Image description

ভারতীয় ও ইউরেশিয় প্লেটের সংঘর্ষে তৈরি হয়েছিল পৃথিবীর সুউচ্চ পর্বতমালা -হিমালয়।  ওই দুই প্লেটের মধ্যে সংঘর্ষ আজও চলছে। তাই আজও বাড়ছে হিমালয় পর্বত। আর তার মধ্যেই ভাঙছে ভারতীয় টেকটনিক প্লেট। বিজ্ঞানীরা বলছেন ইতিমধ্যেই তিব্বতের নীচে ভারতীয় প্লেটে একটা ফাটল ধরেছে। বলা ভালো ওই প্লেট দুভাগ হয়ে একটি প্লেট ঢুকে গিয়েছে ইউরোশিয়ান প্লেটের নীচে। অন্য প্লেটটি ঢুকে গিয়েছে আর্থ ম্যান্টেলের মধ্যে। সম্প্রতি এক সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, এই মুহূর্তে ভারতীয় টেকটনিক প্লেট ‘ডিলেমিনেশন’ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে চলছে। দেখা যাচ্ছে গভীর নিম্নাংশটি অগভীর ঊর্ধ্বাংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। ইউরেশিয়ান প্লেটের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির ফলেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই বিচ্ছিন্নতা খুব সহজ পদ্ধতি নয়। পৃথিবীর গভীরে খুব জটিল চলনের ফলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। ২০২৩ সালে  চীনের  ওসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ভারতীয় টেকটনিক প্লেটের উত্তরাংশ নিয়ে গবেষণা করছিলেন। তখনই তাঁরা ভারতীয় টেকটনিক প্লেটের বিচিত্র আচরণ লক্ষ্য করেন।  

চীনা  বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ লিন লিউয়ের নেতৃত্বে এক গবেষক দল পরীক্ষা করে দেখেছে দক্ষিণ তিব্বতের ভূকম্প সংক্রান্ত তথ্য। আর সেই পরীক্ষায় পরিষ্কার দেখা গিয়েছে,  ফাটল শুরু হয়েছে তিব্বতের নীচে। ওই জায়গাতেই ভারতীয় টেকটনিক প্লেট দুভাগ হয়ে যাচ্ছে। ডিসেম্বরে সানফ্রান্সিসকোতে আয়োজিত আমেরিকায় জিও ফিজিক্যাল কনফারেন্সে এরকমই একটি থিওরি পেশ করা হয়। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ভাবাই যাচ্ছে না কোনও টেকটনিক প্লেট এভাবে ভেঙে যেতে পারে। ভারতের অনেক অংশই অবিচ্ছিন্ন থাকলেও ১০০ কিলোমিটার গভীর অংশে ফাটল দেখা দিচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ফাটল বরাবর দুই ভাগে ভেঙে যেতে পারে দেশ! এর প্রভাব পড়বে হিমালয়ের উপরও।ইউট্রেচ্ট ইউনিভার্সিটির ভূ-গতিবিদ্যাবিদ ডুয়ে ভ্যান হিন্সবার্গেন মন্তব্য করেছেন, "আমরা জানতাম না যে মহাদেশগুলি এইভাবে আচরণ করতে পারে, এবং তা  পৃথিবী বিজ্ঞানের জন্য, বেশ মৌলিক বিষয় ।"আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়ন কনফারেন্সে উপস্থাপিত এবং অনলাইনে প্রিপ্রিন্ট হিসাবে শেয়ার করা এই যুগান্তকারী অধ্যয়নটি হিমালয়ের গঠন সম্পর্কে আমাদের বুঝতে   এবং  এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের ঝুঁকি মূল্যায়নেও অবদান রাখতে পারে।

সূত্র : দ্য ব্রাইটার সাইড