
“কারাগারে থেকে ভাবতাম, আমি ফরেনসিক আর্ট যেহেতু করতাম, তাদের ছবি আঁকব। আমি বের হওয়ার পরই আঁকছি। তিনজনের কথা আমার মনে আছে বিশেষ করে,” বলেন কিশোর।
কারাগার থেকে বেরিয়ে তাকে ‘নির্যাতন’ করা ব্যক্তিদের যেসব স্কেচ এঁকেছিলেন সেগুলোর একটিতে ডিজিএফএআইয়ের সাবেক কর্মকর্তা আফিজুর রহমানের ‘বহু মিল’ খুঁজে পাওয়ার কথা বলছেন কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোর।
সোমবার এক ফেইসবুক পোস্টে এমন বক্তব্য দিয়ে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর আফিজকে ‘এই মুহূর্তে’ গ্রেপ্তারের দাবিও জানান তিনি।
তবে কার্টুনিস্ট কিশোরের অভিযোগ নাকচ করে সম্প্রতি ‘দৈনিক জনকণ্ঠ দখলের নেতৃত্ব’ দেওয়ার অভিযোগে নাম আসা আফিজ বলেন, সামরিক গোয়েন্দা সংস্থাটির ‘পাবলিক রিলেশন্স ও মিডিয়া উইংয়ের’ দায়িত্বে ছিলেন তিনি। কোনো অপারেশন বা অপরাধের সঙ্গে ‘জড়িত’ ছিলেন না।
‘মেজর আফিজ আমি তোমাকে চিনে ফেলেছি’ শিরোনামে দেওয়া এ ফেইসবুক পোস্টের সঙ্গে বর্তমানে সুইডেন প্রবাসী কার্টুনিস্ট কিশোর নিজের আঁকা স্কেচের ছবি, আফিজের একটি ছবি এবং ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আফিজের ছবি সংযুক্ত করে সাংবাদিক সাইদুর রহমানের ফেইসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট যুক্ত করেছেন।
কার্টুনিস্ট কিশোর লেখেন, “আমি এই মুহূর্তে আফিজের গ্রেফতার দাবি করছি। সার্ভিসে ধান্ধাবাজ, অসৎ বলে পরিচিত এই আফিজকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বহু গুম ও নির্যাতনের পেছনের ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলে মনে করি।”
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ২০২০ সালের ৫ মে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর এবং ব্যবসায়ী-লেখক মুশতাক আহমেদকে ‘সরকারবিরোধী প্রচার ও গুজব ছড়ানোর’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করার তথ্য দেয় র্যাব।
পরে ওই দুজনসহ ১১ জনকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওই মামলা দায়ের করেন র্যাব-৩ এর ডিএডি আবু বকর সিদ্দিক।
ওই মামলায় কারাগারে থাকাবস্থায় মুশতাক আহমেদ ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মারা যান, যা নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা দেয়। পরে হাই কোর্ট থেকে ছয় মাসের জামিনে কিশোর ২০২১ সালের ৪ মার্চ কারাগার থেকে ছাড়া পান।
জামিনে মুক্তির পর ওই বছরের ১৩ মার্চ কার্টুনিস্ট কিশোরের ডান কানে ‘টিমপ্যানিক মেমব্রেন রিপেয়ার মিরিংগোপ্লাসটি’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি যন্ত্র বসানো হয়।
পরে জুনে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থানায় গ্রেপ্তার দেখানোর আগে ‘অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে নির্যাতন’ চালানোর অভিযোগে মামলা করেন কার্টুনিস্ট কিশোর। ‘হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ’ আইনে নাম-পরিচয় না জানা ব্যক্তিদের আসামি করেন তিনি।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়, ২০২০ সালের ৫ মে রমনা থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। কিন্তু তারও তিন দিন আগে ২ মে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে সাধারণ পোশাকের ১৬-১৭ জন লোক কাকরাইলের বাসা থেকে তাকে ‘জোর করে হাতকড়া ও মুখে মুখোশ পরিয়ে অজ্ঞাত এক নির্জন জায়গায়’ নিয়ে যায়।
ওই তিন দিন তাকে সেখানে ‘নির্যাতন’ করা হয় অভিযোগ করে তার বিস্তারিত বিবরণও মামলার আর্জিতে তুলে ধরেছেন কিশোর।
মামলার আর্জিতে বলা হয়, ওই ঘরে প্রজেক্টরের মাধ্যমে কিশোরের নিজের আঁকা বিভিন্ন কাটুর্ন একের পর এক দেখিয়ে সেগুলোর মমার্থ জানতে চাওয়া হয়। করোনাভাইরাস নিয়ে আঁকা কিছু কার্টুন দেখিয়ে জানতে চাওয়া হয়, তিনি সেগুলো কেন এঁকেছেন; কার্টুনের চরিত্রগুলো কারা।
কিশোর বলেছেন, এক পর্যায়ে ‘প্রচণ্ড জোরে থাপ্পর মারা হয়’ তার কানে। তাতে কিছু সময়ের জন্য বোধশক্তিহীন হয়ে পড়েন। তবে তিনি বুঝতে পারছিলেন যে কান দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। পরে ‘স্টিলের পাত বসানো লাঠি দিয়ে’ তাকে ‘পেটানো’ হয়। যন্ত্রণা ও ব্যথায় তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন।
সেখানে ২ থেকে ৪ মে এভাবে তার ওপর ‘শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার’ চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন কিশোর।
এজাহারে তার অভিযোগ, পরে তিনি নিজেকে র্যাব কার্যালয়ে দেখতে পান। সেখানে তার সঙ্গে লেখক মুশতাক আহমেদের দেখা হয়। মুশতাকের সঙ্গে আলাপ করে জানতে পারেন, মুশতাককে ‘বৈদ্যুতিক শক’ দেওয়া হয়ছে।
কারাগার থেকে বেরিয়ে আঁকা স্কেচে তিনি সেই সময়কার ‘অত্যাচারকারীদের’ স্কেচ আঁকেন।
ওই নির্যাতনের সঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত মেজর আফিজের জড়িত থাকার বিষয় ধরা পড়ার কথা তুলে ধরে সোমবারের পোস্টে কিশোর লেখেন, “কদিন আগে ফেসবুকের এক বন্ধু আমাকে ব্লগার ও লেখক, সাংবাদিক আরিফ জেবতিক এর একটি পোস্ট নজরে আনে। আরিফ, জনকণ্ঠ ভবন দখলে মুক্তিযুদ্ধপন্থিদের সরিয়ে জামায়াতপন্থি সাংবাদিকদের নেতৃত্ব দেয়া মেজর আফিজকে নিয়ে লেখা সেই পোস্টে আমাদের অর্থাৎ আমি এবং মুশতাক ভাইকে গুম, নির্যাতন ও অত্যাচারের সাথে এই মেজর আফিজের জড়িত থাকা নিয়ে সন্দেহের কথা জানায়।
“আমি আরিফের ঐ পোস্টে জামিনে মুক্ত হবার পর আঁকা আমার স্মৃতিতে অত্যাচারকারী দুজনের দুটি ফরেনসিক আর্ট যোগ করে দেই। এবং একটি স্কেচের সাথে আফিজের বহুমিল পাই।”
এরপর আফিজের বিষয়ে খোঁজখবর করে বেশ কিছু তথ্য পাওয়ার দাবি করে তিনি লেখেন, “অনুসন্ধানী সাংবাদিক বলে পরিচিত সায়ের জুলকারনাইন এর সর্বশেষ তথ্য মতে আমাদের গুমের সাথে পলাতক ডিজিএফআইয়ের প্রধান সাইফুল আলমের যোগসাজশ ছিল বলে জানা যায়।
”আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি এই মেজর আফিজ ২০২০ সালে ডিজিএফআইয়ের মিডিয়া উইং এ কর্নেল শাম্মী ফিরোজ এর অধীনে একটি টিম এ ছিল এবং সে দীর্ঘদিন মুশতাক ভাইকে অনুসরণ করতো।”
কার্টুনিস্ট কিশোর আরও লেখেন, “আওয়ামী লীগের মুখপাত্র বলে পরিচিত ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদারের বেশ ঘনিষ্ট ছিল এই আফিজ। আবার এই আফিজ ছিল পলাতক স্বৈরাচার হাসিনার ক্যাশিয়ার বলে পরিচিত ব্যবসায়ী নাফিজ সরাফাত এর খুবই ঘনিষ্ঠজন।
“সেই আফিজ মুশতাক ভাই আমিসহ আমাদের মতো বহু মানুষের ত্যাগের বিনিময়ে আজকের এই ইন্টেরিম সরকারের সময় একটি প্রতিষ্ঠিত মিডিয়া হাউস দখলের নেতৃত্ব দেয়!”
তিনি লেখেন, “বর্তমান সরকারে আফিজের ক্ষমতার উৎস জানতে চেষ্টা করে আরো জানতে পারি আফিজের বাবা বিগত বিএনপি সরকারের একমন্ত্রীর এপিএস ছিল।”
ঢাকার শান্তিনগরের বাসা থেকে গ্রেপ্তারের সময় এবং অজ্ঞাত স্থানে নির্যাতনের সময় আফিজকে দেখার দাবি করেছেন কার্টুনিস্ট কিশোর।
পোস্ট দেওয়ার পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “কারাগারে থেকে ভাবতাম, আমি ফরেনসিক আর্ট যেহেতু করতাম, তাদের ছবি আঁকব। আমি বের হওয়ার পরই আঁকছি। তিনজনের কথা আমার মনে আছে বিশেষ করে। তার মধ্যে দুজনেরটা আঁকছি। আরেকজনের চেহারা নিয়ে অনেকগুলো স্কেচ আঁকছি, শেষমেশ আউটপুট দিতে পারি নাই।”
আফিজের ‘স্কেচটা শতভাগ নিশ্চিত’ হওয়ার কথা তুলে ধরে কিশোর বলেন, “যে গ্রুপটা শান্তিনগরে আমার বাসায় ধরতে আসছিল, ওই গ্রুপের একদম সে সামনে ছিল। অ্যাজ ইট ইজ হি ওয়াজ দ্য লিডার। সে নিজের পরিচয় দিয়েছিল যে, তার নাম জসীম।
“কাউকে ধরতে এলে বলে না, ধরতে আসছেন কোনো, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে কিনা’। আমি এরকম জিজ্ঞেস করছিলাম। তখন আমারে বলছিল যে, ‘এত কথা বলার দরকার নাই আপনি প্যান্ট পরেন’। আমি লুঙ্গি পড়া ছিলাম। বলে, ‘প্যান্ট পরেন আর একটা ভালো শার্ট পরেন।”
“প্রচুর সিগারেট খাচ্ছিল, আর ঘরের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলছিল। আমি বলতেছিলাম, ‘কোনো শ্যুটিংটুটিং আছে না কি যে ভালো জামাকাপড় পরতে হবে।“
গ্রেপ্তার অভিযানের সময় স্কেচের এই চেহারা ‘একেবারে সামনাসামনি ছিল’ বলে মন্তব্য করে অজ্ঞাতস্থানে নির্যাতনের সময়ও এই চেহারা দেখার দাবি করেন তিনি।
সুইডেন প্রবাসী কিশোর বলেন, “চোখ বাধাবস্থায়তো মারধর করছে। তখন চোখের বাঁধন খুলে গিয়েছিল একবার-দুইবার। ওইটা খুলে গিয়েছিল, তখন আমি একবার দেখে ফালাইছি। যেহেতু আমি তাকে আগেও দেখছি, সেজন্য চিনে ফেলছি।
“আরেকটা ছিল, একটু বেঁটে করে, যেটার মাথায় টাক ছিল। খুবই ফানি একটা টাক ছিল মাথার মাঝখানে। ওর কোকড়া চুল ছিল। ওইটাও আমার কাছে আছে। আঁকার পরে স্ক্যান করে রেখে দিয়েছি।“
কিশোর বলেন, “আমার স্মৃতি থেকে আমি আসামির ছবি আঁকছি। এরকম প্রমাণ বাংলাদেশের ইতিহাসেতো আর নাই।
“আমার মেটাডাটা বলবে ওই ছবি কখন আঁকছি, আমার আইনজীবীর কাছে ছবি আছে। এমনকি আমার মামলার যে তদন্ত কর্মকর্তা ছিল পিবিআইয়ের, তার কাছে দিয়েছি। আমার একটা দাবি ছিল, আমাকে যেদিন উঠিয়ে নেওয়া হয়েছিল, সেই দিন আশেপাশে প্রায় ১১টি সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল, সেগুলোর ডকুমেন্ট ম্যানেজ করেন।”
আদালতে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে যে মামলা করেছিলেন, সেটার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি না থাকার কথাও বলেন কার্টুনিস্ট কিশোর।
কী বলছেন আফিজ
কার্টুনিস্ট কিশোরের স্কেচ ও অভিযোগের বিষয়ে সাবেক সেনা কর্মকর্তা আফিজ বলেন, “প্রথমত হচ্ছে আমি পাবলিক রিলেশন এবং মিডিয়া উইংয়ের অফিসার ছিলাম। যতদিন ডিজিএফআইতে আমি কাজ করেছি, আমি পাবলিক রিলেশন এবং মিডিয়া উইংয়ে কাজ করেছি।
“সুতরাং পাবলিক রিলেশন এবং মিডিয়া উইংয়ের কোনো একজন অফিসারের কাজের পারভিউ কতটুকু? তিনি কতটুকু কাজ করতে পারেন? ডিজিএফআইতো একটা অর্গানাইজড অর্গানাইজেশন।”
স্কেচে চশমা থাকলেও ওই সময়ে চশমা না পরার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “জিনিসটা আমাকে একজন পাঠিয়েছে, আমি দেখেছি। আমি চশমা পরা শুরু করেছি জাস্ট এই এক মাস।
“মানে এর আগে আমি কখনোই চশমা পরি নাই। একেবারে ছোটবেলায় ক্লাস ফোরে থাকতে পরতাম। এরপরে আর কখনোই আমি চশমা পরি নাই।”
কার্টুনিস্ট কিশোর ‘কোথাও ভুল’ করছেন সন্দেহ করে আফিজ বলেন, নির্দিষ্ট কাজের বাইরে গিয়ে কখনও কোনো কিছু করেননি তিনি।
“ওনার সাথে আমার কখনোই দেখা হয়নি। হয়তো ওনার কোথাও ভুল হচ্ছে। আমার ওনার সাথে কখনোই দেখা হয়নি।”
চশমার বাইরে স্কেচের সঙ্গে চেহারা অন্যান্য অংশের মিল থাকার বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “আসলে চশমা আমি পরতামই না কখনো। আপনি যদি ক্লোজ বা যে কারো কিছু জিজ্ঞাসা করেন, আমি কখনোই চশমা পরতাম না।”
আফিজ বলেন, “একটা ক্লেইম করেছেন উনি। একটা চেহারা উনি লুক এলাইক মনে করছেন বা উনি বলছেন যে, ওনার কাছে মনে হয়েছে। কিন্তু আমি তো আমার জায়গা থেকে জানি যে, আমি এরকম কোনো কিছুতে ইনভলভ ছিলাম না।
“আমার কাজের গণ্ডিতেও ছিল না এবং ব্যক্তিগতভাবেও ছিলাম না এবং আমি নিজে জানি আমি ব্যক্তিগতভাবে কখনোই কোনো অপরাধে জড়িত হইনি।”
নিজের ছবি এবং স্কেচের সঙ্গে মিল পান কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমি তো প্রথমেই ধরেন ছবিটাতে যেটা দেখেছি আমি চশমা দেখেছি। তো আমি যেহেতু কখনো চশমা পরিই নাই। সুতরাং এরপরে আর বাকিটা আমার কাছে মাথায় আসে নাই। কারণ একটি বিষয় হচ্ছে কখনো কোনোভাবেই এরকম কোনো কিছুতে আমি জড়িত ছিলাম না। মানে এটি তো একটি প্রমাণ সাপেক্ষ বিষয় অবশ্যই।
“মানে অভিযোগটা কিন্তু খুব সিরিয়াস লেভেলের অভিযোগ। অনেক সিরিয়াস লেভেলের। এখন যেই জিনিসটি আমি কখনো করিনি। যেই জিনিসটাতে আমার জব রেসপন্সিবিলিটিও না।”
তার বাবার যে পরিচয় কার্টুনিস্ট কিশোর দিয়েছেন, তা নাকচ করে আফিজ বলেন, তার বাবা তাইয়েবুর রহমান যুগ্ম সচিব অবস্থায় মারা গেছেন ২০০৬ সালের ১৭ নভেম্বর। ৭৯ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা ছিলেন। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে যুগ্ম সচিব হিসেবে ছিলেন মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনে, মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। কোনো মন্ত্রীর পিএস বা এপিএস ছিলেন না।
২০২০ সালে ডিজিএফআইয়ের গণমাধ্যমে উইংয়ে কর্নেল শাম্মী ফিরোজের থাকার তথ্য ফেইসবুক পোস্টে দিয়েছেন কিশোর।
তবে আফিজ বলছেন, কর্নেল শাম্মী ডিজিএফআই ছেড়ে গেছেন ২০১৭ সালে। ২০২০ সালে সময়টাতে গণমাধ্যম উইংয়ের পরিচালক ছিলেন আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান খান।
কিশোরের অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করে তিনি বলেন, “একেবারে এটা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত হোক। তাহলে এটার সঠিক বিষয়টা বেরিয়ে আসবে। এটা তো সিরিয়াস লেভেলের অভিযোগ, সুতরাং সিরিয়াস লেভেলের অভিযোগ অবশ্যই তদন্ত হওয়া উচিত।”
চশমা না পরার যে তথ্য আফিজ দিচ্ছেন, সে বিষয়ক এক প্রশ্নে কিশোর বলছেন, “ডিসগাইজ দিতে পারে না! চশমা পরে কি, পরে না এইটা তো আমার জানার কথা না। সে তো ছদ্মবেশও ধারণ করতে পারে।
“আমি ১০০ ভাগ কনফার্ম সে। আমিতো কখনও এর ছবি দেখি নাই। অনেকে অনেক অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কখনও এর নামতো বলতে পারে নাই।”
তিনি বলেন, “আমাকেতো কেউ ছবি দেখায় নাই। প্রথম আরিফ জেবতিকের পোস্টে ওর ছবি দেইখা তখন আমি দেখি আরেহ, এ-ইতো। তখন আমি নিজে চিন্তা করেছি, নিজে আবার মিলাইছি বসে আমার এই ছবি দিয়ে।
“এরপর আমি লোকজন থেকে খবর নিয়ে জানছি, সে ২০২০ সালে ডিজিএফআইতে ছিল, মিডিয়া উইংয়ে ছিল। ওর কাজই ছিল মিডিয়ার বিভিন্ন লোকজন সম্পর্কে তথ্য নিয়ে, হয়ত যে খবর পাইছিল মুশতাক ভাইয়ের সঙ্গে আল-জাজিরার কোনো একটা লিংকআপ আছে, অথবা সায়ের জুলকারনাইনের কোনো লিংক আছে, এটা লিংকআপ করতে করতে হয়ত সে মুশতাক ভাইকে টার্গেট করেছে। মুশতাক ভাইকে টার্গেট করার কারণে তার সঙ্গে যোগাযোগের কারণে আমাকেও টার্গেট করেছে।”