Image description

তিন পার্বত্য জেলা থেকে প্রতিবছর ৭০০ কোটি টাকার বেশি চাঁদাবাজি হচ্ছে। ব্যবসায়ী ও ব্যক্তিদের কাছ থেকে এই টাকা আদায় করে পাহাড়ের বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠন। স্থানীয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর অভিযোগ—পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর অস্ত্র ও সদস্যদের তালিকা জমা দেওয়ার কথা থাকলেও জেএসএস, ইউপিডিএফসহ কোনো সংগঠনই তা করেনি। ফলে পাহাড়ে অস্থিরতা রয়ে গেছে, শান্তি স্থাপন সম্ভব হচ্ছে না।

 

চলতি বছরের শুরুতে খাগড়াছড়িতে ঘুরতে এসে অপহরণের শিকার হন পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। মুক্তিপণ দাবি করে তাদের নদী পার হয়ে নিয়ে যাওয়া হয় চেলাছড়া গ্রামে। পরে সাত দিনের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে সেনাবাহিনী তাদের উদ্ধার করে।

চাঁদাবাজির শিকার শুধু পর্যটকরাই নন; ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকেও বড় অঙ্কের টাকা দাবি করা হয়। খাগড়াছড়িতে এক মোবাইল অপারেটরের প্রতিনিধির দাবি, ইউপিডিএফ ও জেএসএস তাদের কাছে ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় সব টাওয়ারের সংযোগ কেটে দিয়ে অপহরণ করা হয় এক কর্মকর্তাকে।

এক সশস্ত্র সংগঠনের সদস্য চ্যানেল 24-কে বলেন, ‘পাহাড় আমাদের। এখানে সমতলের ব্যবসায়ী ব্যবসা করতে চাইলে চাঁদা দিতে হবে—মোবাইল অপারেটর হোক আর যে-ই হোক। মোবাইল অপারেটর কোম্পানি টাকা না দেয়ার কারণে তাদের টাওয়ার সংযোগ কেটে দিয়েছি আমরা।’

পর্যটন ব্যবসায়ীরাও চাঁদা ছাড়া রেহাই পান না। খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক ভ্যালির সব হোটেল-মোটেলকে নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়।

গোয়েন্দা তথ্য বলছে, তিন পার্বত্য জেলা থেকে বছরে চাঁদাবাজি হয় ৭০০ কোটি টাকার বেশি। বছরের শুরুতে এদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে জড়ো করা অস্ত্র -গোলাবারুদের বড় পাঁচটি চালান জব্দ করে প্রতিবেশি দেশের পুলিশ। 

 

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করা হচ্ছে।

১৯৯৭ সালের পার্বত্য শান্তি চুক্তি অনুযায়ী স্বাক্ষরের ৪৫ দিনের মধ্যে অস্ত্র জমা দেওয়ার কথা ছিল জেএসএসের, যা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।