Image description

গত ৫ আগস্ট আন্দোলনের মুখে আওয়ামী সরকারের পতন হয়। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মী। এর আগে ৫ আগস্ট অসংখ্য শিক্ষার্থী পুলিশের হামলায় আহত ও নিহত হন। এরই মধ্যে একজন মাদরাসাশিক্ষার্থী বোরহান খান।

৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানার সামনে পুলিশের নির্মম হত্যাকাণ্ডের সময় মাদরাসাশিক্ষার্থী বোরহান খান আহত হন। সম্প্রতি একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেদিনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন তিনি।

বোরহান খান বলেন, ‘আমরা যাত্রাবাড়ীর ফ্লাইওভাবেরের পাশে ছিলাম। এ সময় পাখির মতো গুলি করা হচ্ছিল।

যার গায়েই গুলি লাগছিল সেই নগদে মারা যাচ্ছে। আমি শুয়ে ছিলাম হাতের ওপর ভর দিয়ে, যার কারণে গুলি আমার হাতের সাইড দিয়ে চলে গিয়েছিল। দাগটা এখনো রয়ে গেছে। আল্লাহর রহমতে হাতের হাড়ে লাগেনি গুলি।
যে কারণে বড় ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হইনি। আমার হাতে গুলি লাগার পর আমি সোজা হয়ে শুয়ে যাই।’
 

তিনি আরো বলেন, ‘যখন দেখলাম পরিস্থিতি পুরোপুরি পুলিশের আয়ত্তে আছে। গুলিটা লাগার পর আমি মরার ভান করে শুয়ে ছিলাম। যেহেতু আমার প্রাণ ছিল, যদি এরকম টেকনিক খাটাই তাহলে বাঁচতে পারি এমন মনে হচ্ছিল।

চোখগুলো বন্ধ ছিল, কিছুক্ষণ পর চোখ মেলে দেখি গুলি চলছেই।’

গুলির শব্দে আমার চোখ নড়ছে দেখে এক পুলিশ দেখে বলছে, এ এখনো মরে নাই উল্লেখ করে বোরহান বলেন, ‘পরে পুলিশেরা আমাকে জোরে জোরে আঘাত করতে থাকে, আমার মাজায়, পায়ে লাথি দেয়। পরে আমার চোখে-মুখে পানির ছিটা দেওয়ার পর আমি পরিপূর্ণভাবে চোখ মেলে উঠে বসি। তখন আশপাশ থেকে আরো পুলিশ এসে আমাকে রাইফেল-পিস্তল দিয়ে অনেক জোরে জোরে আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করতে থাকে। তখন আমি চিৎকার করে বলছিলাম, স্যার আমাকে ছেড়ে দেন। পরে একজন বলেন, উনাকে আর মারিয়েন না। আমার পায়ের রানগুলো ফুলে গেছে, পা অনেক জখম হইছে। পরে একজন বলেন, উনি যদি যেতে পারেন তাহলে ছেড়ে দেন।’

 

গত বছরের ৫ আগস্ট টানা ১৫ বছর পর পরাজয় হয় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের।