
৭ মাসের শিশু রাইয়ান। তার ডান হাতে ক্যানুলা লাগানো। সেদিক দিয়ে চলছে স্যালাইন। পাঁচদিন ধরে ছোট্ট শিশুটির শরীরে জ্বর। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। শিশুটির বাসা নারায়ণগঞ্জে। বর্তমানে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের ডেঙ্গু ওয়ার্ডের ১৫ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন। রাইয়ান কখনো চিৎকার করে কাঁদছে, কখনো তাকাচ্ছে টলোমলো চোখে। শয্যার পাশে তার ছোট্ট বোন পরম আদরে মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে। রাইয়ানের মা শিলা বেগম মানবজমিনকে বলেন, চারদিন আগে হঠাৎ শিশুটির অনেক জ্বর আসে। কিছু খেতে পারছিল না। স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে ঢাকার শিশু হাসপাতালে পাঠায়। এখানে পরীক্ষা করে দেখি ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে। তিনদিন ধরে শিশু হাসপাতালে ভর্তি। এখন মোটামুটি ভালো আছে কিন্তু কিছু খেতে চাচ্ছে না। কীভাবে কি হলো বুঝতে পারছি না। শিশুটির বোন রাইসা বলে, আমার বাবা একটি কারখানায় কাজ করেন। ভাইকে হাসপাতালে এসে যখন প্রথম দেখি খুব কান্না করেছিলাম। প্রথম দিকে চোখ বন্ধ করে থাকতো, কিছু খেতে চাইতো না। তেমন কোনো সাড়া-শব্দ ছিল না। কিন্তু এখন অল্প কিছু মুখে দিলে একটু একটু করে খাচ্ছে।
থেকে এই পর্যন্ত এই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ৩০০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে ৫ জন এবং এই মুহূর্তে ভর্তি রয়েছে ২০ জন। গত সাড়ে আট মাসে মারা গেছে ২ জন। হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ৩৪টি শয্যা রয়েছে। তিনি বলেন, জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের অবস্থা বুঝে অবশ্যই হাসপাতালে আসতে হবে।
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. লুনা পারভীন মানবজমিনকে বলেন, চলতি বছরের জুন থেকে হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। জুন মাসে চিকিৎসা নিয়েছে ৪১ জন, জুলাই মাসে ৭৯ জন, আগস্ট মাসে ৮৩ জন ও চলতি মাস সেপ্টেম্বরে ৫৪ জন ভর্তি হয়েছে। আগস্টে সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে। জানুয়ারি থেকে এই পর্যন্ত এই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ৩০০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে ৫ জন এবং এই মুহূর্তে ভর্তি রয়েছে ২০ জন। গত সাড়ে আট মাসে মারা গেছে ২ জন। হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ৩৪টি শয্যা রয়েছে। তিনি বলেন, জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের অবস্থা বুঝে অবশ্যই হাসপাতালে আসতে হবে। শিশুদের জ্বর হওয়ার পর প্রথম তিনদিনের মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ঢাকা ও বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে রোগী আসছে হাসপাতালটিতে। ডেঙ্গু রোধে বাসাবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সেই সঙ্গে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।