
কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু যে–ই আদালতের রায় ঘিরে, এক বছরে সেই বিচারাঙ্গনে কতটা পরিবর্তন হলো? গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা পূরণে সবাই কি ন্যায়বিচার পাচ্ছেন? এসব প্রশ্নের উত্তরে আইন কর্মকর্তা ও সাধারণ আইনজীবীরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন সবাই।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দুই দিন পর গত বছরের ১০ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টে বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের ৬ বিচারপতি। হাইকোর্টের বিতর্কিত ১২ বিচারপতিকে পাঠানো হয় ছুটিতে। রদবদল হয় অধস্তন আদালতের কয়েক শ বিচারকের।
সব ধরনের প্রভাবমুক্ত স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠায় নানা উদ্যোগ নেয় সরকার। প্রথমবার আইন করে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ হচ্ছেন হাইকোর্টের বিচারপতি, মামলা জট ও ভুয়া মামলা কমাতে সংস্কার হয়েছে বিভিন্ন আইন।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক বলেন, ‘বিচার ব্যবস্থায় রাজনীতি ঢুকে পড়েছিল। এই মুহূর্তে সেই রাজনীতিটা আর সেভাবে কাজ করছে না। এখন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
অভ্যুত্থানের মাত্র একমাসের মধ্যে নতুন প্রসিকিউশন টিম নিয়োগ দিয়ে শেখ হাসিনাসহ মানবতাবিরোধী আপরাধের অভিযুক্তদের বিচার শুরু করে সরকার। ডিসেম্বরের মধ্যে বেশ কয়েকটি মামলার রায়ের আশায় রাষ্ট্রপক্ষ।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর এম এইচ তামিম বলেন, ‘যেগুলো প্রত্যেকটা মানুষ দেখেছে, আহতরা এখনও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এগুলোর বিচার এখন হচ্ছে। এই ট্রাইব্যুনালে যত প্রশ্ন এসেছে প্রসিকিউশন নিয়ে, বিচারক নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগই নেই।’
তবে এত কিছুর পরও বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা ফেরেনি। বিচারকরা নির্ভয়ে বিচার কাজ করতে পারছেন না বলেও মনে করেন অনেক আইনজীবী।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘বিচারকরা স্বাধীনভাবে বিচার করতে পারবেন, এই কথা কেউ বলতে পারবেন না। যার কারণে অবিচার দেখছি। সরকারই বলছে, অনেক মিথ্যা মামলা। আদালতে আসলে জামিন হচ্ছে না।’
আইনজীবীরা বলছেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সব বাধা দূর করতে না পারলে প্রশ্নবিদ্ধ হবে অভ্যুত্থান।