Image description

আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত গোপালগঞ্জ জেলায় রয়েছে তিনটি সংসদীয় আসন। তবে জুলাই আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর জেলার রাজনীতিতে এক ধরনের দৃশ্যমান শূন্যতা তৈরি হয়েছে।

সেনাবাহিনীর গাড়ি পোড়ানো মামলা, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দিদার হত্যা, এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনায় মোট ১৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় ২০ হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার এড়াতে তাঁরা এলাকাছাড়া হওয়ায় আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের তেমন কোনো রাজনৈতিক সক্রিয়তা নেই।

তবে অভিজ্ঞ মহলের মতে, বাস্তবতা ও ভোটের হিসাব অন্যরকম। যদি আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে না দেওয়া হয়, তবে ভোটের ভাগাভাগিতে এ অঞ্চলে ফলাফল ভিন্ন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিএনপি, জামায়াত, সিপিবি এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা আওয়ামী লীগের ভোটারদের কিছু ভোট টানার চেষ্টা করছেন।

আবার কেউ কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের ভোট কাজে লাগাতে চাইছেন। তবে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে সংশয় রয়েছে সবার মধ্যে।

গোপালগঞ্জ-১ : মুকসুদপুর-কাশিয়ানী উপজেলার একাংশ নিয়ে এই আসনে ভোটার চার লাখ পাঁচ হাজার ২৯২ জন। জামায়াত থেকে জামায়াতের সাবেক জেলা আমির মাওলানা আব্দুল হামিদ এবং ইসলামী আন্দোলন আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমানকে এ আসনে মনোনয়ন নিশ্চিত করায় তাঁরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন।

বিএনপি থেকে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম ও কেন্দ্রীয় সহআইনবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদিন মেজবা ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এফ ই শরফুজ্জামান জাহাঙ্গিরের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে এখনো প্রার্থী নির্ধারণ না হওয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মী বা সমর্থকরা মাঠে একাট্টা হচ্ছেন না।

গোপালগঞ্জ-২ : গোপালগঞ্জ সদর-কাশিয়ানীর একাংশ নিয়ে এই আসনে ভোটারসংখ্যা তিন লাখ ৮৭ হাজার ৫৫৭। এখানে জামায়াতের সাবেক জেলা আমির অ্যাডভোকেট আজমল হোসেন সরদার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে গোপালগঞ্জ জেলা সভাপতি মাওলানা তসলিম সিকদার নির্বাচনে অংশ নেবেন।

বিভিন্ন ইউনিয়নে গণসংযোগ করছেন তাঁরা।

বিএনপির একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী থাকায় এখানে বিভক্ত দলের নেতাকর্মীরা। এই আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এফ ই শরফুজ্জামান জাহাঙ্গির, এম সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, সাইফুর রহমান নান্টু, এম এইচ খান মঞ্জু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান ও সদস্য ডা. কে এম বাবর মনোনয়ন চাইবেন বলে নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। তবে যিনি দলীয় টিকিট পাবেন, তাঁর হয়েই নির্বাচনী কাজ করবেন বলে নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।

গোপালগঞ্জ-৩ : টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া উপজেলা দিয়ে গঠিত এই আসনে ভোটার রয়েছেন তিন লাখ দুই হাজার ৫৩৯ জন। এখানে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী। এ আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক রেজাউল করিম, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মারুফ শেখ এবং সিপিবির হয়ে নির্বাচনে লড়বেন জেলা কমিটির সদস্য নাজমুল ইসলাম। তাঁরা বিভিন্নভাবে তাঁদের গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।