Image description

আওয়ামী লীগ যখনই বেকায়দায় পড়েছে তখনই জঙ্গিবাদকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছে। হলি আর্টিজানের ঘটনায় প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হয়নি। এর সঙ্গে অন্য কোনো রাষ্ট্রের বা গোষ্ঠীর যোগসূত্র রয়েছে কি না- তা পুনঃতদন্তের প্রয়োজন আছে। সন্দেহ, অনুমান ও কল্পিত কাহিনির মাধ্যমে বিচার করায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সবাই খালাস পেয়েছেন বলে জানান অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

শনিবার এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির অয়োজনে ‘দেশকে জঙ্গি তকমা দেওয়া ছিল আওয়ামী শাসকদের ক্ষমতায় টিকে থাকার প্রধান হাতিয়ার’ শীর্ষক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, ৪০০ বছরের ফৌজদারি মামলার ইতিহাসে ভারতীয় উপমহাদেশে এমন একটি নজির নাই যেখানে দ্বিতীয়বার স্বীকারোক্তি নিয়ে একজন মানুষকে সাজা দেওয়া যায়। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা-মামলায় ডিজিএফআই’র বিশেষ সেলে আটক রেখে মুফতি হান্নানকে দিয়ে তারেক রহমান, আলী আহসান মুজাহিদ, আব্দুস সালাম পিন্টুসহ শীর্ষ বিরোধী নেতাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। জঙ্গি ইস্যু ব্যবহার করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতের আমির শফিকুল ইসলামের মতো শীর্ষ রাজনীতিবিদকে সন্ত্রাসী হিসাবে জেলে আটকে রেখেছিল। ধর্মীয় উগ্রবাদকে সামনে এনে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার নামে বিগত সরকার বিরোধী দল ও মতকে দমন করে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের অনুকম্পায় ক্ষমতায় টিকে ছিল।

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য নানা রকম অপকৌশল অবলম্বন করেছিল। এর মধ্যে অন্যতম ছিল জঙ্গি দমনের নামে মানুষ হত্যা। তারা পশ্চিমাবিশ্বসহ ভারতকে দেখাতে চেয়েছিল বাংলাদেশে ইরাক, সিরিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের মতো উগ্রবাদী জঙ্গি রয়েছে। যে জঙ্গিরা শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী রাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের জন্য হুমকি। আওয়ামী লীগ সরকারই এই জঙ্গিবাদ দমন করতে পারবে। বিশ্ববাসীর কাছে জঙ্গিবাদ দমনে আওয়ামী লীগ নিজেকে রোল মডেল হিসাবে দাবি করে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার কৌশল অবলম্বন করেছিল। সেই কৌশলের অংশ হিসাবে তারা বারবার নিরীহ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জঙ্গি তকমা দিয়ে নানা রকম নাটক সাজিয়ে হত্যা করেছে।

তিনি জানান, গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করে দাড়ি রাখা, টুপি পরা, বোরকা পরা, মসজিদে নামাজ আদায় করা ব্যক্তিদের টার্গেট করা হতো। এমনকি যেসব বাসা-বাড়ি থেকে ফজরের নামাজ আদায়ে মসজিদে যেত তাদেরকে টার্গেট করা হতো জঙ্গি আখ্যায়িত করার জন্য। ২০১৬ সালে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর থেকে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট নানা রকম পুরস্কার, পদোন্নতি ও প্রণোদনার বিনিময়ে জঙ্গি ধরার অশুভ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছিল। বিগত সরকারের আমলে পরিস্থিতি দেখে মনে হতো সারা দেশ জঙ্গিতে ছেয়ে গেছে।