Image description

চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রায় প্রতিটি মোড়, অলিগলি কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে চোখে পড়ে কোচিং সেন্টারের ব্যানার, পোস্টার আর ফেস্টুন। এ যেন নগরীর সৌন্দর্যকে গ্রাস করা এক নীরব দূষণ। অথচ এ কোচিং সেন্টারগুলো এখন একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়িক খাত, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আয় করছে তারা। তবু তাদের বেশির ভাগই সিটি করপোরেশনের নিয়ম-কানুন মানছে না, দিচ্ছে না রাজস্ব।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের হিসাব বলছে, নগরীতে প্রায় ৪০০ কোচিং সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে নিয়মিত ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে মাত্র ১২০টি। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পূর্ণ বেআইনি পথে চলছে। শুধু তাই নয়, শত শত প্রতিষ্ঠান অনুমতি ছাড়াই বিজ্ঞাপন করছে। অনুমোদিত বিজ্ঞাপন প্রচার করছে মাত্র ২০ ভাগ প্রতিষ্ঠান।

সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি ব্যানার বা সাইনবোর্ডের জন্য এক থেকে দুই হাজার টাকা করই যথেষ্ট। অথচ কোচিং সেন্টারগুলোর বড় অংশ সেই কর দিচ্ছে না। ফলে একদিকে বিপুল রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে নগরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।

তাদের ভাষ্য, কিছু প্রতিষ্ঠান একবার লাইসেন্স করলেও পরে নবায়ন করে না। আবার অনেকগুলো অনুমতি ছাড়াই ব্যানার লাগাচ্ছে। এগুলো সরাচ্ছেও না। এতে করপোরেশনের আয় কমছে, আর নগরীর পরিবেশও দূষিত হচ্ছে।এ অবস্থায় নগরীর সৌন্দর্য রক্ষা ও রাজস্ব আয় নিশ্চিত করতে কোচিং সেন্টারগুলোকে নীতিমালার আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগরভবনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মেয়র বলেন, ‘শহরকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রাখতে হলে সবাইকে নিয়ম-কানুন মানতে হবে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি নেওয়া কোচিং সেন্টারগুলো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। তাই তাদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স বাধ্যতামূলক।’

তিনি জানান, চকবাজার জোনকে একটি ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি জোনে রূপান্তর করা হবে। এজন্য যত্রতত্র পোস্টার-ব্যানার বন্ধ করতে হবে। এর বিকল্প হিসেবে নিয়ম মেনে ডিজিটাল বোর্ড বা এলইডি স্ক্রিনে বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে।

মেয়র ডা. শাহাদাত বলেন, ‘সিটি করপোরেশন একা কিছু করতে পারবে না। নাগরিকদের সহযোগিতা ছাড়া নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব নয়।’

তিনি সবাইকে আহ্বান জানান, দ্রুত ট্রেড লাইসেন্স নেওয়ার ও নবায়নের জন্য। একই সঙ্গে পরিবেশবান্ধব বিজ্ঞাপন প্রচারে ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন তিনি।

সভায় প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাব্বির রহমান সানি, চট্টগ্রাম কোচিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ সোহেলসহ নগরের বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।