
ভারতবিরোধী অবস্থানের কারণেই প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানোর অভিযোগ করেছেন নেপালের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) জেন-জির বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন তিনি। এরপর গুঞ্জন ওঠে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন অলি। তবে তিনি নেপালেই অবস্থান করছেন এবং বর্তমানে সেনাবাহিনীর শিবপুরি ব্যারাকে রয়েছেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দলের মহাসচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে অলি দাবি করেন, ভারতকে চ্যালেঞ্জ জানানোয় তাকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে। তিনি লিখেছেন, “আমি যদি লিপুলেখ ইস্যুতে প্রশ্ন না তুলতাম এবং অযোধ্যা ও দেবতা রাম প্রসঙ্গে কথা না বলতাম, তবে হয়তো এখনও ক্ষমতায় থাকতাম। আমি ক্ষমতা হারিয়েছি কারণ আমি ভারতের দাবির বিরোধিতা করেছি।
ভারত-নেপাল সীমান্তে লিপুলেখ গিরিপথকে কেন্দ্র করে বহুদিনের বিরোধ বিদ্যমান। এর মূলে রয়েছে কালাপানি অঞ্চল। ১৮১৬ সালের সুগৌলি চুক্তি অনুযায়ী কালী নদীর উৎপত্তিস্থলকে ভিত্তি করে সীমান্ত নির্ধারিত হওয়ার কথা।
নেপালের দাবি, নদীর উৎস লিম্পিয়াধুড়া থেকে, যা লিপুলেখের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। সে অনুযায়ী কালাপানি ও লিপুলেখ তাদের ভূখণ্ড। তবে ভারতের দাবি নদীটি কালাপানি গ্রামের কাছে শুরু হয়েছে, ফলে অঞ্চলটি উত্তরাখণ্ড রাজ্যের অংশ।
অলির সরকার এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেয়। তিনি ঘোষণা দেন, “মহাকালী নদীর পূর্ব দিকের লিম্পিয়াধুড়া, লিপুলেখ এবং কালাপানি নেপালের অবিচ্ছেদ্য অংশ।” নেপাল ভারতকে ওই অঞ্চলে রাস্তা নির্মাণ বন্ধ করতে অনুরোধ করলেও ভারত জানায়, ১৯৫৪ সাল থেকে তারা এ পথ ব্যবহার করে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য করছে।
২০২০ সালের জুলাইয়ে অলি মন্তব্য করেছিলেন, দেবতা রাম ভারতের নয়, নেপালের বাসিন্দা ছিলেন। তার দাবি ছিল, রামের অযোধ্যা নেপালের পূর্ব বীরগঞ্জে অবস্থিত, আর ভারত একটি ভুয়া অযোধ্যা তৈরি করেছে।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ভারতে জন্ম নেওয়া রাম কীভাবে নেপালের জনকপুরের সীতাকে বিয়ে করেছিলেন। তার মতে, প্রাচীন যুগে দূরবর্তী অঞ্চলে বিয়ের প্রচলন ছিল না। তাই রাম আসলে নেপালি ছিলেন।
এই মন্তব্যের পর ভারতে তীব্র সমালোচনা শুরু হয় এবং দুই দেশের সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
[সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে]