
নাটোরের বেসরকারি জনসেবা হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. আমিনুল ইসলামের (৬৫) গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের মাদ্রাসা মোড় এলাকার জনসেবা হাসপাতালের নিজ কক্ষ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত আমিনুল ইসলাম জেলার জিয়া পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি, ড্যাব, বিএমএ জেলা সভাপতি এবং বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া নাটোরের সাবেক সিভিল সার্জন ছিলেন। এ ঘটনায় সোমবার রাত ৮টার দিকে নিহতের স্ত্রী তাসমিন সুলতানা নাটোর সদর থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন।
নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আমজাদ হোসাইন বলেন, ‘খবর পেয়ে জেলা পুলিশ, ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- এটা হত্যাকাণ্ড। পুলিশ প্রযুক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
হাসপাতালের স্টাফ ও পুলিশের ধারণা, রবিবার রাতে আমিনুল ইসলাম ও দুজন নার্স হাসপাতালে দায়িত্বে ছিলেন। ওই রাতে কাজ শেষে হাসপাতালে নিজ কক্ষে ঘুমাতে যান আমিনুল। সোমবার সকালে আরও দুজন হাসপাতালের স্টাফ ডিউটি শুরু করেন। সিজারিয়ান এক রোগীর ছাড়পত্রের জন্য ওই স্টাফরা তাকে ডাকতে গেলে ভেতর থেকে কোনও সাড়া পাচ্ছিলেন না। দুপুরে তারা কক্ষের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে আমিনুল ইসলামের গলা কাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়। সোমবার ভোররাত থেকে সকাল ৮টার মধ্যে হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকে পারে। তবে কী কারণে কে বা কারা হত্যা করেছে, সে কারণ জানা যায়নি।
হাসপাতালের স্টাফ নার্স ফাহিমা আক্তার জানান, দুপুর ২টার পর এক রোগীর অপারেশন ছিল। কিন্তু আমিনুল ইসলাম আসতে দেরি করায় স্টাফরা তাকে ডাকতে কক্ষে যান। ভেতর থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে কক্ষের দরজা ভেঙে ভেতরে মেঝেতে গলা কাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।
বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ও ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের আব্দুল আওয়াল রাজা এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের খুুঁজে বের করে গ্রেফতারের দাবিও জানান তিনি।
কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, ‘এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। দ্রুত তদন্ত করে এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতে খায়ের আলম জানান, ‘ডা. আমিনুল ইসলামের গলায় ও তার গোপনাঙ্গে আঘাত রয়েছে। এ হত্যার কারণ অনুসন্ধানে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক কিংবা রাজনৈতিক কোনও বিরোধ অথবা ব্যক্তিগত কোনও ইস্যু আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তা ছাড়া ঘটনার সময় যারা কর্মরত ছিল তাদের প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’