Image description

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে। লক্ষ্মীপুর জেলায়ও ভোটের মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন মতবিনিময়, গণসংযোগ, সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠানে। দল ও মাঠ গোছাচ্ছে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এই জেলায় আছে চারটি সংসদীয় আসন।

সব আসনেই বড় দল বিএনপি থেকে আছেন একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এরই মধ্যে সব কটি আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে।

মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরালক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) : এ আসনে দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হারুনুর রশিদ হারুন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ইয়াছিন আলী, সাবেক এলজিইডি প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত জিয়াউল হক জিয়ার ছেলে মাশফিকুল হক জয়। এখানে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী দলের উপজেলা আমির নাজমুল হাসান পাটওয়ারী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী দলের জেলা কমিটির সহসভাপতি জাকির হোসেন পাটওয়ারী।

 
ভোটযুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন জাতীয় পার্টির জেলা কমিটির সভাপতি মাহমুদুর রহমান মাহমুদ। জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলমও ভোটযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি সাংগঠনিক ও সামাজিক কার্যক্রমে এলাকায় সময় দিচ্ছেন। মাহবুব আলম বলেন, আমরা চাচ্ছি আগে প্রতিষ্ঠানিক সংস্কার, বিচার ও জুলাই সনদ।
 
তারপর হবে নির্বাচনের কার্যক্রম। আপাতত আমরা লক্ষ্মীপুরসহ সারা দেশে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। প্রসঙ্গত, মাহবুব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাই। তাঁর বাবা সম্প্রতি রামগঞ্জের ইছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।

লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও সদরের একাংশ) : আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক হারুন অর রশিদ হিরো।

এখানে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী দলের জেলা আমির এস ইউ এম রুহুল আমিন ভূঁইয়া। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে নোয়াখালী জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মিঠু মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এবারও দল নির্বাচনে অংশ নিলে তিনি প্রার্থী হতে চান বলে প্রচার রয়েছে। এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী দলের উপজেলা কমিটির সভাপতি হেলাল উদ্দিন।

লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) : এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী দুইবারের সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। তিনি দলের যুগ্ম মহাসচিব এবং জেলা বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। এখানে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি জেনারেল রেজাউল করিম। এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী দলের জেলা কমিটির সভাপতি অনারারি ক্যাপ্টেন (অব.) মুহাম্মদ ইব্রাহিম, গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী দলের জেলা কমিটির সভাপতি নুর মোহম্মদ। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিলে দলের জেলা কমিটির সহসভাপতি রাকিব হোসেনও মনোনয়ন চাইবেন।

লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি ও কমলনগর) : এই আসনে কয়েক মাস ধরে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সাংগঠনিক কার্যক্রম বাড়িয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এ আসনে এবার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব প্রার্থী হতে পারেন। জোটগত কারণে বিএনপি আসনটি জেএসডিকে ছাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে আ স ম আবদুর রব বিএনপি জোটের প্রার্থী হবেন। এ আসনে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহশিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম আশরাফ উদ্দিন নিজানও মনোনয়নপ্রত্যাশী। বিএনপি থেকে প্রার্থী হতে চান কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি প্রয়াত শফিউল বারী বাবুর স্ত্রী বীথিকা বিনতে হোসাইন বীথি।  তিনি তাঁর কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে তৎপরতা চালাচ্ছেন।  এ আসন থেকে তিনি আগে দুবার এমপি হয়েছিলেন। কর্মী-সমর্থকরা বলছেন, আশরাফ উদ্দিন নিজান ভোটের মাঠে জেএসডিকে ছাড় দিতে রাজি নন। বিএনপি জোট থেকে জেএসডিকে আসনটি ছেড়ে দিলেও নিজাম ভোটের মাঠে থাকবেন বলে নেতাকর্মীদের আগাম বার্তা দিচ্ছেন।

জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী দলের জেলা কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল এ আর হাফিজ উল্যা। এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী দলের উপদেষ্টা খালেদ সাইফুল্লাহ। গণঅধিকার পরিষদের ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রেদোয়ান উল্যা খানও এ আসনে লড়তে চান।