সাফওয়ান আহমেদ, বয়স সাড়ে ৫ বছর। বরিশালের গৌরনদীর হোসনাবাদ গ্রামে দাদাবাড়ি বেড়াতে গিয়ে হত্যার শিকার হয়েছে। গ্রামের ইমরান সিকদারের ছেলে সাফওয়ান। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে সম্প্রতি ঢাকা থেকে গ্রামে যান ইমরান। দুই সপ্তাহ আগে ঘরে নতুন অতিথি আসায় পরিবারের সদস্যদের মাঝে ছিল আনন্দ। ছোট্ট ভাইকে দেখে সাফওয়ানের খুশির কমতি ছিল না। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে দাদাবাড়ির পাশের জমিতে ছোট্ট সাফওয়ানের লাশ পড়ে ছিল।
ফুটফুটে শিশুর লাশ পাওয়ার খবরে শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করেন। দাদা বারেক সিকদারের বাড়িতে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। হৃদয়বিদারক পরিবেশ ছুঁয়ে যায় সবাইকে। সাফওয়ানের জন্য কাঁদছে পুরো হোসনাবাদ।
পুলিশ বলছে, চোখ ও কানের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সাফওয়ানের মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
সাফওয়ানের চাচাত ভাই নাঈম সিকদার জানান, বুধবার দুপুরের পর থেকে সাফওয়ানকে পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজাখুঁজির পর এলাকায় মাইকিং করা হয়। পুকুরে জাল ফেলেও সন্ধান করা হয়। এর পর থানায় সাধারণ ডায়েরি করে পরিবার। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার ভোরে স্থানীয় এক প্রতিবেশী জহিরুল হক মান্নার বাড়ির পাশের জমিতে সাফওয়ানের লাশ দেখে চিৎকার করেন। দ্রুত আশপাশের লোকজন জড়ো হন। এর পর পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
নাঈম আরও জানান, জমিজমা নিয়ে সাফওয়ানের দাদার সঙ্গে প্রতিবেশী রোমান সিকদার ও তাঁর পরিবারের ঝামেলা চলছিল। নিখোঁজ হওয়ার আগে সাফওয়ানের সঙ্গে রোমানকে কথা বলতে দেখেছেন অনেকে।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি ইউনুস মিয়া জানান, পুলিশের ফরেনসিক টিম আলামত সংগ্রহ করেছে। বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। সাফওয়ান হত্যায় জড়িত সন্দেহে স্থানীয় বাসিন্দা রোমান চৌকিদার ও ইউপি সদস্য মুজাহার চৌকিদারকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে সাফওয়ানকে হত্যা করা হয়েছে কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।