
‘অতীতে যারা নারী আসনে (সংসদে) এসেছিলেন তাঁদের অনেকেই অনেক ভালো কাজ করেছেন। তাঁরা নিশ্চুপ ছিলেন না। অনেকেই সংসদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু এমন অনেক পুরুষ প্রতিনিধি ছিলেন যারা কোনো ভূমিকা রাখেননি। তাই, এটা একেবারেই যৌক্তিক নয় যে, আমরা যোগ্য নারী পাচ্ছি না, কিন্তু অযোগ্য পুরুষ হলেও যথেষ্ট। এগুলো পরিবর্তনের জন্য আমাদের চাপ সৃষ্টি করতে হবে।’
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে ‘সংসদে নারী আসন ও নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে ‘নিজেরা করি’-এর সমন্বয়কারী খুশী কবির এ কথা বলেন। এই গোলটেবিলের আয়োজন করেছে প্রথম আলো। সংসদে নারী আসন নিয়ে ধারণাপত্র তুলে ধরেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নাজনীন আখতার।
খুশী কবির বলেন, ‘বিশাল গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে আমরা একটি নতুন সরকার পেয়েছি, যে সরকারের কাছে মানুষের অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল যে তারা রাজনীতিতে বড় পরিবর্তন আনবে। এটাই ছিল অভ্যুত্থানের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু তা করতে এই সরকার ব্যর্থ হয়েছে। যেই পরিবর্তন এবং সংস্কার করার কথা ছিল তা হয়নি।’
সংসদে নারীর জন্য ৫০ ভাগ প্রতিনিধিত্ব চাইতে আমরা ভয় পাই কেন এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন খুশী কবির। তিনি বলেন, ‘এ জন্য প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলকে চাপ দেওয়া উচিত। এ জন্য যারা মানবাধিকার, গণতন্ত্র, লিঙ্গবৈষম্য নিয়ে কাজ করছেন সবাইকে একযোগে চেষ্টা চালাতে হবে।’
বৈঠকে সরাসরি (সংসদে নারী) নির্বাচনের দাবি জানিয়ে খুশী কবির বলেন, ‘সরাসরি নির্বাচন হলে যে প্রতিনিধিত্বের জন্য নির্বাচন করছে এবং যে নির্বাচিত করছেন, দুই পক্ষেরই দায়বদ্ধতা থাকে।’

গোলটেবিল বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক সুমনা শারমীন। এতে অংশ নিয়েছেন, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, নারীপক্ষের সভানেত্রী গীতা দাস, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য ইলিরা দেওয়ান, জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও শিক্ষার্থী নাজিফা জান্নাত।