Image description

নওগাঁয় জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধ মীমাংসার নামে প্রতারণা করার সময় ৪ ভুয়া মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিককে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় এবিসি বাংলা টিভির স্টিকার লাগানো ১টি কার গাড়ি, ইলেকট্রিক ডিভাইস এবং মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে শহরের চকদৌলত এলাকায় অভিযান চালিয়ে থানা পুলিশ তাদের আটক করে।

আটককৃতরা হলেন- সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার আল মঞ্জিল এলাকার সৈয়দ মইন উদ্দিনের ছেলে সৈয়দ রায়হান (৩৮), বরগুনা জেলার সদর উপজেলার বদরখালি এলাকার মৃত আলাউদ্দিন মাস্টারের ছেলে কামাল আহমেদ (৪৯), ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার ইউনুস মোল্লার ছেলে ইমন আমিন (২০) ও শরিয়তপুর জেলার মান্দা এলাকার লোকমান বেপারীর ছেলে আরিফ ব্যাপারী (৩৬)।

থানা সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের চকদৌলত এলাকার বাসিন্দা নিলুফার ইয়াসমিনের অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা থেকে আগত আটককৃত ৪ জন তার বাড়িতে যায়। ওই এলাকায় গিয়ে তারা আইনি সহায়তা কেন্দ্র ফাউন্ডেশনের মানবাধিকার কর্মী ও এবিসি বাংলা টিভির সাংবাদিক পরিচয় দেন। পরবর্তীতে এলাকার স্থানীয়দের ডেকে তারা জমি সংক্রান্ত মীমাংসায় বসেন এবং বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করতে থাকেন। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা পুলিশকে তথ্য দিলে পুলিশ সেখানে অভিযান পরিচালনা করে এবং ৪ প্রতারককে আটক করে।

তারা বিভিন্ন সময় পরস্পর যোগসাজশে সরকারি কর্মচারীর ছদ্মবেশ ধরে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতারণা, জরিমানা ধার্য ও আদায়, চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক মীমাংসার নামে অনৈতিক সুবিধা নেওয়া এবং ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা, বিকৃত ও মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার করে আসছে।

এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, ঢাকা থেকে কয়েকজন ব্যক্তি শহরের চকদৌলত এলাকায় এসে নিজেদেরকে মানবাধিকার কর্মী এবং সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জমিসংক্রান্ত বিরোধ মীমাংসায় বসেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করে থানায় আনা হয়েছে।

তিনি জানান, তাদের মধ্যে এক জনকে গত ৬ জানুয়ারি দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে ঢাকায় গ্রেপ্তার করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন। অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলমান রয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ, গত ৭ জানুয়ারি ‘পুলিশ নিয়ে ভুয়া দুদকের ২০০ অভিযান’ শিরোনামে নিউজ প্রকাশিত হয়েছিল। দুদকের কর্মকর্তা না হয়েও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযানের নামে বিভিন্ন অফিসে অভিযান পরিচালনা, জরিমানা ও তাৎক্ষণিক আদায় এবং বিচারের নামে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন তারা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। চক্রের ৩ সদস্য রায়হান ওরফে সৈয়দ রায়হান, সাইফুল ইসলাম ও দুর্নীতি নিবারণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম সম্রাট ধরা পড়েছিলেন আসল দুদকের ফাঁদে। এদের মধ্যে সৈয়দ রায়হান নওগাঁয় ধরা খেল।