Image description

নিষিদ্ধ হওয়ার পর এক বছরের মাথায় এসে প্রথমবারের মতো কমিটি দিল আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পলায়নের পর ওই বছরের ২৩ অক্টোবর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল। বর্তমানে সংগঠনটির শীর্ষ দুই নেতা ভারতে পলায়নের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে পালিয়ে অবস্থান করছেন অনেক নেতাকর্মী। এছাড়া দেশে যারা রয়েছে তারা চলে গেছেন আত্মগোপনে। প্রকাশ্যে আসলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিচ্ছেন উত্তেজিত ছাত্র-জনতা।

এদিকে সম্প্রতি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখার ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছে। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদের প্যাডে এবং সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত চিঠি দেওয়া হয়েছে পদায়ন হওয়া নেতাদের। তবে পূর্ণাঙ্গ এই কমিটি তারা প্রকাশ করেনি। যদিও নিষিদ্ধ এই সংগঠনে পদ পাওয়ার পর অনেকেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। জবির ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমরুল কায়েস শিশির ফেসবুকে সম্প্রতি একটি স্ট্যাটাস দিয়ে লেখেন, ‘‘সাংগঠনিক সম্পাদক’’। আরেক শিক্ষার্থী আল আমিন হাওলাদার লেখেন, ‘‘আলহামদুলিল্লাহ। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।’’

 

শাখা ছাত্রলীগের নেতারা বলছেন, ৫ আগস্টের পর পুরান ঢাকার বংশালসহ তিনটি থানায় তাদের বিরুদ্ধে ১০টিরও বেশি মামলা হয়েছে। সাবেক বর্তমান মিলিয়ে প্রায় ৩ শতাধিক নেতাকর্মী আসামি। আর বিভিন্ন একাডেমিক কাজে ক্যাম্পাসে গিয়ে ও এর আশপাশে ১২/১৩ নেতাকর্মীকে মারধরের হয়েছেন। এ ছাড়াও ৪২১ জন নেতাকর্মীর তালিকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দিয়েছে জবি শাখা ছাত্রদল।

শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা জানান, ৫ আগস্টের পর আমরা আর ক্যাম্পাসে যেতে পারছি না। গেলেই মারধর করে পুলিশে দেওয়া হচ্ছে। তারপরও ২০১ সদস্য কমিটিতে অনেকেরই ছাত্রত্ব আছে।

এর আগে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি এক বছরের জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ৩৫ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সম্প্রতি সেটা ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি ঢাকা মহানগরের কামরাঙ্গীরচরসহ তিনটি থানায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

 

কোনো শিক্ষার্থী যদি নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকে, এ নিয়ে প্রমাণ পাওয়া গেলে বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. তাজাম্মুল হক।

তিনি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী যদি নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকে যথাযথ প্রমাণ সাপেক্ষে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে।’’

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নতুন কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসেন দ্য ডেইলি ক্যম্পাসকে বলেন, ‘‘আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে প্রয়োজনীয় নজরদারি ও গোয়েন্দা তৎপরতা আছে। অবৈধ কর্মকাণ্ড বা সংঘর্ষের চেষ্টা হলে তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’