Image description

 

 

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বর্তমান সময়ে পরিবেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে পলিথিন ও প্লাস্টিক। দেশের পানি, মাছ, কৃষি জমি সবই ধংস হচ্ছে, নদী-নালা ভরাট হচ্ছে, এমনকি সাগরের তলাও ভরাট হয়ে যাচ্ছে, স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে ভয়াবহভাবে- যা নিয়ে গত ২৫ জুন, ২০২৫ অনুষ্ঠিত বিশ^ পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলার অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে আশংকা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ‘প্লাস্টিক পরিবেশের বিষ’ উল্লেখ করে তিনি একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধ করার জন্য বলেছেন।

অবশ্য, এর আগে থেকেই পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পলিথিন ও প্লাস্টিক উচ্ছেদ অভিযানে নেমেছেন। গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে পলিথিন ও প্লাস্টিক জাতীয় ব্যাগ। এর এক মাস পরে ১ নভেম্বর, ২০২৪ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়ে কাঁচাবাজারেও পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এটি বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সারাদেশে পলিথিন বন্ধে অভিযান চলছে ওই দিন থেকে। পরের দিন অর্থাৎ ২ নভেম্বর, ২০১০ থেকে অভিযান আরো জোরদার করার কথাও ঘোষণা করেছিলেন উপদেষ্টা। ব্যাপকভিত্তিক অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত দশ মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। এরমধ্যে অনেক অভিযান পরিচালনা হয়েছে। কিন্তু পলিথিন বন্ধের অভিযানে সাফল্য এসেছে কতটা- এ প্রশ্নের কোনো জবাব উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান দিতে পারছেন না। আদতে বাজারে পলিথিন উৎপাদন, সরবরাহ ও ব্যবহারের ওপর মন্ত্রণালয়ের অভিযানের ঘোষণায়ও কোনো প্রভাবই দেখা যাচ্ছে না। উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, দেশের মোট পলিথিন উৎপাদন ও ব্যবহারের ওপর অভিযান কতটা প্রভাব ফেলতে পেরেছে, তিনি এর জবাব দিতে পারেননি। যেহেতু অভিযানে কোনো সাফল্য নেই, তাই এটি চালু রাখার কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা এবং অভিযান চালু রাখার নামে পলিথিন উৎপাদনকারী ও সরবরাহকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বড় অংকের চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে- এসবেরও জবাব পাওয়া যায়নি উপদেষ্টার কাছ থেকে।

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি
দৈনন্দিন জীবনে পলিথিনের ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় ইথিন থেকে প্রাপ্ত পলিমারকে পলিথিন বলে। পরিবেশদূষণ, জীববৈচিত্র্য, অর্থনীতি ও মানবস্বাস্থ্যের জন্য পলিথিন মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। বাংলাদেশে আশির দশকে পলিথিনের ব্যবহার শুরু হলেও পলিথিনের সহজলভ্যতায় এর ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পলিথিন পচনশীল নয়। এটি এমন একটি পণ্য, যা মাটির সঙ্গে মিশতে আনুমানিক দেড় হাজার বছর সময় লাগে। পলিথিন মাটির উর্বরতা হ্রাস করে এবং মাটির গুণাগুণ বিনষ্ট করে। অপচনশীল ও সর্বনাশা পলিথিনের এমন যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে বিশেষ করে বর্ষাকালে নগর-মহানগরে পয়োঃনিষ্কাশনের ড্রেন, নালা, নর্দমা, খাল, বিল ও নদীগুলো ভরাট হচ্ছে আর দূষিত হচ্ছে পানি। পলিথিন নদী ও সাগরের তলদেশে জমা হয়ে জীববৈচিত্র্য ও সামুদ্রিক জীবের মারাত্মক ক্ষতি করছে। মাছ-মাংস পলিথিনে প্যাকিং করলে অবায়বীয় ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে রেডিয়েশন তৈরি হয়ে খাবার বিষাক্ত হয়। পলিথিন থেকে নির্গত হয় বিষাক্ত পদার্থ, যা মানবদেহের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর। পলিথিন ব্যাগ অবাধ ব্যবহারের ফলে চর্মরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্নায়ুজনিত রোগ ও ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের সংক্রমণ হতে পারে।

শুধুমাত্র পলিথিন ব্যাগেই যে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে তা নয়। বর্তমানে নামিদামি কসমেটিক কোম্পানির সাবান, ফেসওয়াশ, টুথপেস্ট, বডিওয়াশ, ডিটারজেন্ট, বিস্কিট, চানাচুর, চিপস, মশলা ইত্যাদিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন দ্রব্যাদির মোড়কেও মাইক্রোবিড নামক ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি দেখা যায়। যা ব্যবহারের পর নদী-নালা, খাল-বিল ও অন্যান্য জলাশয়ে যাচ্ছে এবং মাছের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করছে। পরবর্তীতে এটি চর্মরোগসহ মারাত্মক ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য ক্ষতি বিবেচনায়, ২০০২ সালে আইন করে পলিথিন শপিং ব্যাগের উৎপাদন, ব্যবহার, বিপণন ও বাজারজাতকরণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল বাংলাদেশ সরকার। সেসময় বাংলাদেশ ছিল এমন পদক্ষেপ নেয়া বিশ্বের প্রথম দেশ। যদিও পশ্চিমা বিশ্বের বিবেচনায় বাংলাদেশে পলিথিন ব্যবহারের শুরুটা অনেক পরের দিকে শুরু হয়েছিল। আইন করে নিষিদ্ধ করাটা কাজেও এসেছিল। ২০০৬ সাল পর্যন্ত মোটামুটি পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার সেভাবে দেখা যায়নি। এরপর ধীরে ধীরে নজরদারির অভাবে বাজারে জায়গা ফিরে পায় পলিথিন।

সভা- সেমিনার, বক্তৃতা-বিবৃতিতে ব্যস্ত উপদেষ্টা, সাফল্য ‘জিরো’
দীর্ঘকাল ধরেই পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এর প্রধান নির্বাহী হিসেবে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তিনি যখন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পান, এটা ধরে নেয়া হয়েছিল যে, দেশের বিপর্যয়কর পরিবেশের এবার উন্নতি ঘটবে। উপদেষ্টা হিসেবে রিজওয়ানা হাসানের প্রথম উদ্যোগই ছিল পলিথিন বন্ধ। যেহেতু পলিথিন সবচেয়ে বড় এবং জরুরি সমস্যা তাই এটি বন্ধের কাজে হাত দিয়েছেন তিনি। কিন্তু পলিথিন বন্ধ ঘোষণার পর ইতিমধ্যে ১০ মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত কতটা সাফল্য এসেছে- শীর্ষকাগজের এ প্রশ্নের জবাব দিতে পারনেনি উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান। আদতে জবাব দেয়ার সুযোগও তার নেই। যেহেতু তিনি পুরোপুরিই ব্যর্থ। সুপারশপ নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুনের মধ্যেই চলে। সরকারের নির্দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই সুপারশপগুলোর। সুপারশপে কোনো অভিযানেরও প্রয়োজন হয়নি। সরকারি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই তারা এটি কার্যকর করেছে। ফলে এক্ষেত্রে উপদেষ্টার কোনো কৃতিত্বও নেই। তাছাড়া হিসাব করলে দেখা যাবে, সারাদেশের সুপারশপগুলোয় যতটা না পলিথিন ব্যবহৃত হয় রাজধানীর একটি কাঁচাবাজারে তারচেয়েও বেশি হয়। মাত্র দশ টাকার কাঁচামরিচ কিনলেও এরসঙ্গে ফ্রি-তে পলিথিন দেয়া হয়। একজন ভোক্তা বাজারে গিয়ে মাছ-তরকারির পাঁচটি আইটেম কিনলে প্রত্যেকটির জন্য একটি করে পলিথিন দেয়া হয় ফ্রি-তে। যা ওয়ান টাইম ব্যবহার হয়ে থাকে মাত্র। অন্যদিকে সুপারশপের কেনাকাটায় অনেকগুলো আইটেমের জন্য একটি ব্যাগ দেয়া হয় এবং সেটি পুনরায় ব্যবহারযোগ্যও বটে।

দেখা যাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই সারাদেশ চষে বেড়াচ্ছেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। প্রায় প্রতিদিনই ঢাকায় অথবা ঢাকার বাইরে সভা-সেমিনারের লম্বা তালিকা থাকছে। কিন্তু বক্তৃতা-বিবৃতিতে বড় বড় বুলি আওড়ালেও বাস্তবে এর প্রতিফলন নেই। উপদেষ্টা সেমিনার সিম্পোজিয়ামে বক্তৃতা দিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাতে বিভিন্ন এনজিও হয়তো ফায়দা নিচ্ছে, জাতির কোন উপকার হচ্ছে না। অনেক পরিবেশবিদ অভিযোগ করে বলছেন, উপদেষ্টা নিজেকে এখনো এনজিও প্রতিনিধির বাইরে ভাবতে পারছেন না। প্রচারিত আছে যে, এদেশের এনজিওগুলো জনস্বার্থের কথা বলে বিদেশ থেকে খয়রাতি টাকা আনলেও তা সংশ্লিষ্ট খাতে ব্যবহার হয় খুব কমই।

আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন
গত ১২ নভেম্বর পুরান ঢাকার চকবাজারে পলিথিন কারখানার শ্রমিকদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে অভিযান পরিচালনাকারী যৌথ বাহিনী। স্থানীয়রা জানায়, চকবাজারের কামালবাগ এলাকায় অভিযানে যাওয়া যৌথ বাহিনীর (সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ) সদস্যরা কয়েকটি কারখানার তালা ভেঙে পলিথিন তৈরির বিপুল কাঁচামাল উদ্ধার করে। তিনটি কারখানাকে জরিমানা ও সিলগালা করে। তবে অভিযান শুরুর আগে কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় বেঞ্চ দিয়ে পথরোধ করে বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা। পরের দিন ১৩ই নভেম্বর পুনরায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে এক পর্যায়ে বাধার মুখে অভিযান স্থগিত করতে হয় সরকারি কর্মকর্তাদের। এ ব্যাপারে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, “অভিযান বন্ধ করতে হয়নি, অভিযানটা যে মাত্রায় পরিচালনা করার পরিকল্পনা ছিল সেই মাত্রায় (বুধবার) হয়নি, কারণ ওখানে একটা জমায়েত করা হলো এবং বললো যে তাদেরকে অন্তত ছয় মাস সময় দিতে হবে।”
উপদেষ্টার ওই বক্তব্যের পর ছয় মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেছে গত ১২ মে। কিন্তু পলিথিন কারখানায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। যদিও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধের একমাত্র উপায় হচ্ছে উৎপাদন বন্ধ করা, বলছেন সংশ্লিষ্টরা। কারখানায় উৎপাদনস্থল বন্ধ না করে সরবরাহকারী ও ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনায় কোনো ফল আসবে না। এ ধরনের অভিযান পরিচালনার কোনো মানেই হয় না। অথচ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান সেটিই করছেন। আর এ কারণেই পলিথিন বন্ধে উপদেষ্টার আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

যেসব প্রশ্নের জবাব দিতে পারলেন না উপদেষ্টা
শীর্ষকাগজের পক্ষ থেকে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সাক্ষাতকার গ্রহণকালে এ কর্মসূচি ও অভিযানের সাফল্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি সাফল্য সম্পর্কে শুধুমাত্র সুপারশপে পলিথিন বন্ধের কথা বলেছেন। কিন্তু বাস্তবে সুপারশপগুলো তাঁর অভিযানের অংশ ছিল না। অভিযান শুরু হয়েছে ১ নভেম্বর, ২০২৪ থেকে। এর আগে ১ অক্টোবর, ২০২৪ সুপারশপগুলোকে পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধের নির্দেশ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা সেটি কার্যকর করেছে। এর জন্য কোনো অভিযান পরিচালনা করতে হয়নি। এতে উপদেষ্টার কোনো কৃতিত্বও নেই। তারপরও এটাকে কৃতিত্ব হিসেবে ধরা হলেও দেশের মোট পলিথিন উৎপাদনের ওপর এর প্রভাব কতটা পড়েছে বা উৎপাদন কতটা কমেছে এ প্রশ্ন করা হয়েছিল উপদেষ্টাকে। তিনি এর উত্তর না দিয়ে অন্য প্রসঙ্গে চলে যান। তাই পরবর্তীতে লিখিতভাবে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। এটি ছাড়াও পলিথিন বিষয়ে আরো কয়েকটি প্রশ্ন করা হয় উপদেষ্টার কাছে। প্রশ্নগুলো হলো:
(ক) আমি জানতে চেয়েছিলাম, দেশের মোট পলিথিন-প্লাস্টিক দ্রব্যের উৎপাদন ও ব্যবহারের কত শতাংশ সুপারশপগুলোতে ব্যবহৃত হতো বন্ধের আগ পর্যন্ত? আপনি অন্য প্রসঙ্গে কথা বলতে থাকায় প্রশ্নটা হয়তো বুঝে উঠতে পারেননি, তাই তথ্যটা পাওয়া যায়নি। আমি এ বিষয়টি জানতে চাচ্ছি।

(খ) আপনার মন্ত্রণালয় থেকে প্রায়ই প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাফল্য হিসেবে দেখানো হচ্ছে, জরিমানা হিসেবে কখন কত কোটি টাকা আয় হয়েছে সেই তথ্য। এতে এটা প্রতীয়মান হচ্ছে যে, সরকার অর্থ আয়ের জন্যই পলিথিন বন্ধের অভিযানে নেমেছে। বাস্তবে কি তাই?
(গ) ১৩ই নভেম্বর পুরান ঢাকায় পলিথিন কারখানায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে এক পর্যায়ে বাধার মুখে অভিযান স্থগিত করতে হয়। এ প্রসঙ্গে আপনি বিবিসিকে বলেছেন “অভিযানটা যে মাত্রায় পরিচালনা করার পরিকল্পনা ছিল সেই মাত্রায় হয়নি, কারণ ওখানে একটা জমায়েত করা হলো এবং বললো যে তাদেরকে অন্তত ছয় মাস সময় দিতে হবে।”

এ প্রসঙ্গে আমার জানতে চাওয়ার বিষয় হলো, কারখানা মালিক-শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী ছয় মাস সময় ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। এর পর তো নিশ্চয়ই কারখানা বন্ধ করতে বাধা থাকার কথা নয়?

(ঘ) পর্যবেক্ষকদের মতে, পলিথিন বন্ধে আপনার কর্মসূচি এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে পুরোপুরিই ব্যর্থ হয়েছে। দেশের সবকটি সুপারশপে মোট যা পলিথিন ব্যবহৃত হতো, ঢাকা শহরের একটি কাঁচাবাজারেই এরচেয়ে বেশি পলিথিন ব্যবহৃত হয়ে থাকে। মাত্র দশ টাকার কাঁচামরিচ কিনলেও এরসঙ্গে ফ্রি-তে পলিথিন দেয়া হচ্ছে এখনো। একজন ভোক্তা বাজারে গিয়ে মাছ-তরকারির পাঁচটি আইটেম কিনলে প্রত্যেকটির জন্য একটি করে পলিথিন দেয়া হয় ফ্রি-তে। যা ওয়ান টাইম ব্যবহার হয়ে থাকে মাত্র। অন্যদিকে সুপারশপের কেনাকাটায় অনেকগুলো আইটেমের জন্য একটি ব্যগ দেয়া হতো এবং সেটি পুনরায় ব্যবহারযোগ্যও ছিল বটে।

প্রকৃত অর্থে দেখা যাচ্ছে, দেশের মোট পলিথিন উৎপাদন ও ব্যবহারের ওপর আপনার ওই কর্মসূচি কোনোই প্রভাব ফেলতে পারেনি। তাই অকার্যকর এবং সম্পূর্ণ ব্যর্থ এ অভিযান এখনই বন্ধের ঘোষণা দেয়া উচিত, তা না হলে কিছু দুর্নীতিবাজচক্র অভিযানকে ব্যবহার করে চাঁদাবাজির সুযোগ পাচ্ছে, এমন অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী? এসব প্রশ্নের কোনো জবাব তিনি দেননি।
শীর্ষনিউজ