Image description

ক্ষমতার অপব্যবহার ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে ১০ কাঠা জমি অধিগ্রহণের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইব্রাহিম মিয়া এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত এ বি এম খায়রুল হকের আইনজীবী মোনায়েম নবী শাহীনের করা জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।

বুধবার শুনানিতে ৮১ বছর বয়সী খায়রুল হক বলেন, “আমি কোটি টাকার মালিক হলে, আমার সব টাকা দুদক নিয়ে যেতে পারে। গতানুগতিক সবাই যেভাবে প্লটের জন্য আবেদন করে, আমিও সেভাবেই করেছি। বিগত ২২-২৩ বছর আগের কথা, কারোরই মনে থাকার কথা না। সে সময় আমি লিখেছিলাম, আমার টাকা নেই। অবসরে যাওয়ার পর টাকা দেব। টাকা না থাকা তো কোনো অপরাধ না। আমার এত টাকা ছিল না। সেই কারণে রাজউককে জানিয়েছিলাম, অবসরের পর টাকাটা দেব। অবসরের পর যে টাকা বাকি ছিল, সব টাকা আমি পরিশোধ করেছি। এরপর আমাকে রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়া হয়েছে। বিচারক হিসেবে আমার কাছে টাকা না থাকা কোনো অপরাধ না।

গত ৪ আগস্ট খায়রুল হক এবং রাজউকের সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। অভিযোগ আছে ঢাকার নায়েম রোডে প্রায় ১৮ কাঠা জমির উপর ছয় তলা বাসার মালিক খায়রুল হক, ঢাকা উন্নয়ন ট্রাস্ট (ভূমি বরাদ্দ) বিধিমালা, ১৯৬৯ এর বিধি ১৩ লঙ্ঘন করেছেন। রাজউকের কাছ থেকে প্লটটি নিশ্চিত করার জন্য তার বিরুদ্ধে মিথ্যা হলফনামা দাখিল এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। মামলার বিবরণী অনুসারে, খায়রুল হক রাজউকের কর্মকর্তাদের সরাসরি সহায়তায় অস্থায়ী বরাদ্দপত্রের শর্ত লঙ্ঘন করেছেন।

দুদক জানায়, যদিও নিয়মে সুদ মওকুফের সুযোগ নেই, তবে তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন। অবসর গ্রহণের পাঁচ বছর পরে কোনো সুদ ছাড়াই অর্থ পরিশোধ করেন। দুদকের অনুমান, ৪ লাখ ৭৪ হাজার টাকার সুদ ফাঁকি দেওয়া হয়েছে।

মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নুরুল হুদা, সদস্য (অর্থ ও সম্পত্তি) এ আই এম গোলাম কিবরিয়া, সদস্য মো. আবু বক্কর সিকদার, সদস্য (পরিকল্পনা) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার, সদস্য (এস্টেট) আখতার হোসেন ভূঁইয়া, সাবেক যুগ্ম সচিব ও সদস্য (উন্নয়ন) এম মাহবুবুল আলম; এবং সদস্য (প্রশাসন ও ভূমি) নাজমুল হাই। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ জমি বরাদ্দে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে। গত ২৪ জুলাই, পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একটি দল ঢাকার ধানমন্ডির একটি বাড়ি থেকে খায়রুলকে হককে আটক করে।

তিনি অসুস্থতা, হার্ট অ্যাটাক এবং ডজনখানেক রোগের কথা উল্লেখ করে আদালতের কাছে যথাযথ বিবেচনার আবেদন করেন। তবে আদালত তার জামিনের আবেদন নাকচ করে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন। দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, খায়রুল হক দেশের প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাজউকের ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন এবং সুদ পরিশোধ না করে বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করেছেন। মামলা অনুসারে, এতে সরকারের অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুনানির সময় খায়রুল হক জানান, তিনি অবসরের পর সব বকেয়া টাকা পরিশোধ করেছেন এবং কখনও সুবিধাভোগী হননি। এছাড়াও, তিনি রানা প্লাজা ধসের পর গঠিত আন্তর্জাতিক কমিশনে কাজ করার সময় বেতন নেননি। মামলার বাদী ছিলেন দুদকের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন। 

মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নুরুল হুদা, সদস্য (অর্থ ও সম্পত্তি) এ আই এম গোলাম কিবরিয়া, সদস্য মো. আবু বক্কর সিকদার, সদস্য (পরিকল্পনা) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার, সদস্য (এস্টেট) আখতার হোসেন ভূঁইয়া, সাবেক যুগ্ম সচিব ও সদস্য (উন্নয়ন) এম মাহবুবুল আলম; এবং সদস্য (প্রশাসন ও ভূমি) নাজমুল হাই। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ জমি বরাদ্দে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে। গত ২৪ জুলাই, পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একটি দল ঢাকার ধানমন্ডির একটি বাড়ি থেকে খায়রুলকে হককে আটক করে। পরে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কেরানীগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।