Image description
 

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বড় গোপালদি গ্রামে নিখোঁজের তিন দিন পর সোমবার চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী শিশু তামিমের (১১) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত মূল সন্দেহভাজন বাড়ির কাজের লোক তুহিন শেখকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

 

সোমবার বিকালে তামিমের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। শামীম তালুকদারের ছেলে তামিম ১৫ আগস্ট বিকাল ৫টার পর নিখোঁজ হয়।

 

তামিম গোপালদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। বাড়ির কাজের লোক পরিকল্পিতভাবে শিশু তামিমকে অপহরণ করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

 

মধুখালী থানা পুলিশের একটি চৌকস দল তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় স্বল্প সময়ের মধ্যে অপহরণকারী তুহিনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তার দেওয়া ভাষ্যমতে, স্কুল শিক্ষার্থী তামিমের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তামিমকে হত্যা করে তাদেরই বাড়ির কাজের লোক তুহিন।

 

নিহতের পরিবার জানায়, গত শুক্রবার বিকালে তামিম ঘুরতে বের হয়। এরপর সে আর বাড়ি ফিরেনি। সন্ধ্যার পর পরিবারের পক্ষ থেকে তামিমের খোঁজ শুরু করলে একপর্যায়ে বাড়ির কাজের লোক তুহিন শেখের মোবাইল নম্বরে ফোন করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরিবারটিটাকা দিতে দেরি হওয়ায় শেষপর্যন্ত জীবন রক্ষা হয়নি শিশু তামিমের

 

মধুখালী থানা পুলিশ জানায়, পরিবারের পক্ষ থেকে নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বিশেষ অভিযান চালানো হয়। সোমবার (১৮ আগস্ট) রাতে মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলার বড়গাতি গ্রামের বাসিন্দা তুহিন শেখকে আটক করা হয়।

 

তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, একই উপজেলার কোরকদী ইউনিয়নের বাঁশপুর গ্রামের একটি জমির আইলে আবর্জনার নিচে চাপা অবস্থায় তামিমের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতার অভিযোগে আরও একজনকে আটক করে পুলিশ।

 

এলাকাবাসী জানান, ঘাতক তুহিন এক বছর আগে দিনমজুর হিসেবে নিহত তামিমদের বাড়িতে কাজ করতে এসেছিল। এই সূত্র ধরে এলাকায় পরিচিতি গড়ে তোলে। ১৫ দিন আগে আবারও এ গ্রামে এসে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে তোলে এবং ঘটনার দিন তামিমকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়।

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, পরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হলে সমাজে অপরাধ আরও বাড়বে। শোকাহত পরিবারটি ঘাতকের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

 

মধুখালী থানার ওসি এসএম নুরুজ্জামান বলেন, শিশুকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনা পরিকল্পিত। মুক্তিপণের দাবিতেই শিশুটিকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে। তদন্ত করে ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।থানা পুলিশ গ্রেফতার তুহিন শেখসহ দুইজনকে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার ফরিদপুর আদালতে পাঠিয়েছে।