
পরিবারের এক সদস্যের মৃত্যুতে সিলেট শহর থেকে দিরাইয়ের রাঢ়ইল চৌধুরী বাড়িতে গিয়েছিলেন স্বজনরা। ফেরার সময় দিরাই থেকে একটি হাইয়েস গাড়ি ভাড়া করেন। দিরাই-কাঠইড় সড়কের গাজীনগর এলাকায় আসতেই হঠাৎ গাড়ির আট যাত্রীর সাতজন অচেতন হয়ে পড়েন।
শনিবারের আকস্মিক এ ঘটনা ঘিরে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে স্থানীয় সম্ভ্রান্ত এই পরিবারে। অচেতন হওয়া সাত যাত্রীই ছিলেন নারী। তাদের সঙ্গে থাকা একমাত্র পুরুষ যাত্রী অসুস্থ হলেও চেতনা হারাননি। যার কারণে রক্ষা পেয়েছেন বাকিরা।
স্থানীয়দের সহায়তায় বিকেল ৪টার দিকে উদ্ধার করা যাত্রীদের মধ্যে তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেটে পাঠানো হয়েছে। পরে বিকেল ৫টা নাগাদ আরও তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটে পাঠানো হয়। তাদের কেউ এখনও কথা বলতে পারছেন না।
হাছননগরের বাসিন্দা তুষার চৌধুরী বলেন, স্বজনরা তাদের এক আত্মীয়র মৃত্যুতে দিরাইয়ের রাঢ়ইল চৌধুরী বাড়িতে যান। দাফনসহ অন্য আনুষ্ঠানিকতা সেরে শনিবার দুপুরে দিরাই থেকে একটি হাইয়েস ভাড়া করে তারা আটজন ফিরছিলেন।
গাজীনগর এলাকায় এসে গাড়িতে থাকা সালেহা চৌধুরী, তাঁর মেয়ে রাইসা চৌধুরী ও সাইদা চৌধুরী, সিজ্জিল মিয়া চৌধুরীর মেয়ে নাদীয়া ও তানিশা, রাজ্জাক মিয়ার মেয়ে মহিমা এবং পরিবারের অপর সদস্য শেফালী বেগম অজ্ঞান হয়ে পড়েন। গাড়িতে থাকা একমাত্র পুরুষ যাত্রী ছাড়া সবার শরীরে এ সময় খিঁচুনি ওঠে। এক পর্যায়ে চালক গাড়ি থামালে আশপাশে থাকা লোকজন এসে তাদের গাড়ি থেকে নামান। মাথায় পানি ঢেলে জ্ঞান ফেরানোরও চেষ্টা করা হয়। তাতে কাজ না হওয়ায় সিএনজিতে করে সবাইকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর শেফালী বেগমের জ্ঞান ফেরে। অন্যদের অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় স্বজনরা তাদের সিলেটে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেন।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক সোহাগ জানান, সাতজন রোগী জ্ঞান হারিয়ে একই ধরনের অসুস্থতা নিয়ে এসেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের গণহিস্টিরিয়া বা গণসাইকোজনিক অসুস্থতা হতে পারে। এসি গাড়িতে ক্ষতিকারক কিছু স্প্রেও করা হয়ে থাকতে পারে এবং খাওয়া-দাওয়ায় কোনো সমস্যা হতে পারে।
হাসপাতালের আরএমওসহ কয়েকজন ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাদের সিলেট পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে হাইয়েস চালক বাবুকের নম্বরে একাধিকবার কল করেও সাড়া মেলেনি। দিরাই থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গাড়িতে একসঙ্গে সাত যাত্রী অজ্ঞান হওয়ার খবর পেয়েছেন। ওই যাত্রীদের অভিভাবক সিজ্জিল চৌধুরী জানিয়েছেন, তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্তে কাজ শুরু করেছে।