
প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক ও লেখক ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন, ‘হাসিনা ছিল স্বৈরাচার দৈত্যদের প্রাণ ভোমরা। উঠতি মধ্যবিত্ত তরুণরা সব সময় এই স্বৈরাচারদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করেছেন। গণঅভ্যুত্থান তার একটি সত্য স্বাক্ষ্য। অভ্যুত্থান কখনও পরিকল্পনা করে আসে না, এজন্য এটি গণ-অভ্যুত্থান। এখন আমরা এটিকে শো বানিয়ে ফেলেছি। কারণ আমাদের গল্পগুলো আমরা দাঁড় করাতে পারিনি।’
রবিবার (১০ আগস্ট) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের সম্মেলন কক্ষে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (খুবিসাস) আয়োজনে ‘গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সাংবাদিকতা: ফ্যাক্টচেক, প্রতিষ্ঠান ও জনমানসের পুনর্গঠন’ শীর্ষক আলোচনা সভার প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘এক সময় মানুষ সত্য জানার জন্য পত্রিকা পড়ত, এখন পত্রিকাকে সংবাদ প্রকাশের আগে ফ্যাক্টচেক করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে সংবাদ প্রকাশের পর আবার সরিয়ে নিতে হচ্ছে, যা সাংবাদিকতার জন্য উদ্বেগজনক।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হারুনর রশীদ খান বলেন, সাংবাদিকতা সৃজনশীল পেশা, যেখানে মেধা ও নতুনত্বের প্রয়োগ জরুরি। একটি প্রতিবেদনের কারণে একজনের সামাজিক অবস্থান ও মান-সম্মান ক্ষুণ্ন হতে পারে। তাই সংবাদ প্রকাশের আগে তথ্য যাচাই (ফ্যাক্টচেক) অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) যুগে অপতথ্য ও সম্মানহানির ঝুঁকি বেড়ে গেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, সময়ের সঙ্গে সাংবাদিকতার ধরন বদলেছে। গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা অনেক ভুল তথ্য প্রচার হতে দেখেছি, আবার মুহূর্তে তা সরিয়েও নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিকদের সংবাদ পাঠকের কাছে সত্য বলে ধরা হয়, তাই সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে তাদের আরও সতর্ক থাকা উচিত।
সভাপতির বক্তব্যে খুবিসাসের সভাপতি আলকামা রমিন বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পরেও সাংবাদিকতায় তেমন কাঠামোগত পরিবর্তন আসেনি। উঠতি মধ্যবিত্ত ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা পরিবর্তিত সময়ে এসেও বৈষম্যের শিকার। ‘২৪ এর আন্দোলনে ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা সবচেয়ে গভীর নিরব ভূমিকা পালন করেছে, যার প্রমাণ সে সময়ের ক্যাম্পাস পাতাগুলো।
আরও বক্তব্য দেন বাংলা ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক ইমরান কামাল, দৈনিক সমকালের খুলনা ব্যুরোর স্টাফ রিপোর্টার আবুল হাসান হিমালয়। স্বাগত বক্তব্য দেন খুবিসাস সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম। বক্তারা গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী গণমাধ্যমের ভূমিকা, তথ্য যাচাই, প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন এবং জনমানসের পরিবর্তন বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন খুবিসাস’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুমাইয়া আক্তার। এতে খুলনার বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধি, ক্যাম্পাস রিপোর্টার ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।