Image description
 

ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরায় সংঘর্ষের ঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) নিয়ে একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিকে একতরফাভাবে প্রতিবেদন প্রচার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বাহিনীটি৷ একইসঙ্গে এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তারা। বৃহস্পতিবার রাতে বিজিবির ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে এ প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।

বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'Anatomy of BGB Shootings in Rampura' শীর্ষক প্রতিবেদনটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিউ প্রত্যাশী এবং আংশিক সত্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি।

প্রতিবেদনটিতে Tech Global Institute-এর ফরেনসিক গবেষণার বরাত দিয়ে বিজিবির ভূমিকা নিয়ে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা ‘মনগড়া’ এবং বাহিনীর মনোবল ভাঙার চেষ্টা বলে মন্তব্য করেছে বিজিবি।

 
 

বিজিবির বক্তব্যে বলা হয়েছে, বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও অন্যান্য তদন্ত সংস্থার অধীনে রামপুরার ঘটনায় তদন্ত ও বিচার কাজ চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে এমন একপেশে ও নাটকীয় উপস্থাপন বাহিনীর প্রতি জনমনে ভুল ধারণা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষত তখন, যখন সীমান্তে বিজিবির সদস্যরা পুশ-ইন ঠেকাতে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের প্রতিবাদে সক্রিয় ভূমিকা রেখে চলেছে।

প্রতিবাদে আরও বলা হয়, ১৯ জুলাই রামপুরার ওই ঘটনায় বিজিবির পাশাপাশি পুলিশ, র‍্যাব ও আনসার সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। তবে প্রতিবেদনে শুধুমাত্র বিজিবিকে দায়ী করে যেভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে, তা পক্ষপাতদুষ্ট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

বিজিবির পক্ষ থেকে প্রতিবেদনের বেশ কিছু অসংগতি তুলে ধরা হয়:

গুলিবিদ্ধ যুবক রমজানের ভিডিও ফুটেজে কারা গুলি চালিয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। ভিডিওটি ছাদ থেকে ধারণ করা হলেও অস্ত্র তাক করার দৃশ্য অনুপস্থিত।

ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদনটিতে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। অথচ দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেটদের তালিকা সরকারি নথিতে রয়েছে।

বিজিবি যে ৯৭২ রাউন্ড গুলি ছুড়েছে বলা হয়েছে, তার অধিকাংশই পুড়ে যাওয়া গাড়ির ভেতরে থাকা গোলাবারুদ এবং ফাঁকা গুলি।

কোনো র‍্যাপিড অ্যাকশন টিম মাঠে নামানো হয়নি, ভারী অস্ত্র বা হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা হয়নি।

ভিডিও ক্লিপে নাটকীয়ভাবে গুলির শব্দ সংযোজন করে বিভ্রান্তিকর প্রভাব তৈরি করা হয়েছে।

জনসমর্থনের প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতার সঙ্গে বিজিবির একাত্মতা কিছু এলাকায় প্রকাশ পেয়েছে।

বিজিবি দাবি করেছে, ঘটনাটি তদন্তাধীন থাকা অবস্থায় এমন প্রতিবেদন প্রকাশ দায়িত্বহীনতার শামিল। তারা আরও জানায়, বাহিনীর অভ্যন্তরে যারা নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন বলে প্রমাণ মিলেছে, তাদের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ তদন্ত ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।

শেষে বিজিবি জানায়, 'দোষী ব্যক্তি শাস্তি পাক—এটাই আমরা চাই। তবে গবেষণার নামে তথ্য বিকৃতি করে কোনও বাহিনীকে দায়ী করা হলে, তাতে প্রকৃত বিচার ও দেশের স্বার্থ দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।'