
নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অপূর্ব পালের কুরআন অবমাননার ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অবিলম্বে তার দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। ওই শিক্ষার্থীর কুরআন অবমাননার দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত না করলে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৫ অক্টোবর) বিকালে সংগঠনের কেন্দ্রীয় আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অপূর্ব রাদের কুরআন অবমাননার জঘন্য দৃশ্য দেশের কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছে। ওই শিক্ষার্থী নিজেই তার ফেসবুক প্রোফাইলে কুরআন অবমাননার ভিডিওচিত্র প্রচার করে আরও বড় অপরাধ করেছেন। এতে বোঝা যায়, এ কাজ তিনি সজ্ঞানে করেছেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিতের দাবি করছি। এর আগে ক্লাসে হাদিস উল্লেখ করায় নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয় এক শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করেছিল। অপূর্ব পালের কুরআন অবমাননার ঘটনায় এ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্যও আসতে হবে।
তারা আরও বলেন, ভাইরাল ভিডিওতে তার অঙ্গভঙ্গি, কথাবার্তা ও উগ্রতা দেখে কোনোভাবেই তাকে পাগল মনে হয়নি, বরং মনে হয়েছে—এ ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তিনি ঘটিয়েছেন। অপূর্ব পালের এ জঘন্য অপরাধের পেছনে দেশি-বিদেশি কোনো এজেন্সির সম্পৃক্ততা থাকলে তা সরকারকে খুঁজে বের করতে হবে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে উসকানি দিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।
আমরা অতীতেও বারবার ন্যায়বিচারের আশায় ধৈর্য ধরেছি- বিষয়টি উল্লেখ করে নেতারা বলেন, ইসলাম ও রাসূল (সা.)-এর অবমাননা ঘটলেই ক্ষুব্ধ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধৈর্যের সবক শেখাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন কেউ কেউ; কিন্তু শেষে আর বিচার হয় না। এমনকি কুৎসিত ভাষায় ধর্ম অবমাননাকারী রাখাল রাহা ও কবি সোহেল হাসান গালিবের ক্ষেত্রেও আমরা ধৈর্যের সঙ্গে আইনের ওপর আস্থা রেখেছিলাম; কিন্তু তাদের কোনো বিচার হয়নি। ধৈর্য ও শান্তির মুলো ঝুলিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সঙ্গে বারবার প্রতারণা করা হয়েছে। ফিলিস্তিন থেকে বাংলাদেশ—একই চিত্র!
আমরা আর প্রতারিত হতে চাই না- এমনটা জানিয়ে হেফাজত নেতারা বলেন, ধর্ম অবমাননা রোধ করতে হলে সর্বোচ্চ শাস্তির আইন করার কোনো বিকল্প নেই। সরকার কুরআন অবমাননাকারী অপূর্ব পালের দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত না করলে আমরা দেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের সঙ্গে পরামর্শ করে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ডাক দিতে বাধ্য হব। আমরা যথেষ্ট ধৈর্য দেখিয়েছি। আর ছাড় দেওয়া যাবে না।