Image description
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবসের এক বছর আজ, ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন ড. ইউনূস, জুলাই সনদ নিয়ে ফের আলোচনায় বসবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট পতন হয় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের। অবসান ঘটে দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের। দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা। তার সাথে দেশ ছাড়েন মন্ত্রী-এমপিসহ অনেকে। প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতার জীবন ও হাজার হাজার মুক্তিকামী মানুষের রক্তের বিনিময়ে জগদ্দল পাথরের মতো জাতির উপর চেপে বসা নিপীড়ক সরকারের পতন ঘটিয়ে ৫ আগস্ট তথা ৩৬ জুলাই নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেন বাংলাদেশের মানুষ। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের দিনটিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস ঘোষণা করে। আজ মঙ্গলবার বিভিন্ন কর্মসূচিতে সারা দেশে পালিত হচ্ছে দিনটি। স্বৈরাচার পতনের এই দিনটিতে আজ বিকেল ৫টায় রাজধানীর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গণ-অভ্যুত্থানপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতা, সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ/প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা যায়। এ দিকে, গণ-অভ্যুত্থানের এক বছরের মাথায় ফ্যাসিবাদ বিরোধীদের মধ্যে অনৈক্যের সুর দৃশ্যমান হয়েছে। এই সুযোগ নিতে তৎপর নিষিদ্ধ আওয়ামী 

জানা যায়, দিবসটি উপলক্ষে মানিক মিয়া এভিনিউজুড়ে থাকছে দিনভর নানা আয়োজন। বেলা ১১টা থেকে বিভিন্ন শিল্পীগোষ্ঠীর গান; ২টা ২৫ মিনিটে ‘ফ্যাসিস্ট এর পলায়ন উদযাপন’; এরপর ফের গান; ৫টায় ঘোষণাপত্র উপস্থাপন; সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিট থেকে ‘স্পেশাল ড্রোন ড্রামা’ এবং রাত ৮টায় কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি ও সংসদ সচিবালয় যৌথভাবে এসব আয়োজন করবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছরের ৫ আগস্ট পৃথিবী দেখেছিল এক অভাবনীয় গণ-অভ্যুত্থান। যার ফলে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল ফ্যাসিস্ট সরকার। বহু শহীদের রক্ত এবং যোদ্ধাদের ত্যাগের পথ ধরে পুরো বাংলাদেশ এক হয়েছিল। পথে পথে ছিল উল্লাসমুখর জনতার জোয়ার। বাংলাদেশের বহু রাস্তায় আবেগাপ্লুত মানুষ সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছিলেন। এক বছর পর আবার ফিরে এসেছে ছত্রিশ জুলাই। এই দিনে ঘোষিত হতে যাচ্ছে জাতির আকাক্সিক্ষত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’। তবে, এই ঘোষণাপত্র নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বিমত রয়েছে।

২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া ছাত্রদের আন্দোলন শেষমেশ সরকার পতনে রূপ নেয়। ৩৬ দিনের সেই আন্দোলনে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন সাড়ে ১৫ বছর দোর্দণ্ডপ্রতাপে দেশ চালিয়ে আসা শেখ হাসিনা। শুরুতে এই আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পরে তা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। গুলি, টিয়ারশেল আর লাঠিচার্জ; নির্যাতন ও বলপ্রয়োগের কোনো চেষ্টাই বাকি রাখেনি হাসিনা সরকার। প্রথমে ফেসবুক, পরে ইন্টারনেট বন্ধ করে পরিস্থিতি সামাল দিতে মরিয়া হয়ে পড়ে সরকার। তাতে হিতে বিপরীত হয়। আন্দোলনে রক্তপাত শুরু হওয়ার ২০ দিনের মধ্যেই লাশ আর রক্তের বোঝা মাথায় নিয়ে পতন হয় দেড় দশকের প্রতাপশালী আওয়ামী লীগ সরকারের। পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা আর তার অনুসারী প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিসহ প্রভাবশালীরা।

৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর দাবি মেনে শুরু হয় রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ।

এ দিকে, অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশের ঘোষণা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি (এনসিপি)। গণ-অভ্যুত্থানের পর গত ৩১ ডিসেম্বর আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে সরকারিভাবে ঘোষণাপত্র প্রকাশের কথা বলা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া শীর্ষ নেতারা বলছেন, জুলাই ঘোষণাপত্র হলো গণ-অভ্যুত্থান ও পরবর্তীতে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক ধরনের স্বীকৃতি। এর আইনি ভিত্তি থাকবে। যাতে পরে কেউ গণ-অভ্যুত্থান ও সরকারকে ভিত্তিহীন দাবি করতে না পারে।

সংস্কার কমিশনগুলোর প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার পাশাপাশি জুলাই ঘোষণাপত্র এবং জুলাই জাতীয় সনদ তৈরির কাজ চলে। গত মাসের প্রথমার্ধে জুলাই ঘোষণাপত্রের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপির মতামত নেয়া হয়। এর পর চূড়ান্ত খসড়ার ওপর মতামত নিতে দলগুলোকে সেই খসড়া পাঠানো হয়।

মত-দ্বিমতের মধ্যেই আজ জুলাই ঘোষণাপত্রপাঠ: আজ জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবসে অভ্যুত্থানের শরিক রাজনৈতিক দল ও পক্ষগুলোকে পাশে নিয়ে ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ঢাকার বাইরে থেকে ছাত্র-জনতার যাতায়াতে আটটি ট্রেন ভাড়া করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ঘোষণাপত্র প্রকাশ উপলক্ষে বিপুল আয়োজন থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শেষ মুহূর্তেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্বিমত রয়েছে। কোনো কোনো দল আজকের অনুষ্ঠানে যোগ নাও দিতে পারেন বলে জানা যায়।

গত ১৩ জুলাই বিএনপি এবং এনসিপিকে ঘোষণাপত্রের খসড়া পাঠায় সরকার। পরে জামায়াতসহ কয়েকটি দলকেও খসড়া পাঠানো হয়। দলগুলোর মতামত অন্তর্ভুক্ত করে ২৭ জুলাই চূড়ান্ত খসড়া পাঠানো হয় বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিকে। এ দলগুলোর মতামত নিয়ে ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করেছে সরকার। তবে এতে কী কী থাকছে, তা প্রকাশ করেনি সরকার। ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত রূপ রাজনৈতিক দলগুলোকেও দেখানো হয়নি বলে জানা যায়। এ অবস্থায় ঘোষণাপত্র পাঠের সময় সব দল প্রধান উপদেষ্টার পাশে থাকবে কি না, এ নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মো: তাহের বলেছেন, জনগণের মতামতের প্রতিফলন থাকতে হবে ঘোষণাপত্রে। জামায়াত মতামত দিয়েছে, প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ঘোষণাপত্রের সাংবিধানিক স্বীকৃতি থাকতে হবে। এনসিপিও ঘোষণাপত্রকে সংবিধানের প্রস্তাবনায় চায়। বিএনপি ঘোষণাপত্রের সারাংশ সংবিধানের চতুর্থ তফশিলে যুক্ত করতে চায়।

জুলাই সনদ নিয়ে অভ্যুত্থানপন্থীদের মধ্যে অনৈক্যের সুর : অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংস্কারের পাশাপাশি পুরো রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের দাবি ওঠে। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় সরকার। গঠন করা হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যার সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজে। কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে দুই দফায় ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। গত ৩১ জুলাই এই সংলাপ শেষ হয়। এর আগে গত ২৮ জুলাই সনদের খসড়া পাঠানো হয় দলগুলোকে। দলগুলোর সাথে ২ জুন থেকে ২৩ দিন সংলাপ করে কমিশন। সনদের প্রাথমিক খসড়ায় শুধু পটভূমি এবং সাত দফা অঙ্গীকার রয়েছে। বিস্তারিত সনদে বলা থাকবে কোন কোন সংস্কার কীভাবে হবে।

সনদের দ্বিতীয় দফায় সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সংস্কারে যেসব সুপারিশে দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নের অঙ্গীকার রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এর জন্য সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিমার্জন, পুনর্লিখন এবং আইন, বিধিবিধানেও অনুরূপ পরিবর্তন করা হবে। আগামী সংসদ নির্বাচনে গঠিত সরকার তা দুই বছরের মধ্যে করবে। বিএনপি এতে একমত হলেও জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ অধিকাংশ দল বর্তমান সরকারের সময়ই জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনিভিত্তি চায়। তা না হলে তারা তাতে সই করবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে কমিশন ২০টি সংস্কারের সিদ্ধান্ত দিলেও আটটিতে ঐকমত্য হয়নি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি। বিএনপি চারটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে রাজি নয়। তিনটিতে নোট অব ডিসেন্টসহ (আপত্তি) একমত হয়েছে। জামায়াত একটি সিদ্ধান্তে রাজি নয়। দলগুলো জানিয়েছে, যেসব সিদ্ধান্তে তারা রাজি নয়, ক্ষমতায় গেলে সেগুলো বাস্তবায়ন করবে না।

অধিকাংশ দল ভোটের অনুপাতে (পিআর) উচ্চকক্ষ গঠন, প্রধামন্ত্রীর একাধিক পদ না থাকা; দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি), মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) এবং ন্যায়পাল নিয়োগে সাংবিধানিক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তে একমত হলেও বিএনপি এতে রাজি নয়। দলটি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে সংসদীয় বাছাই কমিটি গঠনে একমত হলেও র‌্যাংকড চয়েজ ভোটের সিদ্ধান্তেও রাজি নয়।

জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার, এবি পার্টিসহ কয়েকটি দল বলছে, এসব সিদ্ধান্তে ঐকমত্য না হলে সনদ অর্থহীন। সনদ বাস্তবায়নের আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকলে তা শুধু দলিল হয়ে থাকবে। তাই তারা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চায়। বর্তমান সরকারের অধীন সাংবিধানিক সংস্কার তথা জুলাই সনদের আলোকে আগামী নির্বাচনের দাবি তাদের। এ ক্ষেত্রে দলগুলো শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পথ অনুসরণের পরামর্শ দেন। ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী পাস হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে ১৯৭৯ সালের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সামরিক সরকারের যাবতীয় কর্মকাণ্ডকে বৈধতাদানসহ এই সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ সংযোজন করা হয়। এই সংশোধনী বাংলাদেশের সংবিধানের প্রকৃতিকে মৌলিকভাবে পরিবর্তন করেছে। তবে, বিএনপি কোনোভাবেই জুলাই সনদকে সংবিধানে যুক্ত করার পক্ষে নয়। আগামী নির্বাচিত সরকার জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবে বলে জানায় দলটি। এই বাস্তবতায় জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পথ খুঁজছে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

কমিশন সূত্র জানায়, গত কয়েক দিনে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দিক নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে অনানুষ্ঠানিকভাবে বসেছে ঐকমত্য কমিশন। তবে, এটিতে কোনো সুরাহা হয়নি। এ অবস্থায় ফের আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বসার উদ্যোগ নিচ্ছে কমিশন।

এ দিকে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে জুলাই সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর মতপার্থক্য সত্ত্বেও যেসব সংস্কারে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলোর সাংবিধানিক ও আইনগত বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, সে প্রশ্ন এখনো অনিশ্চিত। ফলে সংস্কারের আশায় ধাক্কা লাগতে পারে, রাজনৈতিক সঙ্কট ঘনীভূত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে।

গতকাল সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী এক বছর : প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

পর্যবেক্ষণে বলা হয়, প্রশাসন চালাতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ও সিদ্ধান্তহীনতা স্পষ্ট হয়েছে। প্রশাসনিক সংস্কারের ক্ষেত্রে দলীয় প্রভাবমুক্ত করার চেষ্টা করা হলেও বাস্তবে একদলীয়করণ থেকে সরে এসে আরেক দলীয় প্রভাব প্রতিষ্ঠার প্রবণতা দেখা গেছে। এতে প্রশাসনে অস্থিরতা ও কার্যকারিতা হ্রাস পেয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া বিভিন্ন পক্ষের নিজস্ব এজেন্ডা সামনে আসায় মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। ফলে রাষ্ট্র সংস্কারের আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নের পথ আরো জটিল হয়ে পড়েছে। মৌলিক সংস্কারের প্রশ্নে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদও স্পষ্ট।