Image description
নূর মোহাম্মদ আবু তাহের
 
একটা ইন্টারেস্টিং আলাপ উঠেছে৷
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের একটা উদ্যোগ নিতে চায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার৷ স্থানীয় সরকারের বটম লাইনে কাজ করি বলি বিষয়টা সত্যিই আমার কাছে ইন্টারেস্টিং।
রাজনৈতিক দলগুলো পরিস্কার করেছে—তারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় না। তাতে নাকি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না!
কী দারুণ যুক্তি।
মাঝেমাঝে ভাবি—কীসের শালার দেশ স্বাধীন হয়েছে নতুন করে? ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ব্যর্থ করে দিয়েছি আমরা রাজনৈতিক নেতৃত্বই।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে করলে কী কী সমস্যা হবে?
০১. দলীয় প্রভাবে স্থানীয় সরকার দখল করা যাবে না।
০২. জনগণকে সরকারি দলের উন্নয়নের টোপ দেওয়া যাবে না৷
০৩. জাতীয় নির্বাচনের আগে অনেক স্থানীয় নেতা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। পরাজিতরা পরে বড়ো বড়ো নেতাদের এমপি নির্বাচনে খেলে দিবে৷
০৪. সরকারী দল স্থানীয় নির্বাচনে অন্য দলের প্রার্থীদের দৌড়ের ওপর রাখতে পারবে না৷
০৫. আগস্টের অভ্যুত্থানকারী ছাত্রদের অনেকে চেয়ারম্যান, মেম্বার, কাউন্সিলর, মেয়র হয়ে যাবে। আমার দলের ভাগ কমে যাবে৷
আওয়ামী লীগ স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছিল। দলীয় প্রতীক আর একদলীয় আচরণে স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে খেলায় পরিণত করেছিল। নৌকার প্রার্থী মানেই নিশ্চিত জয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজাতে পারত। দেশের স্বার্থেই প্রভাবমুক্ত স্বচ্ছ স্থানীয় সরকার নির্বাচন জরুরি।
ইতোমধ্যে ভদ্রলোকেরা আর স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে না। ইতর শ্রেণি, টাউট-বাটপার, চিটার, বদমায়েশরা জোর যার মুল্লুক তার টাইপে স্থানীয় সরকার দখল করেছে বিগত ১৬ বছর। কোয়ালিটি লোকজন আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে৷
বর্তমান সরকার স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনাকে সত্যিকার অর্থেই কারেকশন করতে পারত। আমাদের নিকৃষ্ট রাজনৈতিক সংস্কৃতি বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে এখানেও৷ স্থানীয় সরকারে এমপি-মন্ত্রীদের দাসদের না বসালে কেমনে আত্না প্রশান্ত হবে?
বর্তমান সরকারের অবশ্য হেডম কম। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে মুচলেকা দিয়ে মনে হয় এরা দায়িত্ব নিয়েছে সরকার পরিচালনার। সরকার যা পরিকল্পনা নিক, রাজনীতিবিদরা বাধা দেবে আর সরকার মিনমিন করে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ হবে না৷
সংবিধান সংশোধন হবে না৷
স্থানীয় নির্বাচন আগে হবে না।
অভ্যুত্থান ঘোষণা পত্র হবে না।
ফ্যা°সিস্ট দল নিষিদ্ধ হবে না।
চুলের অভ্যুত্থান!
বস্তাপঁচা রাজনৈতিক সংস্কৃতির কাছে জিম্মি জনতার মুক্তি!
একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে আপনি বলুন তো—স্থানীয় নির্বাচন আগে হলে কী কী সমস্যা?