
কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন হঠাৎ করেই বগিগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রায় এক কিলোমিটার পথ এগিয়ে যায়। সোমবার রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কচুয়াই এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ইঞ্জিনের সঙ্গে যুক্ত ১৮টি বগি বিচ্ছিন্ন হওয়ার কিছুক্ষণ পর চালক বুঝতে পারে পেছনে কোনো বগি নেই।
হঠাৎ ট্রেন থেমে যাওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাতের অন্ধকারে ট্রেন স্থির হয়ে পড়ায় অনেকেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছিলেন। পরে রেলকর্মীরা এসে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করলে যাত্রীরা জানতে পারেন, ইঞ্জিনের হুক ভেঙে যাওয়ায় বগিগুলো পেছনে রয়ে গেছে।
এ ঘটনায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। একজন যাত্রী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, “হঠাৎ ট্রেন থেমে গেল, আবার আলোও ছিল না। অনেকেই ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। পরে রেলকর্মীরা এসে জানালেন, ইঞ্জিন চলে গেছে।”
আরেক যাত্রী বলেন, “ঢাকায় জরুরি কাজে যাচ্ছিলাম। এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা দেরি হয়ে গেল। রেল কর্তৃপক্ষের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।”
রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, ইঞ্জিনের হুক ছিঁড়ে যাওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। মেরামত ও নতুন ইঞ্জিন পাঠানোর পর রাত ১২টার দিকে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে পুনরায় যাত্রা শুরু করে।
রেলওয়ের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী মো. সাজিদ হাসান নির্ঝর বলেন, “ইঞ্জিনের সঙ্গে বগির সংযোগকারী অংশটিকে ‘হুক’ বা ‘কানেক্টর’ বলা হয়। এটি ভেঙে যাওয়ায় বগিগুলো আলাদা হয়ে যায়। নতুন ইঞ্জিন এনে বগিগুলো যুক্ত করে ট্রেনটি পুনরায় চালু করা হয়েছে।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হুক বা কানেক্টর হলো ট্রেনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি ভেঙে যাওয়া রেলের রক্ষণাবেক্ষণে বড় ধরনের দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রেল কর্মকর্তা জানান, এমন ঘটনা খুবই বিরল। তিনি বলেন, “এই ধরনের ত্রুটি বড় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এর পেছনে রক্ষণাবেক্ষণ ঘাটতি আছে কি না—তা খতিয়ে দেখা উচিত।”