
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে দলীয় বিবেচনায় ব্যাংক লাইন্সেস দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ রেজিমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নৈতিক-অনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে যেনতেন প্রকারে জোড়াতালি দিয়ে ব্যাংকগুলো চালানো হলেও এখন আর যেন চলছে না। টাকা ছাপিয়ে কিছু ব্যাংক চালানোর চেষ্টা করা হলেও তীব্র তারল্য সংকটে দেশের প্রায় ১ ডজন ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নিয়েও সংকট কাটাতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ফলে রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে নিজেদের জমানো টাকা তুলতে গিয়ে পদে পদে গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা, কর্মকর্তাদের অসহযোগিতামূলক আচরণ এবং নানা অজুহাতে টাকা দিতে বিলম্ব করার মতো ঘটনা এখন নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরজমিন সংকটে থাকা কয়েকটি ব্যাংকের শাখা পরিদর্শনে গিয়ে গ্রাহকদের অতি প্রয়োজনেও টাকা না পাওয়ার বেশ কিছু চিত্র চোখে পড়েছে। এমনকি শুধু গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারছেনা তা নয়; পদ্মা ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংকসহ প্রায় অর্ধডজন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনও দিতে পারছে না। অথচ বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এসব ব্যাংককে বড় অঙ্কের অর্থসহায়তা দিয়েছে। যদিও এই অর্থসহায়তা কাজে আসেনি গভর্নরের অমূলক বক্তব্য ও মার্জার ইস্যু সামনে আসায়। কারণ এসব ব্যাংকগুলো আগে থেকেই অনিয়ম-দুর্নীতি ও অর্থপাচারে বিপর্যস্ত। এরপর নতুন করে যোগ হয়েছে বর্তমান অনুষঙ্গ। আর তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের আশ্বাস পেলেও গ্রাহকরা প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন ব্যাংকে গচ্ছিত আমানত উত্তোলনে। এমনকি পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে-এই সব ব্যাংকে সবাই টাকা তুলছেন কেউ টাকা রাখছেন না। যে কারণে দায় পড়েছে পুরো ব্যাংকখাতে। এই খাত নিয়ে গ্রাহকদের আস্থা দিন দিন তলানীতে পৌঁছেছে। অথচ সিটি, ব্র্যাকসহ একাধিক ব্যাংকে রয়েছে অতিরিক্ত তারল্য। যা প্রতিদিনই বাড়ছে।
‘অর্থনীতির হৃৎপিন্ড’ বা চালিকাশক্তি বলা হয়ে থাকে ব্যাংক খাতকে। এই খাতের ভালো কিংবা মন্দ অবস্থা দুটোরই প্রভাব দেশের অর্থনীতির ওপর পড়ে বলে উদ্বেগও থাকে। স্বৈরাচার হাসিনা সরকার ব্যাংকখাতকে সাইফুল আলম (এস আলম), সাইফুজ্জামান চৌধুরী, চৌধুরী নাফিস সরাফাত, নজরুল ইসলাম মজুমদার, সিকদার পরিবারসহ কয়েকজন মাফিয়ার হাতে তুলে দিয়েছিলেন। যার ফলস্বরূপ দেশের আর্থিকখাত অর্থপাচার, অনিয়ম-দুর্নীতির আতুরঘরে পরিণত হয়। এইচএসসি পাস করা ব্যক্তিকেও দেশের শীর্ষস্থানীয় ইসলামী ব্যাংকের ডিএমডি করা হয়। এভাবে ব্যাংকিংখাতকে ধ্বংসের শেষ কিনারায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্বৈরাচার হাসিনা ভারতে পলায়নের আগে আর্থিকখাতের উদ্বেগকে আরও ঘনীভূত করেছে ব্যাংকের একীভূতকরণ (মার্জার) ঘোষণা দিয়ে। ওই সময়ে শুধুমাত্র এক্সিম ব্যাংক-পদ্মা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক-বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) মার্জারের জন্য চুক্তি করলেও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর মার্জার বিলুপ্ত হয়ে যায়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও সম্প্রতি রেজুলেশন অর্ডিন্যান্স অ্যাক্ট-২০২৫ প্রণয়ন করেছে। এর মাধ্যমে যেকোনো ব্যাংক টেকওভার করতে পারবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংক অবসায়ন, মার্জারসহ যেকোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার একক ক্ষমতা নিয়ে এসেছে। এই অধ্যাদেশ ব্যাংকিং খাতকে সত্যিকার অর্থে পরিচ্ছন্নতার দিকে নিয়ে যাবে নাকি সরকারের নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়িয়ে দেবে, তা নির্ভর করবে আগামীতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এর ওপর। যদিও ইতোমধ্যে এক্সিম ব্যাংককে মার্জারে রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ব্যাংকখাতে।
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান পরিচালক মো. রেজাউল হকসহ নয়জন শেয়ারধারী মার্জার থেকে ব্যাংকটিকে বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও অর্থ বিভাগের সচিবের কাছে এ-সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন।
ব্যাংকিং সেক্টরের বর্তমান অবস্থার মূল্যায়ন করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন স্বীকার করেন, ব্যাংক খাতে কিছু সংস্কার হয়েছে; দুর্বল ব্যাংকগুলোর ফরেনসিক অডিট সম্পন্ন করা হয়েছে এবং পাচার অর্থ উদ্ধারে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের তহবিল সহায়তা সত্ত্বেও এখনও কিছু দুর্বল ব্যাংক আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারেনি।
সূত্র মতে, ব্যাংক খাতে বিদ্যমান অস্থিরতা দূর করতে বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েকটি দুর্বল ব্যাংককে একীভূত (মার্জার) করার উদ্যোগ নিয়েছে, যা আমানতকারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ইতোমধ্যে ওই সব ব্যাংক থেকে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে আমানত তুলে নিচ্ছেন গ্রাহকরা। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রাহকদের আশ্বস্ত করছে যে, তাদের আমানত নিরাপদ এবং সরকার এই খাতে বড় অঙ্কের আর্থিক সহায়তা দেবে, তবুও গ্রাহকরা টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে ভিড় করছে। এছাড়া মার্জার ইস্যুতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরি হারানোর আশঙ্কা করছেন। এই মার্জার প্রক্রিয়া ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা ফেরানোর একটি পদক্ষেপ হলেও, কেউ কেউ এটিকে দীর্ঘমেয়াদী সংকটের জন্ম দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মোট ১৫টি ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এদের মধ্যে কয়েকটি ব্যাংকের পরিষদ ভাঙ্গা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তার তৎপরতায়। এতে চরম তারল্য সংকটে পড়েছে ব্যাংকগুলো। এখনো সেই চাপ সামলে উঠতে পারেনি কিছু ব্যাংক। এসব দুর্বলতার মধ্যেই পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করতে কাজ চলছে প্রথম ধাপে।
গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনা দেশ ছাড়লে নতুন গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেন ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার কিছুদিন পরই বলেছেন, আমরা আশা করি না- কোনও ব্যাংক দেউলিয়া হোক। তবে কমপক্ষে ১০টা ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার মতো খারাপ অবস্থায় চলে গেছে। ব্যাংকগুলোর নাম না বললেও প্রায় এক ডজন ব্যাংক এরপর থেকে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে। গ্রাহকরা আমানত উত্তোলন করে নেয়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে, গ্রাহকদের পাঁচ হাজার টাকাও দিতে পারছে না। পরিস্থিতি আরো খারাপ হয় যখন ৫ ব্যাংকের একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়। ওই ব্যাংকগুলো থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলে ব্যাংকগুলো। এখন ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তারা বেতন পর্যন্ত তুলতে পারছেন না।
আগের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার নিয়ম না মেনে ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়ায় হাত দিয়েছিলেন। পাশাপাশি ইচ্ছেমাফিক ব্যাংক নির্ধারণ করায় ওই সময়ে ব্যাংকগুলো বিপাকে পড়ে। একইভাবে বর্তমান গভর্নরও দায়িত্ব নিয়ে ব্যাংকগুলো নিয়ে অমূলক বক্তব্য এবং পরবর্তীতে যে ব্যাংক মার্জারে বা একীভূতকরণে ইচ্ছুক নয় তাদেরকেও বাধ্য করছেন। যার ফলাফল আবারও বিপাকে ব্যাংকগুলো। প্রথম ধাপে পাঁচটি ইসলামী ব্যাংককে একটি নাম নির্ধারণ করা হবে। তবে আইনি খসড়া প্রস্তুত হলেও, নাম চূড়ান্ত করতে পারেনি নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে নতুন ব্রিজ ব্যাংকের কার্যক্রম চলবে দুই বছর। যাতে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দিবে সরকার। প্রথম ধাপে একীভূত করা হবে শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংক। ধারণা করা হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে দরকার হতে পারে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৫ হাজার কোটি টাকা সরকারকে মূলধন হিসেবে দিতে হবে, আর বাকি ১০ হাজার কোটি আসবে আমানত বিমা ট্রাস্ট ফান্ড থেকে ঋণ আকারে। তবে এজন্য সংশোধন করতে হবে বিদ্যমান আইন, কারণ বর্তমানে ওই তহবিল কেবল ট্রেজারি বিল ও বন্ডেই বিনিয়োগ করতে পারে। যদিও এসব চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মার্জার নিয়ে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক না হলেও ইতোমধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারা মার্জারে যেতে রাজি হয়েছে। যদিও প্রথমদিকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান মার্জারের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
গত এক বছরে এসব ব্যাংকের আমানত ধারাবাহিকভাবে কমেছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমানত ছিল ১ লাখ ৫৮ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা, যা মার্চে নেমে আসে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৯৯ কোটিতে। চলতি বছরের মে মাসে তা আরও কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ৩৬ হাজার ৫৪৬ কোটিতে। বিপরীতে ঋণস্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৪১৩ কোটিতে। এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়-পাঁচ ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা, যা মোট ঋণের প্রায় ৭৭ শতাংশ। এর ফলে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৫০১ কোটি টাকায়। খেলাপি ঋণের অনুপাতে সবচেয়ে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে ইউনিয়ন ব্যাংক (৯৮ শতাংশ)। এর পরেই ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক (৯৬ শতাংশ), গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক (৯৫ শতাংশ), সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (৬২ শতাংশ) এবং এক্সিম ব্যাংক (৪৮ শতাংশ)। বিশেষ ধার হিসেবে আমানত ফেরাতে এক্সিম ব্যাংক নিয়েছে সর্বোচ্চ সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী নিয়েছে ৭ হাজার ৫০ কোটি, সোশ্যাল ইসলামী ৬ হাজার ৬৭৫ কোটি, গ্লোবাল ইসলামী ২ হাজার ২৯৫ কোটি এবং ইউনিয়ন ব্যাংক নিয়েছে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এছাড়া নতুন করে এবি, ন্যাশনাল ও আইএফআইসি ব্যাংককে একীভূত করা হবে বলেও নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে এই ব্যাংকগুলোরও অডিট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অবশ্য এই তিনটি ব্যাংকই নয়; আর ১ ডজন ব্যাংকের অডিট কার্যক্রমও প্রক্রিয়াধীন বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে প্রায় ১ ডজন ব্যাংকের করুণ অবস্থা চলছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসির আর্থিক অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে, এখন তারা সরাসরি আমানতকারীদের টাকা থেকে কর্মীদের বেতন দিচ্ছে। এর থেকেও ভয়াবহ অবস্থা পদ্মা ব্যাংকের। কারণ, এই ব্যাংকটির প্রতি কারোরই নজর নেই বললেই চলে। এছাড়া ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংকের গ্রাহকরা তাদের আমানত তুলতে পারছেন না। এদের একাধিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়াই দায় হয়ে গেছে।
যদিও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে ব্যাংকখাতে অস্থিরতা থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে উন্নতিও এসেছে। ২০২৪ সালের ২৮ আগস্ট সরকার আর্থিক খাতের উন্নয়নে একটি শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করে। এর কিছুদিন পর, ১১ সেপ্টেম্বর ব্যাংকখাত সংস্কারের লক্ষ্যে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এই উদ্যোগগুলোর মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশের আর্থিক খাতের দুর্বলতা শনাক্ত করে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের পথ প্রস্তুত করা। ডলারের বিনিময় হার ১২৮ টাকা থেকে ১২০-১২২ টাকায় নেমে এসেছে।
রিজার্ভে দৃঢ় স্থিতিশীলতা
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, ব্যাংকিং খাতে সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ ও সংস্কার প্রয়োজন ছিল, সেখানে অগ্রগতি স্বল্পমাত্রায় সীমাবদ্ধ থেকেছে। ব্যাংকিং খাতে শুরু করা সংস্কারগুলো প্রশাসনিক রদবদল ও নীতিগত অস্থিরতার কারণে দেরিতে এগিয়েছে। অপ্রদর্শিত খেলাপি ঋণের সঠিক হিসাব প্রকাশের জন্য নতুন রিপোর্টিং ব্যবস্থা চালু করা হলেও দুর্বল ব্যাংকগুলো পুনর্গঠনের বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, টাকার বিনিময় হার দীর্ঘদিন স্থিতিশীল থাকলেও ডলার কেনার কারণে বাজারে অতিরিক্ত টাকা সরবরাহ হয়ে টাকার মানে চাপ পড়ে এবং মূল্যস্ফীতি কমানোর চেষ্টা ব্যাহত হয়।