
সংঘর্ষের ঘটনায় ধারণ করা বিভিন্ন ভিডিও একের পর এক প্রকাশ্যে আসছে। এক ভিডিওতে দেখা যায়, ধানক্ষেতে এক শিক্ষার্থীকে ঘিরে কয়েকজন স্থানীয় লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করছেন। একই দৃশ্যে একজন স্থানীয় রামদা হাতে নিয়ে তেড়ে আসেন। আহত শিক্ষার্থী শেষ পর্যন্ত দৌড়ে প্রাণে রক্ষা পান।
আরও এক ভিডিওতে সাদা শার্ট পরা শিক্ষার্থীকে একতলা ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয়রা লাথি মেরে এবং ইট দিয়ে ওই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালাচ্ছেন। এ ছাড়া ধানক্ষেতে তাড়া করে একাধিক শিক্ষার্থীকে পেটানোর দৃশ্য ধরা পড়ে। তবে সব শিক্ষার্থীই বিশ্ববিদ্যালয়ের কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ রকম অন্তত ছয়টি ভিডিও রোববার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক শিক্ষার্থীকে মাটিতে ফেলে পেটাচ্ছেন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। এ সময় তার মাথা ফেটে রক্ত বের হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজনের হাতে রামদা ছিল। তবে এ শিক্ষার্থীকে কোপানো হয়েছে কি না, এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। একপর্যায়ে শিক্ষার্থী কাকুতিমিনতি করলে কয়েকজন গ্রামবাসী তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন। পরে ওই শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের দিকে চলে যান। ওই শিক্ষার্থী কোন বিভাগের, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আরেকটি ভিডিওতে সাদা শার্ট পরা এক শিক্ষার্থীকে একতলা ছাদ থেকে ফেলে দিতে দেখা গেছে। এই ভিডিও পাশের একটি ভবন থেকে ধারণ করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় এক বাসিন্দা লাথি দেওয়ার পরই ওই শিক্ষার্থী ছাদ থেকে নিচে পড়ে যান। এর পরও ওই শিক্ষার্থীকে উদ্দেশ্য করে ছাদ থেকে ইটের টুকরা ছোড়েন কয়েকজন। ওই শিক্ষার্থীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কয়েকটি ভিডিওতে শিক্ষার্থীদেরও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়াতে দেখা গেছে।
এদিকে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর গতকাল সোমবার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করেছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ, র্যাব, সেনাসহ যৌথ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা।
সকাল থেকে ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায় জনমনে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ, রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। স্থানীয়দের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। ভাড়া বাসায় থাকা অনেক শিক্ষার্থী আতঙ্কে হলে কিংবা সহপাঠীর বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন। যৌথ বাহিনীকে জিরো পয়েন্ট, শহীদ মিনার ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে টহল দিতে দেখা যায়।
গত শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট এলাকায় এক ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। রাত সোয়া ১২টা থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, প্রক্টর ও শিক্ষকরা দুপক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল এবং লাঠিপেটার ঘটনায় জোবরা গ্রামসহ ক্যাম্পাস এলাকা রণক্ষেত্রের মতো হয়ে ওঠে। এ ঘটনায় উপ-উপাচার্য, প্রক্টর, শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ প্রায় দুই শতাধিক আহত হন। ঘটনার পর হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন ক্যাম্পাসে ১৪৪ ধারা জারি করে।
অনুষ্ঠিত হলো নিয়োগ পরীক্ষা: থমথমে অবস্থার মধ্যেই বাংলা বিভাগের পদোন্নতি বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে দুপুরের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয়দের সঙ্গে সভা থাকায় বিকেলের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের প্রভাষক নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করা হয়। এ ছাড়া সংঘর্ষের কারণে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত ছিল। আজ মঙ্গলবার থেকে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির শতভাগ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিত করে চলমান পরীক্ষাগুলো নিতে পারবে বলে জানিয়েছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর।
দুই শিক্ষার্থী লাইফ সাপোর্টে: সংঘর্ষে আহত অন্তত ২০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৩ জন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ইমতিয়াজ আহমেদ ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের আব্দুল্লাহ আল মামুন নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে আছেন। আব্দুল্লাহর ছয় ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও ইমতিয়াজের অবস্থা আশঙ্কাজনক। একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আরও দুই শিক্ষার্থী।
পার্কভিউ হাসপাতালের জিএম তালুকদার জিয়াউর রহমান শরীফ কালবেলাকে বলেন, ‘আমাদের এখানে এখন চারজন চিকিৎসাধীন আছেন। দুজন লাইফ সাপোর্টে আর দুজন সাধারণ বেডে। লাইফ সাপোর্টে থাকা দুজনের অপারেশন হয়েছে। এদের মধ্যে আব্দুল্লাহ আল মামুন নামের এক শিক্ষার্থীর প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে অপারেশন হয়েছে। বর্তমানে তার সেন্স কাজ করছে। তার লাইফ সাপোর্ট আজ তুলে নিতে চেষ্টা করা হবে। আর ইমতিয়াজের লাইফ সাপোর্ট আজ খোলা যাবে না। তার অবস্থার তেমন উন্নতি নেই।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে এখন আটজন চিকিৎসাধীন আছেন। এদের মধ্যে ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে দুজন, ২৮ নম্বর ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন করে চিকিৎসাধীন। চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, ‘এখন আমাদের এখানে আটজন চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক কেউ নেই।’
অন্যদিকে গুরুতর আহত ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার সহপাঠীরা।
স্থানীয়দের সাত দফা দাবি: শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের পর স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে সাত দফা দাবি জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, বারবার অশান্তি ও সহিংসতার কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে, বাড়ছে নিরাপত্তাহীনতা। গতকাল জোবরা সমাজ সংস্কার ও উন্নয়ন পরিষদ (জোসউপ) নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে এই দাবি জানানো হয়। তাদের দাবিগুলো হলো— এলাকায় মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; সংঘর্ষে যারা উসকানি দিয়েছে, তাদের আজীবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা; সংঘর্ষে আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া; ভবিষ্যতে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মধ্যে সমস্যা হলে প্রশাসন ও এলাকার জনপ্রতিনিধিদের আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা; ভাড়া বাসায় বসবাসকারী শিক্ষার্থীদের শালীন আচরণ বজায় রাখা; ভাড়া বাসায় মাদকসেবন ও নারী-পুরুষের অনৈতিক অবস্থান, গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চস্বরে চিৎকার বা গানবাজনা বন্ধে কঠোর নজরদারি; ভবিষ্যতে এ ধরনের সংঘর্ষের পুনরাবৃত্তি রোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত তদারকি জোরদার করা।
জোবরা নবযুগ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পারভেজ উদ্দিন ইকবাল কালবেলাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তিন-চারটা পাড়ায় এক সঙ্গে ভাঙচুর চালায়। শনিবার রাতে সামান্য পরিমাণে ভাঙচুর করা হয়। তবে রোববার দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের হামলায় আমাদের ১৫ থেকে ২০ জন আহত হয়েছেন। তবে আহতের সংখ্যা আরও বেশি। অনেকে মামলা-মোকদ্দমার ভয়ে বলছেন না। পুরুষ অনেকেই যৌথ বাহিনীর অভিযানের ভয়ে বাড়ির বাইরে অবস্থান করছেন।’
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ-মানববন্ধন: শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে জয় বাংলা ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন ও মিছিল করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। তারা আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন, পূর্ণাঙ্গ আবাসন ব্যবস্থা এবং বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে পর্যাপ্ত অ্যাম্বুলেন্সসহ আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের দাবি জানায়।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অন্বেষ চাকমা অভিযোগ করেন, ‘প্রশাসন সময়মতো ব্যবস্থা নিলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এড়ানো যেত।’ ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ঋজু লক্ষ্মী অবরোধ বলেন, ‘প্রশাসন ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারে না। এখনো আবাসন ও চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত হয়নি।’
শিবিরের চার দফা দাবি: চমেক হাসপাতাল প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন করে চবি শাখা ছাত্রশিবির চার দফা দাবি জানিয়েছে। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে—আহতদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা; হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও এলাকা অস্ত্রমুক্ত করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল রাখা।
উপাচার্যের বক্তব্যে ক্ষোভ: গতকাল বিকেলে প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপাচার্যের বক্তব্যের প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি ও মিছিল করেন নারী শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, উপাচার্য আহত শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম দেখিয়েছেন। তারা স্লোগান দিয়ে উপাচার্যের পদক্ষেপের নিন্দা জানান।
১৪৪ ধারা বহাল: রোববার দুপুরে জারি করা ১৪৪ ধারার মেয়াদ ২৪ ঘণ্টা বাড়িয়েছে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন। আজ রাত ১২টা পর্যন্ত এ ধারা বলবৎ থাকবে। গতকাল বিকেলে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চবি প্রশাসনের জরুরি সভা: সংঘর্ষের ঘটনায় করণীয় নির্ধারণে গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জরুরি সভা করেছে। উপাচার্য, দুই উপ-উপাচার্য, সব ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত হয়, সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় বহন করবে। এ বিষয়ে পাঁচ সদস্যের বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সরকারের কাছে আবেদন করবে, ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় মডেল থানা স্থাপন এবং রেলক্রসিং এলাকায় পুলিশ বক্স স্থাপনের জন্য। পাশাপাশি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স প্রত্যাহার করা হবে না। এ ছাড়া, জোবরা এলাকার বাড়িওয়ালাদের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দীন সভা শেষে কালবেলাকে বলেন, ‘আমরা একটি জরুরি সভা করেছি। সভায় বেশকিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।’
আহতদের দেখতে হাসপাতালে শাহজাহান চৌধুরী: আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরীর সাবেক আমির ও চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী। গতকাল দুপুরে চমেক হাসপাতালে গিয়ে আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন তিনি এবং তাদের প্রতি সমবেদনা জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি এবং চট্টগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ, ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম রনি, ছাত্রশিবির চবি শাখার সভাপতি মুহাম্মদ আলী, চকবাজার থানা জামায়াতের আমির আহমদ খালেদুল আনোয়ার, নায়েবে আমির আব্দুল হান্নান, সেক্রেটারি সাদুর রশিদ চৌধুরী, ডা. ইরফান চৌধুরী, জামায়াত নেতা মোহাম্মদ ইলিয়াছ প্রমুখ।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়: চবি ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) চলমান উত্তপ্ত পরিস্থিতি ও সংঘাতের ঘটনায় সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এবং দ্রুত সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা খালিদ মাহমুদের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ যারা আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এই কমিটিতে স্থানীয় প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষার্থী, স্থানীয় জনগণ ও জনপ্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব পাঠানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।