
গুলশানে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বহিষ্কৃত নেতা আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। রবিবার (৩ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহের আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দিতে তিনি জানান, সেদিন পুলিশের কথায় সাবেক এমপি শাম্মী আক্তারের বাড়িতে গিয়েই গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি।
জবানবন্দিতে রিয়াদ জানান, বিভিন্ন সময়ে ফ্যাসিবাদী লোকজন গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে পুলিশকে সহযোগিতা করেছেন তিনি। ঘটনার দিন ১৭ জুলাই রাতে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র সহসভাপতি জাকির হোসেন মঞ্জুর ফোনের মাধ্যমে গুলশান জোনের ডিসির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন তিনি ডিসিকে জানান, গুলশান থানাধীন ৮৩ নম্বর রোড, বাসা নং- ১৩ তে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক এমপি শাম্মি আহমেদ নিজ বাসায় অবস্থান করছেন। পরবর্তীতে ডিসি নিজে জানান যে, বিষয়টি তিনি গুলশান থানার ওসিকে অবগত করেছেন। এরপর রাত দুইটার দিকে তিনিসহ মঞ্জু, জানে আলম অপু, সাবাব হোসেন, আতিক শাহরিয়ার, সাদাকাউম সিয়াম, তানিম ওয়াহিদ ও আতিকের সঙ্গে কয়েকজন মিলে থানায় যায়। তখন ওসি জানান, এতো রাতে গুলশান সোসাইটিতে অভিযান চালানো যাবে না এবং ফজরের আযান পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পরবর্তীতে গুলশান থানার একটি টিম তাদের সঙ্গে দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, তিনিসহ পুলিশ সদস্যরা সাবেক এমপি শাম্মী আক্তারের বাড়িতে যায়। গুলশানের থানার ওসি (তদন্ত) নিজে অভিযানের নেতৃত্ব দেন। তবে শাম্মীকে বাসায় না পেয়ে সকাল সাড়ে ৭টায় তারা ফিরে আসেন। পরবর্তীতে জানে আলম অপু তাকে বলেন, ওই বাসা থেকে তিনি শাম্মী আক্তারের এয়ারপড নিয়ে এসেছেন। পরে রিয়াদ ও অপু ওইদিন সকাল ১০টার দিকে এয়ারপড ফেরত দিতে ওই বাসায় যান। বাসায় গিয়ে তারা এয়ারপড ফেরত দেন। তখন অপু পানি খাওয়ার কথা বলে ওই বাসায় প্রবেশ করেন।
অপু বাসায় থাকা শাম্মীর স্বামীকে বলেন, ‘শাম্মী বাসায় আছেন। আমরা তাকে পুলিশে দিয়ে দেব।’ তখন শাম্মীর স্বামী ভয় পেয়ে তাদের টাকা অফার করেন। তখন অপু ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু এত টাকা বাসায় নেই বলে জানান শাম্মীর স্বামী। পরবর্তীতে ১০ লাখ টাকা নিয়ে চলে আসেন এবং টাকা সমান ভাগ করেন।
রিয়াদ বলেন, গত ২৬ জুলাই বিকালে চাঁদার বাকি ৪০ লাখ টাকা আদায় করতে ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সিয়াম, সাদমানকে ওই বাসায় পাঠাই। আর আমি গুলশান মোড়ে অবস্থান নেই। পুলিশ ফাঁদ পেতে আমাকেও ওই বাসায় যেতে বলে। তখন পুলিশের কথা বিশ্বাস করে ওই বাসায় যাই। তখন পুলিশ এসে টাকাসহ হাতেনাতে আমাদের গ্রেফতার করে। আমি গরিবের ছেলে। টাকার লোভ সামলাতে পারিনি।