগোয়নি। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের সহায়তা না করলে বেশ জটিলতায় পড়তে হবে। তাই পোস্টাল ব্যালটের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আগামী নির্বাচনে এনিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তিনি জানান, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০০৮ সালে ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক কর্মকর্তাদের বাদ দেওয়া হয়েছিল। এবারও কর্মকর্তা নিয়োগে সতর্ক থাকতে হবে। অঙ্গীভূত আনসারদের বিষয়ে ‘দলীয়’ অভিযোগ থাকায় সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন ইসির সাবেক আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শাহ আলম, ইসির কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ শাহজাহান, মিছবাহ উদ্দিন আহমেদসহ ১০ জন।

বিকালের সংলাপে উইম্যান ডেভেলপমমেন্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মিষ্টি আশরাফুন নাহার প্রতিবন্ধী মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের সময়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। নিজেরা করি এর সমন্বয়কারী খুশী কবির ফ্রি, ফেয়ার ও ক্রেডিবল ইলেকশন দাবি করে বলেন, মব ভায়োলেন্স নারীদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য নেতিবাচক দিক হতে পারে। এটা বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নারীবিদ্বেষী, সাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এ তিনটি বিষয়ে নজর রাখতে হবে। নির্বাচনের আগে ও পরে মব ভায়োলেন্স ও নারী নির্যাতনের বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি রাখলে নারীরা নিরাপদ বোধ করবেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতামুক্ত নির্বাচন যাতে হয় সেটা আমরা চাই।