Image description

'সীমান্ত মানে শুধু কাঁটাতারের বেড়া, বিচ্ছিন্নতার দেয়াল' এমন ধারণা ভেঙে গেল চুয়াডাঙ্গার সীমান্তে। মৃত্যুর পরও মাকে মেয়ের দেখাতে না পারা যেন হৃদয়বিদারক নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত গড়ে তুলল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। কাঁটাতারের ওপার থেকে হলেও, শোকাহত এক মেয়েকে মায়ের মরদেহ শেষবার দেখার সুযোগ করে দিল তারা।

জানা যায়, ভারতের নদিয়া জেলার হৃদয়পুর গ্রামের বাসিন্দা জাহানারা বেগম (৬৫) দীর্ঘ অসুস্থতার পর শুক্রবার বিকেলে মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি রেখে গেছেন তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। তাঁদের একজনের বিয়ে হয়ে গেছে বাংলাদেশে, মেহেরপুর জেলার আনন্দবাস গ্রামে। ভিসা জটিলতার কারণে বহুদিন ধরেই মায়ের কাছে যেতে পারেননি মেয়ে। হঠাৎ মৃত্যুসংবাদ শুনে বুকফাটা কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। শেষবার মায়ের মুখ দেখার আর কোনো উপায় ছিল না।

এমন সময়ে মেয়ের পরিবার যোগাযোগ করে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) সঙ্গে। খবর পেয়ে বিজিবি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে। মানবিক এই আবেদনে বিএসএফও সাড়া দেয়।এরপর সীমান্তের শূন্যরেখায় দাঁড়িয়ে কাঁটাতারের ওপার থেকে মায়ের মরদেহ দেখার সুযোগ পান মেয়ে। সঙ্গে ছিলেন তাঁর সন্তানরাও। মুহূর্তটি ছিল হৃদয়বিদারক, তবু সান্ত্বনা—মৃত্যুর পরও অন্তত দূর থেকে হলেও দেখা হলো মায়ের মুখখানি।

চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হাসান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ‘মানবিক আবেদনকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। সীমান্ত শুধু নিরাপত্তার জন্য নয়, মানুষের প্রতি ভালোবাসা আর সহমর্মিতারও জায়গা।‘