Image description

মেহেরপুরের সাবেক পুলিশ সুপার এ কে এম নাহিদুল ইসলাম সরকারি কর্মকর্তা হয়েও নিজেকে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা পরিচয় দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করতেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তার অত্যাচারে মেহেরপুরের বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা বাড়িছাড়া হয়েছেন। তার চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ ছিল ব্যবসায়ী মহলও। পুলিশের এই কর্মকর্তার ঢাকায় গ্রেপ্তারের খবরে আনন্দের বন্যা বইছে মেহেরপুরে। ফেসবুকসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছেন জেলাবাসী। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে দাবি জানানো হচ্ছে, অত্যাচারী ও দুর্নীতিবাজ সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।

এ কে এম নাহিদুল ইসলাম মেহেরপুরের এসপি হিসেবে যোগদানের পর থেকেই বিএনপি এবং জামায়াত নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচারের স্টিমরোলার চালাতে শুরু করেন। শুরু করেন গ্রেপ্তার বাণিজ্য। বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদেরকে ক্রসফায়ারের নামে পরিকল্পিত হত্যা, সাজানো মামলা থেকে জামিনে মুক্তির পর আবারও জেল গেট থেকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের ভয়াবহ পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলেন তিনি।

তার হাত থেকে শুধু বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীই নন, দলগুলোর গ্রামের সাধারণ সমর্থক পর্যন্ত ছাড় পাননি। তার এই অনৈতিক ও অমানবিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন গাংনী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরেন্দ্রনাথ সরকার, মুজিবনগর থানার ওসি রবিউল ইসলাম, ডিবির ওসি জুলফিকার আলীসহ মেহেরপুর পুলিশের সেসময়কার শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

মেহেরপুর জেলার বহুল সমালোচিত সাবেক এই পুলিশ সুপার (বরখাস্ত ডিআইজি) একেএম নাহিদুল ইসলামের ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারের খবর মেহেরপুরে পৌঁছালে রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে আনন্দ উৎসব শুরু হয়।

দুর্নীতিবাজ এবং নির্যাতক এই পুলিশ কর্মকর্তার বিচারের দাবিতে সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুক ও অন্যান্য প্লাটফর্মে সোচ্ছার হচ্ছেন মানুষ। তার ফাঁসির দাবি জানিয়ে ফেসবুকগুলোতে একের পর এক পোস্ট দেওয়া হচ্ছে।

মেহেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা তাজ উদ্দীন খান বলেন, “এসপি নাহিদকে গ্রেপ্তার করাতে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। তার বিচারের রায় ঘোষণা ও সর্বাচ্চ শাস্তি দাবি করছি।”

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, নাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মেহেরপুরের সাবেক জামায়াত নেতা তারিক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলা রয়েছে। তিনি এই মামলার মূল আসামি। এছাড়া তার নামে জামায়াত নেতা আব্দুল জব্বার হত্যা মামলা রয়েছে।

দুটি মামলার মধ্যে তারিক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল। রিকুইজিশন পাওয়ার পর গত শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে, গত ২৮ জুলাই এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একেএম নাহিদুল ইসলামকে জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।

শীর্ষনিউজ